‘শেখ হাসিনার কাছ থেকেই গালি দেয়া শিখেছি’- মাওলানা মামুনুল হক

‘শেখ হাসিনার কাছ থেকেই গালি দেয়া শিখেছি’- মাওলানা মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গালি দেয়া এবং রাজনৈতিক অসৌজন্য আচরণ শিখেছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক মিডিয়া হাউস রানার মিডিয়ার একটি টকশোতে। তিনি আরো বলেন, তিনি একাই নন তাঁর দলের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরাও শেখ হাসিনার কাছ থেকেই এই ভাষা শিখেছেন। রানার টিভি’র এই টকশোতে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার, ব্লগার ও লেখক নিঝুম মজুমদার।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক শাহরিয়ার কবিরকে বিভিন্ন ইসলামি ওয়াজে কেন তিনি ‘মুরগী চোর’; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক এবং বিজ্ঞানী মুহম্মদ জাফর ইকবালকে কেন ‘বলদ ষাঁড়’ এবং সূপ্রীম কোর্টের আপীলেট ডিভিশানের বিচারপতি জনাব শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে কেন তিনি বাংলাদেশের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই জুতা খুলে পেটাতে হবে বলেন, ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদারের এমন প্রশ্নের জবাবেই মাওলানা মামুনুল হক বলেন, এই ভাষা ও স্বভাব তিনি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখেছেন।

তিনি বলেন, ডক্টর জাফর ইকবাল ডারউইনের বিবর্তনবাদ থিয়োরীতে বিশ্বাস করেন বলেই তাঁকে তিনি ‘বলদ ষাঁড়’ বলে ডাকেন। একই সাথে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে একজন ‘সেক্টর কমান্ডার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনাব সিদ্দিকী শাহরিয়ার কবিরকে ‘মুরগী চোর’ বলে ডাকেন বলেই তিনিও সেই নামে ডাকবেন। এ সময়ে ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার শরীয়া কিংবা কোরান হাদীসের আয়াতে তাঁর এই ভাষা অন্যায় বলে অভিহিত করলে তিনি তার সদুত্তর না দিয়েই একটি পর্যায়ে তিনি তাঁর ‘অন্য কাজ’ আছে বলে হঠাৎ করেই টকশো ছেড়ে চলে যান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক আসম মাসুম। তিনি আরো জানান, ‘বঙ্গবন্ধু বিষয়ে তাঁকে ব্ল্যাক মেইল করা হচ্ছে’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গালি শিখেছেন এই বক্তব্যের পরপরই হেফাজতে ইসলামীর বিভিন্ন মহল থেকে টকশো বন্ধ করবার ব্যাপক চাপ আসতে থাকে রানার মিডিয়ার কাছ থেকে। আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মামুনুলের এমন বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামী অত্যন্ত বিব্রত। সরকারের সাথে বসে যখন তাঁরা সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলাপের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন এমন সময় এই ধরনের কথা হেফাজতকে অত্যন্ত বিব্রত করেছে বলেই অনেক নেতার অভিমত।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে হেফাজত ইসলামের একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান যে, ‘মামুনুল নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য এখন আমাদের ভবিষ্যত নিয়েও খেলা শুরু করেছে। এই কথার চরম খেসারত দিতে হতে পারে পুরো সংগঠনকে’

এই ব্যাপারে  গতকাল থেকেই তীব্র সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ ও ব্যাক্তিরা ক্ষোভ ঝারছেন মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। একজন ইসলামি ব্যাক্তিত্ব ও স্কলার কিভাবে এমন অসৌজন্য ভাষায় কথা বলে সেটি প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপিয়ে দিতে পারেন, এটি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।

জাহাঙ্গীর/১২৭/জক-৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *