নেত্রকোনায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ নিহত ২

নেত্রকোনায় প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন। সোমবার (৩১ মার্চ) বিকেলে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চল্লিশা ঝাউসী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত পুলিশ সদস্য হলেন- জেলার বারহাট্রা উপজেলার ফকিরের বাজার তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল আজিজুল হাকিম। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুরে। এছাড়া নিহত অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে সঞ্জিত বর্মণ (৫৮) কে সনাক্ত করা গেছে। তার বাড়ি শাহাপাড়ার নাগ্রা।

নেত্রকোনা মডেল থানার এসআই মশিউল জানান, নেত্রকোনাগামী প্রাইভেটকারের সঙ্গে ময়মনসিংহগামী যাত্রীবোঝাই অটোরিকশার সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত ও ছয়জন আহত হন। নিহতরা অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। পরে স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে সঞ্জিত বর্মণসহ তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সংখ্যালঘুদের পর প্রগতিশীলদের ওপর হামলাঃ প্রশাসন নীরব ও নিরুত্তর

সংখ্যালঘু ও প্রগতিশীল গোষ্ঠীসমূহের লাগাতার হামলার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে সম্প্রতি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি প্রেস ব্রিফিং-এ গত পাঁচ মাসে উঠে এসেছে এই হামলার কথা। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সাথে সাথে প্রগতিশীল মুক্তমনা লেখক/ব্লগার ওপরে হামলার যে হার, সেটা আশঙ্কাজনক বলে আখ্যায়িত হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর রিপোর্টে এবং আন্তর্জাতিক সরকারী ও বেসরকারী গণমাধ্যমে। এই সমালোচনার কোনো যথার্থ জবাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে পারেনি আজতক এবং এই ব্যার্থতাকে বর্তমান অন্তঃবর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এইসকল আক্রমণ-হামলাকে সমর্থন দেয়া হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে বেশ কিছু সেক্যুলার ও প্রগতিশীল ধর্ম-অবিশ্বাসী ব্লগ/ওয়েবসাইট/মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি করা বা মন্তব্য করা লেখক/মন্তব্যকারী/ব্লগারদের বাসায় হামলার ঘটনা। বিশেষ করে এথিস্টনোট, এথিস্ট ইন বাংলাদেশ, এথিস্ট এরা এসম্ত প্ল্যাটফর্মে যারা লিখালিখি করেছেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে। ঢাকায়, চট্টগ্রামে, রাজশাহীতে, কুমিল্লায়, সিলেটে বিশেষ করে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে জানা গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লেখক/ব্লগারদের আক্রান্ত পরিবারেরা নাম প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছেন এবং এইসব হামলার বিচারের জন্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের কাছে কোনো সাহায্য পাননি। অত্র এলাকাগুলোর থানায় যোগাযোগ করলে এ-ব্যাপারে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আক্রান্ত লেখক/ব্লগারদের মধ্যে নিম্নোক্তদের সনাক্ত করে গেছে – রোমানা আক্তার রুমকি, ফাহিন আলম, মোর্শেদ আলম, আব্দুল কাদের সুমেল, শামীম আল মামুন, শিপলু কুমার বর্মণ, মোঃ জাকির হোসাইন, আবু বকর সিদ্দিক, মোঃ সাব্বির হোসাইন, মোঃ আবির হোসাইন, মনিরা পারভীন, মোঃ ফাহাদ হোসাইন, মিজানুর রহমান সহ প্রমুখ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রলায়য়ের প্রতিক্রিয়া এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম ডোজের পর হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কমে ৯৪%

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার কার্যকারিতা স্পষ্ট হচ্ছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কমে ৯৪ শতাংশ। ফাইজার ও বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত টিকা এই ঝুঁকি কমায় ৮৫ শতাংশ। এই দুই টিকাই গুরুতর সংক্রমণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর।

এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা। গবেষণায় পুরো স্কটল্যান্ডের ৫৪ লাখ জনসংখ্যার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি যথাক্রমে ৯৪ ও ৮৫ শতাংশ কমিয়েছে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউশার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আজিজ শেখ ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় যে ফল পাওয়া গেছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী হওয়ার দারুণ কারণ হতে পারে।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, তিনি যে ফলাফলের কথা বলছেন, তা প্রাথমিক তথ্যনির্ভর। তবে আশার কথাও শুনিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত উৎসাহ পেয়েছি। টিকা যে কোভিড-১৯ সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে, এর জাতীয় প্রমাণ এখন আমাদের কাছে আছে।’

আজিজ শেখ বলেন, অন্য দেশগুলো এখন একই রকম দুই টিকা ও একই রকম কৌশল গ্রহণ করবে বলে আশা করছেন।
স্কটল্যান্ডে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণার জন্য গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে ১১ লাখ ৪ হাজার মানুষকে টিকা প্রয়োগ করা হয়। এর মধ্যে স্কটল্যান্ডের ২১ শতাংশ জনগণ টিকার প্রথম ডোজ নেন। এতে দেখা যায়, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে টিকা নেওয়ার চার সপ্তাহ পরে হাসপাতালে ভর্তি ৮১ শতাংশ কমে গেছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য দুটি টিকার ফলাফলই একত্র করে হিসাব ধরা হয়েছে।

স্কটল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জিম ম্যাকমেনামিন বলেন, ‘গবেষণায় যে ফল পাওয়া গেছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা এখন টিকা থেকে প্রত্যাশার পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেতে শুরু করেছি।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটও তৈরি করছে। আর সেরাম ইনস্টিটিউটের এই টিকা বাংলাদেশে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ পর্যন্ত তিনটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সবার আগে ফাইজারের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়। সর্বশেষ অনুমোদন পেয়েছে অক্সফোর্ডের টিকা। অনুমোদন পাওয়া অন্যটি হলো মার্কিন কোম্পানি মডার্নার উদ্ভাবিত করোনার টিকা।

মা ক্যানটিনে ৫ টাকায় মিলবে দুপুরের খাবার

কলকাতা পৌর করপোরেশনে গরিব মানুষের জন্য পাঁচ টাকায় দুপুরের খাবারের প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মা ক্যানটিন’। সোমবার ভার্চ্যুয়ালি এই ক্যানটিনের উদ্বোধন করেন তিনি। আপাতত ১টি করে মোট ১৬টি ক্যানটিন চালু হয়েছে পৌর করপোরেশনের ১৬টি প্রশাসনিক এলাকা বা বরাতে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০০ কোটি রুপি।

মূলত বরার ক্যানটিনগুলোতে ব্যবস্থা করা হবে এ খাবারের। সেখানে পাঁচ টাকায় দুপুরে মিলবে প্রয়োজনীয় ভাতের সঙ্গে ডাল, সবজি ও ডিম। প্রতিদিন দুপুরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এসব ক্যানটিনে গিয়ে খাবার খেতে পারবে গরিব মানুষেরা। প্রতিদিন কাজের জন্য গ্রাম ও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে কলকাতায় আসেন অনেক গরিব মানুষ। মূলত তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

জানা গেছে, পরবর্তী সময় এই ক্যানটিন প্রকল্প চালু হবে রাজ্যের সবখানে। কলকাতা করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, করপোরেশনের ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ এসব ক্যানটিনের খাবার রান্না করবে। আর তা পরিবেশন করবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এর আগে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে গরিব মানুষের মুখে কম দামে আহার দিতে বাম দল কলকাতা শহরে চালু করেছিল শ্রমজীবী ক্যানটিন। প্রথম চালু করা হয় দমদমে গত বছরের মার্চের শেষ দিকে। চাঁদা তুলে ওই ক্যানটিন চালু করা হয়েছিল। এখনো কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় চালু রয়েছে এই ক্যানটিন। এসব ক্যানটিনে এখনো শ খানেক গরিব মানুষকে প্রতিদিন বিনা মূল্যে খাবার দেওয়া হয়। আর সাধারণ মানুষ খেতে চাইলে ২০ টাকা দিতে হয়। এই ক্যানটিন এখন কলকাতায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এই শ্রমজীবী ক্যানটিন চালানোর জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষও। তাঁরা চাঁদা তুলে সচল রেখেছেন এই শ্রমজীবী ক্যানটিন।

হ্যাপি বার্থডে ফেসবুক

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪। গভীর রাত। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে ফাঁকিবাজ ছাত্রটি তখন ঘাপটি মেরে বসে আছে। সঙ্গে আরও কিছু ‘দুষ্টু’ বন্ধুবান্ধব। বন্ধুদের নিয়ে সে পুরোদস্তুর একটি ওয়েবসাইট দাঁড় করিয়ে ফেলেছে! নতুন কিছু করার রোমাঞ্চ খেলা করে তাঁর চোখে-মুখে। কোঁকড়া চুলের ছেলেটি তখনো জানে না, কী কাণ্ড করে বসেছে সে! বিশ্বের প্রায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মানুষ তার বানানো ওয়েবসাইটে নাম লেখাবে, সে হবে বিশ্বের ৫ম ধনী এবং ১৩তম ক্ষমতাধর ব্যক্তি—এ সবকিছুই তার সুদূর কল্পনায়ও ছিল না! সে তখন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল তার সদ্য তৈরি করা ওয়েবসাইট—দ্য ফেসবুক!

হ্যাঁ, শুরুতে ফেসবুকের নাম ‘দ্য ফেসবুক’ই ছিল। যে ছেলেটাকে শুরুতেই ‘ফাঁকিবাজ’ বলছিলাম, তাঁকে নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি, অথচ তাঁকে সবাই এক নামে চেনে—মার্ক জাকারবার্গ!

বিজ্ঞাপন
হ্যাপি বার্থডে ফেসবুক

৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকের জন্মদিন। এ বছর সতেরোতে পা রাখল এই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট। জন্মদিন উপলক্ষে চলো ফেসবুক সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

  • বলো তো, ফেসবুকের রং নীল কেন? কারণ, মার্ক জাকারবার্গ আংশিক বর্ণান্ধ। নীল রংটাই তিনি সবচেয়ে ভালো দেখতে পান। সবুজ, লাল—এসব রঙের পার্থক্য ধরতে পারেন না।
  • ২০০৬ সালে ক্রিস পুটনাম নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক হ্যাক করেছিলেন। ফলাফল? পরদিন সকালেই তিনি ফেসবুকের প্রধান কার্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন!
  • ফেসবুকের নাম যখন শুরুতে ‘দ্য ফেসবুক’ ছিল, নামের পাশেই একজন মানুষের অস্পষ্ট ছবি চোখে পড়ত। ছবিটি বিখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক আল পাচিনোর।
  • ফেসবুক ইউআরএলের শেষে ‘ /4’ লিখলেই তুমি পৌঁছে যাবে মার্ক জাকারবার্গের প্রোফাইলে (http://www.facebook.com/4)
  • ফেসবুকে ভাষা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তুমি চাইলে জলদস্যুদের ভাষাও সিলেক্ট করতে পারো! ভাষা নির্বাচনের সময় সে ক্ষেত্রে তোমাকে English (Pirate) সিলেক্ট করতে হবে।
  • ধরো, এক সকালে তোমার ফেসবুকের মালিক হওয়ার শখ হলো। যদি ফেসবুক কিনে নিতে চাও, খুব বেশি নয়—কমপক্ষে ৫২৭ বিলিয়ন ডলার থাকতে হবে তোমার পকেটে!
  • ফেসবুকের চেহারা কদিন পর পর বদল করলেও, মার্ক জাকারবার্গ তাঁর টি-শার্ট বদল করার সময় পান না। এক ধূসর রঙের টি-শার্টটি গায়ে দিয়ে তিনি দিনের পর দিন পার করে দেন!
  • বিস্ট নামে জাকারবার্গের একটি পোষা কুকুর আছে। ফেসবুকে তার ফলোয়ারের সংখ্যা আড়াই কোটিরও বেশি!
  • মার্ক জাকারবার্গকে ফেসবুকে ‘ব্লক’ করা যায় না!
  • ফেসবুকে তারকাদের মধ্যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ভক্তসংখ্যা সবচেয়ে বেশি (প্রায় ১৪ কোটি ৭৬ লাখ)। পরের স্থানে আছেন যথাক্রমে শাকিরা (প্রায় ১০ কোটি ৯২ লাখ) এবং উইল স্মিথ (প্রায় ১০ কোটি ৪০ লাখ)।

কফিশপে বসে ‘অফিস’ করা কেন ভালো

ধরুন, আপনি একটা কফিশপে বসে আছেন। কফির ঘ্রাণে চারদিক ম–ম করছে। কখনো কফির কাপ আর চামচের টুংটাং, কখনো পাশের টেবিল থেকে কারও চাপা হাসির শব্দ কানে আসছে। গবেষণা বলছে, এমন পরিবেশ মানুষের কর্মক্ষমতা ও সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। কেননা বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য কফিশপের আছে, যা বাসায় বা অফিসে পাওয়া যায় না।

করোনাকালে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ কথাটির ব্যাপক প্রচলন হওয়ার আগে থেকেই কিন্তু ‘ওয়ার্ক ফ্রম কফিশপ’ ব্যাপারটা চালু আছে। অফিসে না গিয়েও যে অফিস করা যায়, ২০২০ সালেই তা প্রমাণ হয়ে গেছে। আর আমাদের প্রশিক্ষণও হয়ে গেছে। অতএব সামনের দিনগুলোতে ‘ওয়ার্ক ফ্রম কফিশপ’–এর ধারণা আরও জনপ্রিয়তা পেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কফিশপের কোলাহল, ঘ্রাণ এবং দৃশ্যের পরিবর্তন আমাদের সৃজনশীল ভাবনায় সাহায্য করে।

২০১২ সালে জার্নাল অব কনজিউমার রিসার্চে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, কফিশপে সাধারণত নিচু থেকে মাঝারি স্তরের একধরনের কোলাহল থাকে। শব্দের এই মাত্রা আপনাকে পুরোপুরি কাজে মনোনিবেশ করতে দেবে, তা নয়; বরং কখনো কখনো কিছুটা অন্যমনস্ক করে দেবে। এটিই ভিন্নধর্মী চিন্তা ও সৃজনশীল আইডিয়ার জন্য সহায়ক। একই ধরনের ফলাফল পাওয়া গেছে ২০১৯ সালে করা আরেকটি গবেষণায়—কফিশপের শব্দের মাত্রা আমাদের ইন্দ্রিয়কে সজাগ রাখার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। এমনকি ইদানীং কর্মীদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিসের ভেতরে কফিশপের মতো পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। একে বলা হচ্ছে ‘দ্য কফিশপ ইফেক্ট’।

ইদানীং কর্মীদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিসের ভেতরে কফিশপের মতো পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে

ইদানীং কর্মীদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিসের ভেতরে কফিশপের মতো পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে
পেক্সেলস

যদি এমন হয় যে কফিশপে আপনি ছাড়া অন্য যাঁরা উপস্থিত আছেন, তাঁরাও আপনার মতো কাজ করতে এসেছেন, তাহলে কর্মক্ষমতা বেড়ে যাবে আরও। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির অর্গানাইজেশনাল থিওরি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানকি লি বলেন, ‘ব্যাপারটা অনেকটা শরীরচর্চা করতে জিমে যাওয়ার মতো। জিমে গিয়ে আপনি যখন আরও অনেককে ব্যায়াম করতে দেখবেন, তখন আপনিও গড়িমসি না করে শরীরচর্চা শুরু করতে উদ্বুদ্ধ হবেন।’

বাসায় কিংবা অফিসে আমরা সাধারণত একই পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ কাজ করি। কিন্তু কফিশপের সুবিধা হলো, এখানে দৃশ্যপটে বৈচিত্র্য আছে। নানা ধরনের মানুষ আসবে, যাবে। যদি একেক দিন একেক কফিশপে বসে কাজ করেন, তাতেও আপনি বৈচিত্র্য খুঁজে পাবেন। সানকি লি বলেন, ‘একটা অফিস কীভাবে সাজানো হলো, তার ওপরও সৃজনশীলতা নির্ভর করে। একে বলা হয় একমুখী সৃজনশীল চিন্তা। যদি দৃশ্যপটের পরিবর্তন হয়, তা আপনাকে যেকোনো সমস্যার সন্তোষজনক ও ভিন্নধর্মী সমাধান পেতে সাহায্য করবে।’

কফিশপে কাজের উপকারিতা নিয়ে গবেষণা করেছেন নিউইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক করিডন স্মিথও। তাঁর মতে, অফিসের সাধারণ সভা কিংবা জুমের মতো অনলাইন মাধ্যমে সবাই এক হয়ে আলোচনা করার মধ্যে একধরনের ‘আনুষ্ঠানিকতা’ আছে। অন্যদিকে ক্যাফে বা কফিশপের আলোচনা কিছুটা অনানুষ্ঠানিক। এটিও সৃজনশীল চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষকে সহায়তা করে।

এত সব যুক্তি উপস্থাপনের পর গবেষকেরা বলছেন সবচেয়ে কার্যকর উপাদানটির কথা, যে কারণে লোকে কফিশপে যায়—কফি! ধোঁয়া–ওঠা এক কাপ কফি যদি থাকে সামনে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু চুমুক দিতে পারলে নিশ্চয়ই তা আপনাকে চাঙা রাখবে।

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় ৪ ফেব্রুয়ারি

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ১৮ বছর আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় সাবেক এক সংসদ সদস্যসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। 

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে সাতক্ষীরার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবির এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ মামলার রায় ঘোষণার দিন আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেখা শেষে সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা।

এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশি আদালতে মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। এ মামলায় ১৬ জন আসামি পলাতক রয়েছে।

অটোপাস নয়, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই: শিক্ষামন্ত্রী

অটোপাস নয়, ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল সোমবার রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) সদ্য স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল’-এর উন্মোচন এবং ১৫৯তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীরা তিন থেকে চার মাস প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পাবে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, চলতি বছরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য তিন থেকে চার মাসে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে—এমন একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

অটোপাসের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যেভাবে আন্দোলন করা হচ্ছে, তাতে বরং করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব রকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। সুতরাং এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আরও বলেন, ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল, কিন্তু সে সময় সংক্রমণের হার বেশি থাকায় সরকার তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অটোপাসের চিন্তা করেছে। কিন্তু ২০২১ সালে যারা পরীক্ষার্থী, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। তারা তো তেমন প্রস্তুতি নিতে পারেনি। সুতরাং তাদের অটোপাস দেওয়া সম্ভব নয়। সংক্রমণও আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নায়েমে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে ত্যাগ, তিতিক্ষা ও সংগ্রাম প্রয়োজন, বঙ্গবন্ধু তার সবকিছুই করেছেন।

নায়েমের মহাপরিচালক আহম্মেদ সাজ্জাদ রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।

দেশে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ

সরকার কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জাতীয় ভ্যাকসিন কার্যক্রমের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। মারাত্মক এই ভাইরাসের প্রকোপ দূর করতে ১৩.৮২ কোটি লোকের প্রত্যেককে ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজ দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা তথ্য অনুযায়ী, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঁচটি ধাপে তিনটি পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার ভারতের উপহার হিসেবে সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ বাংলাদেশে এসে পৌঁছে।

কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ (অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন) সংগ্রহের জন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার সচিবালয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী অক্সর্ফোড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড-১৯ টিকার (ভ্যাকসিন) তিন কোটি ডোজের মধ্যে প্রথম ধাপে ৫০ লাখ টিকা সোমবার বাংলাদেশে আসবে।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের ২০ লাখ টিকা দিয়েছে ভারত সরকার। চুক্তি অনুয়ায়ী কাল আসবে ৫০ লাখ। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকী টিকা আসবে। এসব ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হচ্ছে। পরের ধাপে টিকা আসলে ঢাকাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোথায় তা রাখা হবে সেটিও ঠিক করে রাখা হয়েছে।’

তিনি জানান, আগামী ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা হাসপাতালে নার্সদের থেকে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।

‘ভ্যাকসিন কীভাবে প্রয়োগ করা হবে সেজন্য আমাদের জাতীয় কমিটি আছে। তারা এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি শেষ করেছেন,’ বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন প্রয়োগ নিয়ে কিছু কথাবার্তা হচ্ছে। অনেকে বলছেন ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে। অনেক ওষুধেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। তাই এই ভ্যাকসিনে যে সেটি হবে না, তা বলতে পারছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘অনেক ভ্যাকসিনেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় । করোনা ভ্যাকসিনে যদি কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, সেজন্য আমরা প্রতিটি হাসপাতালে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রেখেছি।’

ভ্যাকসিন গ্রহণে মানুষকে কীভাবে আশ্বস্ত করা হবে জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘এই পর্যন্ত যতগুলো ভ্যাকসিন পৃথিবীতে রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি, এসব ভ্যাকসিন থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম হয়েছে। ভারত ও যুক্তরাজ্যে লাখ লাখ ভ্যাকসিন প্রয়োগ হয়েছে। তাই এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের প্রয়োজন নেই।’

তিনি আরো বলেন, ভ্যাকসিন কাউকে জোর করে দেয়া হবে না। ভ্যাকসিন স্বাধীনভাবে যে যে নিতে চায় তাকেই দেয়া হবে।

মন্ত্রী জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আগে ফ্রন্টলাইনারদের ভ্যাকসিন দেব। পর্যায়ক্রমে যাদের ভ্যাকসিন লাগবে তাদের সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে এখনো বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন আনার অনুমতি দেয়া হয়নি। যদি কেউ বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন দিতে চায়, সে বিষয়ে আমরা পরে দেখব।’

৩ পর্যায়ে ৫ ধাপে মোট ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হবে।

স্বাস্থ্যকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সামরিক ও অন্যান্য বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার কর্মচারী এবং ধর্মীয় নেতারা প্রথম ধাপে টিকা পাবেন।

প্রথম পর্যায়ে টিকা পাবেন ১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ৯৩৯ জন। দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা পাবেন ১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার। তৃতীয় পর্যায়ে টিকা পাবেন ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ।

প্রথম পর্যায়ের প্রথম ধাপ

প্রথম ধাপে ৫১ লাখ ৮৪ হাজার ২৮২ জন টিকা পাবেন। তার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত ১০ লাখ ৫২ হাজার, মুক্তিযোদ্ধা ২ লাখ ১০ হাজার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনা ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্য ৯ লাখ ৭ হাজার ৫৩২ জন, সরকারি কর্মকর্তা ৫০ হাজার, ফ্রন্টলাইনের সাংবাদিক ৫০ হাজার টিকা পাবেন।

এছাড়াও জনপ্রতিনিধি ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মী ১ লাখ ৫০ হাজার, ধর্মীয় নেতা ৫ লাখ ৪১ হাজার, দাফন ও সৎকারে নিয়োজিত কর্মী ৭৫ হাজার, ওয়াসা, ডেসা, তিতাস ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ৪ লাখ, সমুদ্র ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মী ১ লাখ ৫০ হাজার, ব্যাংক কর্মী ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন রোগী ৬ লাখ ২৫ হাজার, জরুরি ও মহামারি ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মী ৭৭ হাজার ৮০৪ জন টিকা পাবেন।

দ্বিতীয় ধাপ

সারাদেশে টিকাদানের দ্বিতীয় পর্যায়ে এক কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার জন টিকা পাবেন। এর মধ্যে ৫৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী ৫৫ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫৭ প্রবীণ নাগরিক, কো-মরবিডিটিসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা ৩০ লাখ ২১ হাজার ৯৩৬ জন, শিক্ষক ও সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মী ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩ জন, প্রথম পর্যায়ে বাদ পড়া গণমাধ্যম কর্মী ৫০ হাজার, দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী ১০ লাখ ১১ হাজার ২২৮ জন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১০ লাখ সদস্য, ৫ লাখ গণপরিবহন কর্মী, ২ লাখ ৪২ হাজার ৯৬৪ জন হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং ওষুধের দোকানের কর্মী, ৩৬ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক, দেড় লাখ যৌনকর্মী ও তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে টিকা দেয়া হবে।

তৃতীয় ধাপ

তৃতীয় ধাপে দুই স্তরে বাংলাদেশের সর্বাধিক সংখ্যক লোককে টিকা দেয়া হবে।

পরিকল্পনা অনুসারে, তৃতীয় ধাপে দুই পর্যায়ে মোট ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার জনকে এই ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬১ হাজার প্রথম পর্যায়ে এবং ৬ কোটি ৯১ লাখ ২৩ হাজার দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা পাবে।

তৃতীয় ধাপে যারা টিকা পাবেন তারা হলেন- টিকা পাননি এমন শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬ লাখ ৬৭ হাজার ২০৪ শিক্ষক ও কর্মচারী, প্রসূতি (অনুমোদন সাপেক্ষে) ৩৮ লাখ ১৫ হাজার ২০১ জন, অন্যান্য সরকারি কর্মচারী ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬২ জন, অন্য আইন প্রয়োগকারী কর্মী ৪৩ লাখ, অন্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মী ৬ লাখ, অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ২২ লাখ, রপ্তানি ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মী ২০ লাখ ৮১ হাজার ৮৮৪, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দর কর্মী ২৫ লাখ, কয়েদি ও জেলকর্মী ১ লাখ ৫৮৬, শহরের বস্তিবাসী বা ভাসমান জনগোষ্ঠী ২২ লাখ ৩২ হাজার ১১৪, কৃষি ও খাদ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত কর্মী ১৬ লাখ ৫০ হাজার, ডরমেটরির বাসিন্দা ৫ লাখ, গৃহহীন জনগোষ্ঠী ২ লাখ, অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মী ৫১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৪, বাদ পড়া গণপরিবহন কর্মী ৩ লাখ, বাদ পড়া ৫০ থেকে ৫৪ বছর বয়সী নাগরিক ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩২৩, জরুরি ও মহামারি ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মী ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯, বাদ পড়া যুব জনগোষ্ঠী ৩ কোটি ২২ লাখ ৩৪ হাজার, শিশু ও স্কুলগামী শিক্ষার্থী ৩ কোটি ২২ লাখ ৪৭ হাজার ১৫৭ এবং পূর্বের ধাপে বাদ পড়া ৮ কোটি ৪২ লাখ ৫৯৭ জনকে চূড়ান্ত ধাপে টিকা দেয়া হবে।

পথ দেখানোর কেন্দ্র হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস আমাদের বাধা দিয়েছে, কিন্তু এই বাধা অতিক্রম করেই এগিয়ে যেতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন গবেষণা করা। গবেষণা ছাড়া কোনো অর্জন সম্ভব না।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবির শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

গবেষণার প্রতি জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন সেটা সমুন্নত রাখা, বিশ্বে বাঙালি জাতিকে একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ’৯৬ তে আমরা যখন সরকারে আসি তখন দেখেছিলাম গবেষণার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে পারত অর্থের ব্যবস্থা করে গবেষণা করত। তখন আমরা গবেষণার জন্য আলাদাভাবে অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করলাম। আর এখন এর সুফল আমরা পাচ্ছি। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, প্রতিটা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। সবকিছুই গবেষণার ফসল। তাই গবেষণাকে সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে, সেটা আমি অনুরোধ করব।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের। আমাদের প্রতিটি অর্জনের পথ দেখিয়েছে। কাজেই সে বিশ্ববিদ্যালয় আরও উন্নত থেকে উন্নততর, সুন্দর হোক সেটাই আমরা চাই।  সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের আগামী দিনের পথচলা বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার জন্য যে দক্ষ মানব শক্তির প্রয়োজন এই মানব শক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে পারে বা এর যাত্রা শুরু করতে পারে। যাকে অনুসরণ করে বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ও সেইভাবেই কাজ করবে। আমাদের সামনে যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে বা বিশ্ব যখন এগিয়ে যাবে তার সঙ্গে আমরা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারি। তার পথ দেখানোর কেন্দ্রবিন্দু হবে ঢাবি সেটাই আমরা চাই।

ঢাবির সব আন্দোলনের সূতিকাগার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যদি আমাদের প্রতিটা আন্দোলনের দিকে তাকাই সবগুলোরই সূতিকাগার ঢাবি। ঢাবি সবসময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছে এবং আমরা দেখেছি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তথা ৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর মিলিটারি ডিক্টেটররা ক্ষমতা একের পর এক দখল করতে শুরু করে। ৭৫-এর পর দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি।  আর এভাবেই একটি জাতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়ার যড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, আদর্শ সব একে একে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু এর প্রতিবাদ আবার শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কারণ ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার গঠনের পর ঢাবিতে এখন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যায় না, গোলাগুলি, বোমাবাজির শব্দও শোনা যায় না। সবচেয়ে বড় বিষয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। আর আমরা সেটা পেরেছি। এখন শিক্ষকদের দায়িত্ব জ্ঞানদান করা আর ছাত্রদের দায়িত্ব জ্ঞান গ্রহণ করা। তবে আমার সরকারের পক্ষ থেকে বলতে পারি, ঢাবি আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাবে।