আশঙ্কার চেয়ে কম ক্ষতি হয়েছে করোনায়: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

ব্রাজিলের অর্থনীতি গত বছরে আশঙ্কার চেয়ে কম সংকুচিত হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো বলেছেন, অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের জন্য ব্রাজিল সরকারের গৃহীত জরুরি সাহায্য কর্মসূচিকে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। গতকাল বুধবার তিনি এসব কথা বলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত বছর ব্রাজিলের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। তবে বলসোনারো বলেছেন, করোনা মহামারির মধ্যে এ হার একেবারে খারাপ নয়। অনেকে এর চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির আশঙ্কা করেছিলেন।

সাংবাদিকদের সামনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মানুষ আশা করেছিল আমাদের জিডিপি ১০ শতাংশ কমে যাবে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতির চাকা চালু করে রেখেছে সরকারের জরুরি সাহায্য।’

ব্রাজিল সরকার গত বছর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে ৫৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য দেয়। এতে জিডিপির সাড়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে। এ ছাড়া দরিদ্রদের অর্থ সাহায্য করায় বলসোনারোর জনপ্রিয়তাও বেড়ে গেছে। তিনি আগামী বছর আবার ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করবেন।

বলসোনারো বলেন, তাঁর সরকার ব্রাজিলের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠেকাতে সবকিছু করেছে।

অবশ্য ব্রাজিলের এই ডানপন্থী নেতা শুরুতে কোভিড-১৯কে গুরুত্ব দেননি। এর বাইরে মেয়রদের জারি করা লকডাউনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, এতে চাকরির ক্ষতি হবে এবং ব্রাজিলবাসীর কাজ দরকার।

এদিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো লকডাউনের বিরোধিতা করে বলেন, গভর্নরদের লকডাউনের কারণে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। সম্প্রতি ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক সফরে তিনি আরও বলেন, মানুষ এখন আর ঘরে বসে থাকতে চান না। মানুষ তাঁদের কাজে ফিরতে চান।

এক বছর আগে করোনা মহামারির শুরুর পর থেকে দেশটিতে আড়াই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃতের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয়। ব্রাজিলে হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত সপ্তাহে দেশটিতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। অবস্থা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও হাসপাতালগুলো। বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নররা করোনা ঠেকাতে লকডাউনকেই অন্যতম উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু লকডাউনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন ব্রাজিলের ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। যেসব রাজ্য লকডাউন দিচ্ছে, তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া জরুরি মহামারি সহায়তা বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

জরুরি সাহায্য বাড়ানো প্রসঙ্গে বলসোনারো বলেছেন, তাঁর সরকারের অর্থ শেষ হয়ে গেছে এবং উচ্চ সুদের জাতীয় দেনা বাড়ছে। তবে তিনি আরও চার মাস এ সহায়তা বাড়ানোর পক্ষে প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন।

ট্রাম্পের করবিবরণী তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপদ পিছু ছাড়ছে না। তাঁর করবিবরণী তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

ট্রাম্প দ্রুত এক বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্টের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি তাঁর বিরুদ্ধে চলমান রাজনৈতিক ভূত খোঁজার আরেকটি চেষ্টামাত্র। সুপ্রিম কোর্টের এমন কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি আগের মতোই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি জয়ী হবেন।

২২ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট নিউইয়র্কের তদন্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ট্রাম্পের করবিবরণী হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার সময় নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষ থেকে এই বিবরণী হস্তান্তরের নির্দেশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। তখন ট্রাম্প তাঁর করবিবরণী প্রকাশ করতে বাধ্য নন বলে দাবি করছিলেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাওয়া কিছু আইনি সুবিধা এখন ট্রাম্পের নেই। যদিও গতকাল সোমবারের দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সঙ্গে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকা বা না–থাকার কোনো আইনি বিষয় বিবেচ্য ছিল না।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা কোনো মন্তব্য না করেই ওই নির্দেশ দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সাইরাস ভ্যান্স বলেছেন, কাজ চলমান থাকবে। তিনি এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার সময়ই নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়া, কর ফাঁকির জন্য হিসাববিবরণীতে গরমিলসহ নানা অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে এ তদন্ত শুরু হয়।

ট্রাম্পের একসময়ের বিশ্বস্ত সহযোগী ছিলেন আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তাঁর মাধ্যমে দুজন নারীর মুখ বন্ধ করার জন্য নগদ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। আলোচিত এই দুই নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। মনে করা হচ্ছে, তাঁদের মুখ বন্ধ করার জন্য নগদ অর্থ প্রদানের প্রমাণ পাওয়া যাবে ট্রাম্পের হিসাববিবরণীতে। এ ছাড়া কর রেয়াত পাওয়ার জন্য হিসাবের খাতায় বড় ধরনের গরমিল পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টরা নিজেদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রমাণের জন্য নিজে থেকেই করবিবরণী প্রকাশ করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন ট্রাম্প।

নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড জুরির মাধ্যমে ট্রাম্পের করবিবরণীর তথ্য তলব করা হয়েছিল। কিন্তু আদালতের হস্তক্ষেপে মাধ্যমে ট্রাম্প তা বন্ধ করে আসছিলেন। প্রেসিডেন্টের করবিবরণী জনসমক্ষে আসার বাধ্যবাধকতা নেই বলে দাবি করে আসছিলেন ট্রাম্প। এ নিয়ে ক্ষমতায় থাকার সুযোগও গ্রহণ করছিলেন তিনি। কর আইনে কোনো কোনো বিবরণী প্রকাশের জন্য অর্থমন্ত্রীর (ট্রেজারি সেক্রেটারি) অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

সুপ্রিম কোর্টের গতকালের আদেশে এ ব্যাপারে ট্রাম্প একটা বড় ধাক্কা খেলেন। যদিও আদালত এই করবিবরণী জনগণের জন্য নয়, গ্র্যান্ড জুরির জন্য উন্মুক্ত করেছেন। কোনো অপরাধের অভিযোগ তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশনাই যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে; যদিও এ নিয়ে ট্রাম্প আপিল করতে পারবেন।

সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশিত হলে গতকাল দুপুরে ট্রাম্প এ নিয়ে দীর্ঘ বিবৃতি দেন। ট্রাম্প বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে নাজুক রাজনৈতিক ভূত খোঁজার মতো তদন্ত চালানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিশেষ কাউন্সেলর রবার্ট মুলারের তদন্তের কথা উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, দুই দফা অভিশংসনের পরও তিনি নিরপরাধ হিসেবে অব্যাহতি পেয়েছেন।

স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর নাম উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, সবই হচ্ছে ডেমোক্রেটিক পার্টির মদদে। সুপ্রিম কোর্টের কখনোই এমন কাজ হতে দেওয়া উচিত নয় বলে ট্রাম্প মনে করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় বিশ্বের মতো আইনকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা হচ্ছে বলে ট্রাম্প তাঁর বিবৃতিতে মন্তব্য করেন। এটি কোনো ন্যায়বিচার নয়, বরং স্বৈরাচারী আচরণ বলে মনে করেন ট্রাম্প। আদালতও তাঁর পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আগের মতোই লড়াই করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। নির্বাচন নিয়ে তাঁর প্রতি যা হয়েছে, তা সত্ত্বেও তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং জয়ী হবেন বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করবিবরণী–সংক্রান্ত আরেকটি মামলা ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল কোর্টে চলমান রয়েছে। ডেমোক্রেটিক পার্টির আবেদনের পর ওয়াশিংটন ডিসির আদালত থেকে করবিবরণী চাওয়া হলে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন তা উপস্থাপনে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।

বর্তমান জো বাইডেন প্রশাসন এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেবে কি না, তা পরিষ্কার করা হয়নি। অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, তাঁরা আইনের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। আইনের নির্দেশিত পথই অনুসরণ করবেন।

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে সেদিন ৫ চীনা সেনাও নিহত হয়েছিল

পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় গত বছর ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ চীনা সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে নিহত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছে।

ওই পাঁচ কর্মকর্তা ও সেনাকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার কথা জানিয়েছে চীনা কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন। চীনা সামরিক বাহিনীর পত্রিকা পিএলএ ডেইলি এমন খবর দিয়েছে।

নিহতদের মধ্যে পিএলএ জিংজিয়াংয়ের রেজিমেন্টাল কমান্ডার কিই ফাবো রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন পিএলএ নেতৃবৃন্দ নিহত কিই ভাবো, চেন হনজুসন, চেন জিয়ানগ্রোং, জিয়াও সিইউন ও ওয়াং জোরানকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।

ভারত বলেছে, সংঘাতে ৩০ চীনা সেনা নিহত হয়েছে। কিন্তু বেইজিং তা কখনই স্বীকার করেনি। ১০ ফেব্রুয়ারি এক খবরে ৪৫ চীনা সেনা নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে রুশ সংবাদ সংস্থা তাস।

গেল বছরের ১৫ জুনের ওই সংঘাতে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিল। দুই দেশের মধ্যে যা ছিল চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।

টিসিংগুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কৌশল ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের পরিচালক কিয়ান ফেং বলেন, হতাহতের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে এই ঘটনায় প্রচারিত ভুল তথ্যকে খণ্ডন করা হয়েছে। ভারতীয়দের চেয়ে যে চীনা সেনারা বেশি হতাহত হয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছিল, তা আর ধোপে টিকল না।

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের জন্য জোট চূড়ান্ত করল বাম-কংগ্রেস

পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একসাথে লড়াই করার লক্ষ্যে কংগ্রেস এবং বাম নেতৃত্ব আজ বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা সম্পন্ন করলেন।

যদিও কে ক’টি আসন পাচ্ছেন তা নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানালেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। একই কথা জানান সিপিএম-এর বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র. মহম্মদ সেলিমরা।

যদিও ভারতীয় গণমাধ্যমের ধারণা পশ্চিমবঙ্গে এবারের নির্বাচন হতে চলেছে বিজেপির সাথে তৃণমূলের লড়াই , বাম এবং কংগ্রেস নেতাদের দাবি লড়াই হবে আসলে ত্রিমুখী।

অধীরের মতে, আগামী দিনে বাংলায় সরকার গড়তে চাইছে বাম-কংগ্রেস জোট।

“এবার লড়াই হবে ত্রিমুখী। ‌অর্থাৎ বাম-কংগ্রেস জোট একই সঙ্গে লড়বে বিজেপি এবং তৃণমূলর বিরুদ্ধে,” অধীর আরও বললেন।

তাঁর মতে, বাম এবং কংগ্রেসকে ছোট করে দেখলে ভুল করবে গণমাধ্যম। “কয়েকটি ছোট ছোট দল যেমন ইন্ডিয়ান সেক্যুলাকর ফ্রন্ট, আরজেডি, ন্যাশানালিস্ট কংগ্রেস পার্টি এই জোটে অংশ নিতে চাইছে। তাঁদের জন্যও জায়গা ছাড়বে জোটের দুই বড় শরিক,” বলেন অধীর বাবু, যিনি ভারতের লোকসভাতে কংগ্রেসের নেতা।

এবার বিধানসভায় যে বাম-কংগ্রেস জোট করে লড়বে তা স্থির হয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু ধোঁয়াশা ছিল আসন সমঝোতা নিয়ে। আজকের বৈঠক থেকে অধীর-বিমানরা বার্তা দিতে চাইলেন, আর কোনো দোলাচল নেই।

জোটে প্রায় ৪০টি আসন চেয়েছিল হুগলিতে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। মালদহেই তাঁদের ৬টি আসনের দাবি ছিল। এইসব শর্তাশর্ত পেরিয়ে সেকুলার ফ্রন্টকে কি জোটসঙ্গী করবে বাম-কংগ্রেস, এখন প্রশ্ন সেটাই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে হানা দিতে জোটে আইএসএফ-কে চাইছে বাম-কংগ্রেস।

কে কত আসনে প্রার্থী দিচ্ছে, কেন বলতে চাইছেন না জোটের মুখ্য শরিকরা? অধীর চৌধুরীর যুক্তি, “বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে বিগত কয়েক দিনে। বেশ কিছু ছোট দল আমাদের হাত ধরতে চাইছে। আমরা যদি আগে থেকে ঘোষণা করে দিই কংগ্রেস এবং বামেদের আসন রফা, তাহলে তাঁদের কাছে ঠিক বার্তা যাবে না।”

অধীর জানাচ্ছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দিতে চায় যে রাজনৈতিক দল, তাঁদের সম্মান দিতে চায় বাম কংগ্রেস।

“আগামীকাল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সাথে কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতাদের মিটিংয়ে আশা করা যাচ্ছে আসনসংখ্যা চূড়ান্ত হবে ,”জানিয়েছেন এক সূত্র।

মা ক্যানটিনে ৫ টাকায় মিলবে দুপুরের খাবার

কলকাতা পৌর করপোরেশনে গরিব মানুষের জন্য পাঁচ টাকায় দুপুরের খাবারের প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মা ক্যানটিন’। সোমবার ভার্চ্যুয়ালি এই ক্যানটিনের উদ্বোধন করেন তিনি। আপাতত ১টি করে মোট ১৬টি ক্যানটিন চালু হয়েছে পৌর করপোরেশনের ১৬টি প্রশাসনিক এলাকা বা বরাতে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০০ কোটি রুপি।

মূলত বরার ক্যানটিনগুলোতে ব্যবস্থা করা হবে এ খাবারের। সেখানে পাঁচ টাকায় দুপুরে মিলবে প্রয়োজনীয় ভাতের সঙ্গে ডাল, সবজি ও ডিম। প্রতিদিন দুপুরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এসব ক্যানটিনে গিয়ে খাবার খেতে পারবে গরিব মানুষেরা। প্রতিদিন কাজের জন্য গ্রাম ও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে কলকাতায় আসেন অনেক গরিব মানুষ। মূলত তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

জানা গেছে, পরবর্তী সময় এই ক্যানটিন প্রকল্প চালু হবে রাজ্যের সবখানে। কলকাতা করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, করপোরেশনের ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ এসব ক্যানটিনের খাবার রান্না করবে। আর তা পরিবেশন করবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এর আগে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে গরিব মানুষের মুখে কম দামে আহার দিতে বাম দল কলকাতা শহরে চালু করেছিল শ্রমজীবী ক্যানটিন। প্রথম চালু করা হয় দমদমে গত বছরের মার্চের শেষ দিকে। চাঁদা তুলে ওই ক্যানটিন চালু করা হয়েছিল। এখনো কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় চালু রয়েছে এই ক্যানটিন। এসব ক্যানটিনে এখনো শ খানেক গরিব মানুষকে প্রতিদিন বিনা মূল্যে খাবার দেওয়া হয়। আর সাধারণ মানুষ খেতে চাইলে ২০ টাকা দিতে হয়। এই ক্যানটিন এখন কলকাতায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এই শ্রমজীবী ক্যানটিন চালানোর জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষও। তাঁরা চাঁদা তুলে সচল রেখেছেন এই শ্রমজীবী ক্যানটিন।

আবারও গৃহবন্দি কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী

উত্তপ্ত কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছেন, তাদের গৃহবন্দি করে রেখেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

টুইট বার্তায় ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। এটা খুবই ঘৃণ্য কাজ; তারা আমার বাবাকে (বর্তমান পার্লামেন্ট মেম্বার) ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না। তারা আমার বোন এবং তার বাচ্চাদেরও ঘরে আটকে রেখেছে।’

২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ওমর আবদুল্লাহ।

গুপকারে নিজের বাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি বুলেটপ্রুফ পুলিশ ট্রাকের ছবি শেয়ার করেন তিনি। ওই এলাকায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক ক্ষমতাবানদের বসবাস।

ওমর আবদুল্লাহর বাবা ফারুক আবদুল্লাহ তিনদফা কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ প্রথম দফায়, ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ দ্বিতীয় মেয়াদে এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ভারত এবং পাকিস্তান কাশ্মীর দখল করে আছে। দু’পক্ষই পুরো কাশ্মীর নিজেদের বলে দাবি করে। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর থেকে এ পর্যন্ত তিনদফা যুদ্ধে জড়িয়েছে দু’দেশ। দুবারই যুদ্ধ করেছে কাশ্মীর নিয়ে। কয়েকটি গোষ্ঠী স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার জন্য ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টির মুখপাত্র ইমরান নবি বলেন, সাবেক মুখ্যমন্ত্রীদের গৃহবন্দির ঘটনা অবিচার এবং নিন্দনীয়। কেন তাদের ঘরে আটকে রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো কারণ ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।

তবে পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার দ্বিতীয় বছরপূর্তি। ২০১৯ সালের এদিনে দক্ষিণ কাশ্মীরের মহাসড়কে বোমা হামলায় ৪০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। দিবসটি উপলক্ষে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভিআইপিদের চলাচল না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কাশ্মীরের রাজনৈতিক স্বায়ত্বশাসন বাতিল করে শত শত ভারতপন্থী এবং স্বাধীনতাপন্থী রাজনৈতিককে হয় জেলে পুরেছে না হয় গৃহবন্দি করেছে মোদি সরকার। ওমর এবং ফারুক আবদুল্লাহ ২০২০ সালের মার্চে মুক্তি পান।

সাবেক মন্ত্রী এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা নাঈম আখতার এবং সারতাজ মান্দি দলের অন্যান্য নেতাকর্মীর সঙ্গে এখনো আটক রয়েছেন।

ট্রাম্প ফের নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না: নিকি হ্যালি

ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়তে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে তাকে রিপাবলিকানদের সমর্থন দেওয়া ছিল ভুল।

বার্তা সংস্থা এএফপি ও এনডিটিভির খবরে এমন তথ্য মিলেছে। পলিটিকো সাময়িকীতে শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, জো বাইডেনের সঙ্গে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ট্রাম্পের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তাতে আমি বিষম বিরক্ত।

সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, কেন্দ্রীয় অফিসের জন্য তিনি (ট্রাম্প) ফের নির্বাচন করতে যাচ্ছেন না।

২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে ট্রাম্পের দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নিকি হ্যালি।

গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় ও দ্বিতীয় অভিশংসনের প্রতিশোধ নিতে ২০২৪ সালেও ট্রাম্প প্রার্থী হতে পারেন বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তা উড়িয়ে দেন তিনি।

সাউথ ক্যারোলাইনার প্রথম এই নারী গভর্নর বলেন, আমি মনে করি না, তেমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। আমি মনে করি না, তিনি পারবেন। এখন পর্যন্ত যা মনে হচ্ছে, তাতে তিনি পড়ে গেছেন। তিনি আমাদের হতাশ করেছেন।

নির্বাচনের ফল পাল্টাতে ট্রাম্পের চেষ্টায় সমর্থন দেওয়ায় রিপাবলিকান দলেরও সমালোচনা করেছেন নিকি হ্যালি। আর এ কারণেই গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার সাংবিধানিক: সিনেট

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন বিচারকে সাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে মার্কিন সিনেট। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা অভিশংসন বিচার শুরু হয়েছে। ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পরও সংবিধান অনুযায়ী অভিশংসন কার্যক্রম চলতে পারে বলে সিনেটে প্রস্তাব পাস হয়েছে।

সিনেটে অভিশংসন বিচারকাজ সাংবিধানিক কি না, তার ওপর ভোটাভুটি হয়। ৫৪-৪৪ ভোটে বিচারকাজ সাংবিধানিক বলে পাস হয়। সিনেটের সব ডেমোক্র্যাট সদস্য ছাড়াও ছয়জন রিপাবলিকান সিনেটর এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাঁরা হলেন সিনেটর বিল কেসেডি, সুজান কলিন্স, লিসা মুরকৌস্কি, মিট রমনি, বেন সেসই ও প্যাট টমি। এর মধ্যে পাঁচজন রিপাবলিকান সিনেটর আগেই সিনেটে আদালত গঠনের পক্ষে দলের অবস্থান থেকে বেরিয়ে ভোট দিয়েছিলেন। নতুন যোগ হয়েছেন সিনেটর বিল কেসেডি। তিনি বলেছেন, যুক্তিতর্ক শুনে তিনি মনে করেন, সিনেট এমন অভিশংসন আদালত পরিচালনার এখতিয়ার রাখে। তবে বাকি ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন পাওয়া যাবে কি না, তা নিশ্চিত নয়

প্রথম দিনে আদালতের কার্যক্রমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষের আইনজীবীরা জোরালো বক্তব্য দিতে পারেননি। সিএনএনের খবরে জানা যায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হতাশ এবং বিরক্ত হয়েছেন।

ক্যাপিটল হিলে হামলা।

ক্যাপিটল হিলে হামলা।  রয়টার্স ফাইল ছবি।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাপিটল হিলে সিনেটের প্রবীণ সদস্য প্যাট্রিক লেহির সভাপতিত্বে অভিশংসন আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই অভিশংসন ব্যবস্থাপকদের পক্ষ থেকে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলের সহিংস ঘটনার ওপর একটি ভিডিও দেখানো হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এরপরই ট্রাম্প–সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলে ঢুকে হামলা চালাতে দেখা যায়।

আদালতে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কংগ্রেসম্যান জ্যামি রাস্কিন। ৬ জানুয়ারি জ্যামি রাস্কিন ক্যাপিটল হিলে উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেয়ে ও জামাতা। জ্যামি রাস্কিন বলেন, মেয়ে তাঁকে বলেছেন, আর কখনো ওয়াশিংটন ডিসিতে তাঁরা ফিরতে চান না।

ট্রাম্পের আইনজীবী ডেভিড স্কোহেন আদালতে বলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন দণ্ড হলে দেশে আরেকটি গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এ আদালত চলতে পারেন না। ট্রাম্প আর ক্ষমতায় নেই। সিনেট এমন আদালতে তাঁকে দণ্ড দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। তবে তাঁদের যুক্তি সাংবিধানিক ব্যাখ্যায় ধোপে টেকেনি।

রিপাবলিকান সিনেটর জন কারনাইন আইনজীবীদের সমালোচনা করে বলেছেন, প্রথম আইনজীবী সাংবিধানিক গ্রহণযোগ্যতার যুক্তি জোরালোভাবে উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন।

অভিশংসন আদালতের বিচারকাজ স্থানীয় সময় আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আজ দুপুরে অভিশংসন আদালত আবার বসবেন। আদালতে সহিংসতা ও উসকানি প্রমাণ করার জন্য আরও কিছু ভিডিওচিত্র ও প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

অভিশংসন আদালত চলাকালে ট্রাম্প ফ্লোরিডার মার এ লাগোতে অবস্থান করছেন। ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার নিয়েও অনেকটা নীরব মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

চীনের কাছে টিকা উপহার পেল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা উপহার দিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা থেকে আজ সোমবার এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, পিএলএ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে করোনার টিকা উপহার দিয়েছে। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীই প্রথম বিদেশি সামরিক বাহিনী, যারা বেইজিংয়ের কাছ থেকে টিকা উপহার পেয়েছে।

ডনের খবরে বলা হয়, উপহার হিসেবে পাওয়া এসব টিকা জাতীয় টিকা কার্যক্রমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘সব সময়, প্রতি মুহূর্তে রাষ্ট্র আগে’, এই নীতি অনুসরণ করেই সশস্ত্র বাহিনী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ে এমন উপহারের জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী চীন ও পিএলএর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

গত সপ্তাহে চীনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ডোজ করোনার টিকা উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছে পাকিস্তান। এর এক দিন পরই দেশজুড়ে টিকা কার্যক্রম শুরু করে পাকিস্তান।
দেশটিতে আজ সোমবার পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫১১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ২৬ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ১১ হজার ৫০২ জন।

নিজেদের তৈরি দ্বিতীয় করোনার টিকার মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করছে ইরান

নিজ দেশে তৈরি দ্বিতীয় করোনার টিকার পরীক্ষা শিগগিরই শুরু করতে যাচ্ছে ইরান। দেশটির সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। ইরানের টিকাটির নাম রাজি কোভ-পার্স। তেহরানে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ রোববার টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাজি কোভ-পার্স টিকাটি তৈরি করেছে রাজি ভ্যাকসিন অ্যান্ড সেরাম রিসার্চ ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় শত বছরের পুরোনো।

ইরানের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের মুখপাত্র কিয়ানুশ জোহানপুর বলেছেন, টিকাটি প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ধাপে ১৩০ জনে স্বেচ্ছাসেবীকে দেওয়া হবে। এটি মূলত মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএভিত্তিক টিকা। এতে নিরীহ ভাইরাস স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ইনজেকশন ও ইনহেলার আকারে ব্যবহারের জন্য মূল্যায়ন করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের ফলাফল জানা গেলে চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষার প্রটোকল তৈরি করা হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও মডার্নার টিকা তৈরিতেও এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইদ নামাকি বলেছেন, রাজি কোভ-পার্স টিকাটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম। টিকা গ্রহণকারীর কাছে থেকে অন্যদের সংক্রমণ ঠেকাতেও সক্ষম এ টিকা।

দেশটির কৃষিমন্ত্রী কাজেম খাভাজি বলেন, ‘প্রায় ৯ মাস আগে টিকাটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা শুরু হয়। এটি ৫০০ প্রাণীর দেহে পরীক্ষা করা হয়েছে।’

ইরানের দ্বিতীয় টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর ঘোষণার দিনেই দেশটির প্রথম টিকা ‘কোভইরান বারেকাতের’ প্রথম ধাপের পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। টিকাটি দেশটিতে সরকারি কর্মকর্তাসহ ৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে দেওয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাস থেকে দুই ডোজের টিকাটি দেওয়া শুরু হয়। এক মাসের কম সময়ের মধ্যে টিকাটির প্রথম ধাপের পরীক্ষার ফল জানা যাবে।

বারেকাত প্রকল্প পরিচালনাকারী সেতাদের মিডিয়া প্রধান হোজ্জাত নিকি মালেকি বলেন, তাঁদের টিকাটি আরব অঞ্চলের দুটি দেশ কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। অবশ্য দেশ দুটির নাম বলেননি তিনি।

ইরান নিজস্ব টিকা উৎপাদনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিদেশি টিকাও আমদানি করছে। গত সপ্তাহে দেশটিতে রাশিয়ার স্পুতনিক–ভি টিকাটির ১০ হাজার ডোজের চালান পৌঁছেছে। দেশটিতে রাশিয়ার টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেয়েছে। ইরানে মঙ্গলবার থেকে দেশটির সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছে ইরান। দেশটিকে ১৪ লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং করোনা সংক্রমিত হয়ে সেখানে মারা গেছেন ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ।