ভাতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন ১৩ হাজার

মাসিক সম্মানী ও বিভিন্ন ভাতা পাওয়া ১ লাখ ৯৩ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম গত বছরের অক্টোবরে একটি সফটওয়্যারে যুক্ত করার পরই হঠাৎ সংখ্যাটি ২১ হাজার কমে যায়। যাঁদের নাম বাদ পড়েছিল, তাঁদের গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণসহ নাম অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু চার মাস পরও ১৩ হাজার জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেকে হয়তো একাধিক নামে, নয়তো জাল সনদে এত দিন ভাতা তুলেছেন।

ওই ১৩ হাজার ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা আর নেই বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, এত বছর ওই ব্যক্তিরা যে সুবিধা নিয়েছেন, তাতে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।

২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ১২ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। এর আগে ছিল ১০ হাজার টাকা। এর মধ্যে দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা বিজয় দিবসের ভাতা এবং ২ হাজার টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা পান। বছরে একজন সব মিলিয়ে ভাতা পান ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। উল্লেখ্য, ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া শুরু হয়। তখন ভাতা ছিল ৩০০ টাকা। ধাপে ধাপে তা বেড়ে ২০০৮ সালে হয় ৯০০ টাকা। ২০১৪ সালে হয় ৫ হাজার টাকা। ২০১৬ সালে হয় ১০ হাজার টাকা।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এত দিন মন্ত্রণালয় ইউএনওদের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার টাকা পাঠাত। ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে সেই টাকা জমা দিতেন। ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) সফটওয়্যারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে সরাসরি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভাতার টাকা যাচ্ছে। কারও সনদ জাল প্রমাণিত হলে বা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে ত্রুটি থাকলে তাঁদের নাম এমআইএসে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ ছাড়া ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর যাঁদের বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাসের কম ছিল, তাঁদের নাম এমআইএসে যুক্ত হয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা নেওয়া ১৩ হাজার ব্যক্তিকে চার মাসেও খুঁজে না পাওয়ার বিষয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গতকাল রোববার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, এ জন্য বিচার বিভাগীয় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। শুধু মন্ত্রণালয়কে এ জন্য দোষ না দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে যাঁরা এসব সনদ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন, জামুকার যাঁরা সুপারিশ করেছেন, মন্ত্রী বা সচিবদের মধ্যে যাঁরা ওই ব্যক্তিদের সনদ পাইয়ে দিতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। একজন মুক্তিযোদ্ধা বছরে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা পান, তাহলে ওই ১৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধা কত টাকা নিয়েছেন, তার হিসাব জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে মন্ত্রণালয়কে।’

এদিকে গত ৩ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকার খসড়া প্রকাশসংক্রান্ত একটি চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, মন্ত্রণালয় স্বীকৃত ৩৩ ধরনের প্রমাণকের মধ্যে যেকোনো একটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম থাকলে এমআইএসে নাম যুক্ত করা হয়েছে। মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সুবিধাভোগীদের তথ্যও যুক্ত করা হয়েছে এমআইএসে। যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম বা পরিচিতি বা মুক্তিযোদ্ধাসংক্রান্ত কোনো প্রমাণ বা ব্যাংক হিসাবে তথ্যগত কোনো ভুল থাকে, তবে তা ১৫ মার্চের মধ্যে সংশোধন করে নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশিত তালিকার মধ্যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম ও পিতার নামের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণকে নাম ও পিতার নামে মিল না থাকলে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।

দেশে বর্তমানে মোট বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৩৩ হাজার। তবে আইনি জটিলতার কারণে ভাতা পেতেন ১ লাখ ৯৩ হাজার। এর মধ্যে যে ১ লাখ ৮০ হাজারের নাম এমআইএসে যুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বিবেচনা নেওয়া হয়েছে লাল মুক্তিবার্তা, ‘ভারতীয় তালিকা’ ও ‘গেজেট’। নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণের জন্য ৩৩ ধরনের কাগজপত্র রয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামই একেক নথিতে একেক রকম। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রের নামই বিবেচনা নেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এত দিন মিথ্যা তথ্য দিয়ে টাকা নিয়েছেন, তাঁদের কাছে তা ফেরত চাওয়া হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ অনিয়ম করে থাকলে তাঁকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, নামের তালিকা এমআইএস সফটওয়্যারে যুক্ত করার পর নানা অনিয়ম বেরিয়ে আসছে।

২০ ঘণ্টা পরও ৪ জেলায় রেল যোগাযোগ বন্ধ, তদন্ত কমিটি গঠন

কুষ্টিয়া স্টেশনসংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলওয়ে ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার ২০ ঘণ্টা পরও কুষ্টিয়ার সঙ্গে খুলনা, রাজশাহী, গোয়ালন্দ ও ফরিদপুরের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

গোয়ালন্দ-পোড়াদহ রুটে ট্রেন চলাচল শনিবার বিকাল ৪টা নাগাদ স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়ার মিলপাড়া এলাকায় রেললাইনে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রলির সঙ্গে সংঘর্ষে লাইনচ্যুত হয় গমবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ট্রেনের লাইন দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশি জোনের একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে এসে লাইনচ্যুত পাঁচটি বগি উদ্ধারে কাজ শুরু করে।

সারারাত কাজ করে শনিবার সকাল পর্যন্ত তিনটি বগি রেললাইন থেকে সরাতে সক্ষম হয়েছে উদ্ধারকারী দল। বাকি দুটি সরিয়ে লাইন মেরামত করতে আরও ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানান কুষ্টিয়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার এম এ জামান।

এদিকে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলওয়ে ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রেলওয়ের পার্মানেন্ট ওয়ে ইন্সপেক্টর (পিডিবিআই) সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোহাম্মদ শাহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, একটি তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) আশীষ কুমার মণ্ডলকে। কমিটির অন্য চার সদস্য হচ্ছেন- পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল, পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এস এম রাজিব বিল্লাহ এবং পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্ট রেজওয়ান উর রহমান।

কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কুষ্টিয়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার এম এ জামানের অভিযোগ, বারবার বলার পরও শ্রমিকরা রেললাইন থেকে ট্রলি সরিয়ে না নেওয়ায় কুষ্টিয়া রেলস্টেশনসংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজে নিয়োজিত স্টেশনে কর্মরত কর্মচারী (লাইনম্যান) ইব্রাহীম বলেন, শ্রমিকদের বারবার ট্রলি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু শ্রমিকেরা ট্রলি সরিয়ে না নিয়ে উল্টো লাল নিশানা দিয়ে ট্রেন থামানোর জন্য বলেন। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেন ঢুকে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

পাকশী রেল বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীরবল মণ্ডল বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ শনিবার তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করবেন। রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী অন দ্যা স্পট তদন্ত রিপোর্ট নেওয়া হবে।

এদিকে এ দুর্ঘটনার পর থেকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী ও রাজশাহী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথে পাঁচটি ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

মির্জাপুরে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় লিজা আক্তার (১২) নামে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের সিটমামুদপুর গ্রাম থেকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত লিজা একই এলাকার মো. আব্দুল লতিফ মিয়ার মেয়ে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, পারিবারিক বিষয়ে ঝগড়া করে গলায় ফাঁস দিয়ে লিজা আত্মহত্যা করেছে।

মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক মো. ফয়েজ আহমেদ জানিয়েছেন, খবর পেয়ে নিহত ছাত্রী মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুলিশ কারও প্রতিপক্ষ নয়: আইজিপি

পুলিশ কারও প্রতিপক্ষ নয় বলে মন্তব্য করেছে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, পুলিশ জনগণের সেবক। জনগণের নিরাপত্তায় সব সময় তৎপর রয়েছে। তাহলে কেন সব সময় পুলিশকে প্রতিপক্ষ বানানো হয়? পুলিশ কারও প্রতিপক্ষ নয়।

সোমবার সকালে মিরপুর ১৪ নম্বর স্টাফ কলেজ অডিটোরিয়ামে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২১ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ক্লাবের সামনে এক পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে। তারপরও পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রেখে কাজ করছে। পুলিশকে পেটানোর ঘটনায় কোনও রিফ্লেকশন হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনও কথা বলেনি। যারা এদেশে বেশি বড় হয়ে এদেশের বুকে ছুরি মারতে চায় তাদের মুখে ছাই দিতে চায় শৃঙ্খলা বাহিনী।’

আইজিপি বেনজির আহমেদ আরও বলেন, ‘কোনও বিরোধী শক্তির ছোট্ট একটি অংশ রয়েছে। তা বোঝা যায়। সরকারের কোনও অর্জন কিংবা উন্নয়নে তাদের কিছু আসে যায় না।’

এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলায় ছাত্রদলের ১৩ নেতাকর্মীকে সোমবার ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

দরবার শরীফ মেলায় বাঁশি বাজানো নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩

কুমিল্লার লাকসাম কালিয়াপুর দরবার শরীফে ওরসে বসানো মেলাতে বাঁশি বাজানো কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৩ জন যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে উপজেলার মুদাফরগঞ্জ (দঃ) ইউনিয়নের কালিয়াপুর-হামিরাবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, কালিয়াপুর দরবার শরীফের ওরসকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় মেলা বসে। করোনা পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে মেলায় শত শত দোকান বসে। এতে হাজার হাজার লোকের সমাবেশ ঘটে। রাতে কয়েকজন যুবক মেলায় গিয়ে বাঁশি কিনে বাজাতে গেলে বাধা দেয় মেলায় আসা কয়েকজন যুবকরা।

এ নিয়ে তরুণ যুবকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়ে।খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর এলাকার ১০/১২ জন যুবক এসে তাদের ওপর  হামলা করে। এক পর্যায়ে পাশের দোকানে থাকা ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়ে হামিরাবাগ এলাকার মেম্বার বেলায়েতের ছেলে আব্দুর রহমান (২০), তাজুল ইসলামের ছেলে ইউসুফ (১৯) ও একই এলাকার ইসমাইল হোসেন হৃদয়কে (১৮) ছুরিকাঘাতসহ কয়েকজনকে আহত করা হয়।

গুরুতর আহত আব্দুর রহমানকে প্রথমে লাকসামে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বাকি আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

হামলায় আহত ইউসুফ মিয়া বলেন, মনোহরগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর এলাকার কামালের ছেলে বায়েজিদ, আবু তাহেরের ছেলে  ইসরাফিল ও মেলার দোকানি সাদেকসহ ১০-১২ জন যুবক আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।

বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মেলা অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে লাকসাম থানার ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, অনুমোদন ছাড়াই এ মেলা বসানো হয়েছে। ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

‘শিক্ষার্থীরা মেস ভাড়া করে আছেন, কষ্টে আছেন অনেকেই’

শিক্ষার্থীরা অনেকে টিউশনি করে পড়াশোনা করেন, অনেকে নিজ অর্থায়নে এখন হলের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় মেস ভাড়া করে আছেন, কষ্টে আছেন অনেকেই। আমরা তাদের এই কষ্টগুলো বুঝি।

বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখছি একটি চিহ্নিত মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য বারবারই অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। কখনও ভাস্কর্যের নামে আন্দোলন করছেন, কখনও বিদেশি একটি সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা নানান তথ্য প্রচার করছেন, সাজানো নাটক প্রচার করছেন। সেগুলোর সবকিছুতে বিফল হয়ে এখন আমাদের ছাত্রসমাজকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।

নানা সীমাবদ্ধতা স্বত্ত্বেও বৃহত্তর স্বার্থে এখন আন্দোলন না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের হাতেই আমরা আমাদের ভাষা আন্দোলন পেয়েছি, ভাষার অধিকার পেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি, গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছাত্রসমাজ অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। আজকে যখন বৈশ্বিক সংকট চলছে, সেই সময়ে শিক্ষাবান্ধব সরকার, বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকার সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা সকল উপাচার্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের এই করোনাসংক্রমণটি আবার ছড়িয়ে গিয়ে সারা বিশ্বে যেখানে সাফল্য অর্জন করেছে, সেই সাফল্য যেন ম্লান না হয়ে যায়। একটু কষ্ট হলেও সরকারের সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেবেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৭ কলেজের ক্ষেত্রে কেন আমরা ব্যতিক্রম করছি? আমরা একান্তই মানবিক কারণে। কারণ তারা তিন বছর পিছিয়ে আছে।

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে তাদেরকে পরীক্ষা দেবার (যেগুলো চলছিল, যেগুলো ঘোষিত আছে) সেগুলো যথারীতি চলবে-এই সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সারা দেশে আছে। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য মহোদয় এখানে আছেন। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ যে, তারা সম্পূর্ণ সেশনজটমুক্ত করেছেন।  সে কারণে আজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, তারা কোনো ধরনের আন্দোলনে যাবেন না এবং তারা তিন মাস পর পরীক্ষা দেবেন। তাদের মধ্যে কারো যদি বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে এক ধরনের অস্থিরতা ছিল।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ৪৩তম বিসিএসের আবেদনের একটা তারিখ দেয়া আছে। পরীক্ষারও একটা নির্ধারিত তারিখ ছিল। এখানে সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয়ও আছেন। ওনাদের সঙ্গেও আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি। ৪৩তম বিসিএসে আবেদনের সময়, পরীক্ষার সময় এবং এই কতদিন পরীক্ষা পেছানোর কারণে কারও যদি বয়সের সমস্যাও দেখা দেয়  সেই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থাটা সরকার করবে। এই সিদ্ধান্তও আমরা সেদিনই দিয়েছিলাম। কাজেই এই তিন মাস যদি পরীক্ষা না হয় স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য, সার্বিক নিরাপদের জন্য আমি মনে করি, বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সকল শিক্ষার্থীরা বিষয়টা বুঝবেন। আমি মনে করি তারা বৃহত্তর স্বার্থ বুঝেন, জাতীয় স্বার্থ বুঝেন, তারা সবাই সেটিকে মেনে নেবেন।

প্রথম ডোজের পর হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কমে ৯৪%

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার কার্যকারিতা স্পষ্ট হচ্ছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কমে ৯৪ শতাংশ। ফাইজার ও বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত টিকা এই ঝুঁকি কমায় ৮৫ শতাংশ। এই দুই টিকাই গুরুতর সংক্রমণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর।

এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা। গবেষণায় পুরো স্কটল্যান্ডের ৫৪ লাখ জনসংখ্যার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি যথাক্রমে ৯৪ ও ৮৫ শতাংশ কমিয়েছে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউশার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আজিজ শেখ ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় যে ফল পাওয়া গেছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী হওয়ার দারুণ কারণ হতে পারে।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, তিনি যে ফলাফলের কথা বলছেন, তা প্রাথমিক তথ্যনির্ভর। তবে আশার কথাও শুনিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত উৎসাহ পেয়েছি। টিকা যে কোভিড-১৯ সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে, এর জাতীয় প্রমাণ এখন আমাদের কাছে আছে।’

আজিজ শেখ বলেন, অন্য দেশগুলো এখন একই রকম দুই টিকা ও একই রকম কৌশল গ্রহণ করবে বলে আশা করছেন।
স্কটল্যান্ডে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণার জন্য গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে ১১ লাখ ৪ হাজার মানুষকে টিকা প্রয়োগ করা হয়। এর মধ্যে স্কটল্যান্ডের ২১ শতাংশ জনগণ টিকার প্রথম ডোজ নেন। এতে দেখা যায়, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে টিকা নেওয়ার চার সপ্তাহ পরে হাসপাতালে ভর্তি ৮১ শতাংশ কমে গেছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য দুটি টিকার ফলাফলই একত্র করে হিসাব ধরা হয়েছে।

স্কটল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জিম ম্যাকমেনামিন বলেন, ‘গবেষণায় যে ফল পাওয়া গেছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা এখন টিকা থেকে প্রত্যাশার পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেতে শুরু করেছি।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটও তৈরি করছে। আর সেরাম ইনস্টিটিউটের এই টিকা বাংলাদেশে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ পর্যন্ত তিনটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সবার আগে ফাইজারের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়। সর্বশেষ অনুমোদন পেয়েছে অক্সফোর্ডের টিকা। অনুমোদন পাওয়া অন্যটি হলো মার্কিন কোম্পানি মডার্নার উদ্ভাবিত করোনার টিকা।

অনলাইনে নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে ৩ বিয়ে, যুবক গ্রেফতার

বিভিন্ন নারীর সঙ্গে ভার্চুয়ালি সম্পর্ক গড়ে তুলে প্রতারণা করে বিয়ের কথা বলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মো. নাজমুল হাসান নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তার স্ত্রী পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তার এসব প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ করার পর তা তদন্ত করে দোষী প্রমানিত হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

অভিযোগপত্রে ওই নারী উল্লেখ করেন, তার স্বামী অনেক মেয়েকে এভাবে প্রতারিত করেছেন। কিন্তু লোকলজ্জায় কেউ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে তিনি জানান।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে অভিযোগটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি’র শ্যামপুর মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়। শ্যামপুর থানা পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে।

পরবর্তীতে থানায় ওই নারীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শ্যামপুর মডেল থানার ওসি মফিজুল আলম এবং এসআই দেবকুমার আচার্যের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা সাপেক্ষে ওই টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও নানা গোয়েন্দা কৌশল অবলম্বন করে অভিযুক্ত মো. নাজমুল হাসানকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।

কিন্তু, চতুর আসামি বারবার তার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। পুলিশও তার পিছু ছাড়েনি। অবশেষে ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার পৌর এলাকাধীন সয়াধানবাড়ি এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

আসামিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি ভার্চুয়াল রিলেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে প্রতারণামূলক অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনসহ ইতোমধ্যে তিনটি বিয়ে করেছে বলে স্বীকার করেন।

সিরাজগঞ্জের যে স্থান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেখানেও তিনি এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন বলে স্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা যুগান্তরকে জানিয়েছেন।

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা : হাই কোর্টের রায় আজ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দুই দশক আগে বোমা পুঁতে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আজ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দেবেন হাইকোর্ট। গত ১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিলের শুনানি শেষে রায়ের এ তারিখ ঘোষণা করেন।

মামলা সূত্রে আরো জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যারয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন কারাগারে এবং ১১ জন পলাতক। ১০ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই বছরের ২৪ আগস্ট রায়ের সব নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

এরপর তৎকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরিভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।

সেইসঙ্গে মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সারোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেওয়া হয়।

মামলা সূত্রে আরো জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যারয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ১৩ জন কারাগারে এবং ১১ জন পলাতক। ১০ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

সরকার ইচ্ছামতো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরি করছে: মোশাররফ

সরকার নিজেদের সুবিধামতো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শুক্রবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তাদের ইচ্ছামতো লেখার চেষ্টা করছে। আজকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং মুক্তিযুদ্ধের যে মূল ইতিহাস তা বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা এবং স্বাধীনতার জন্য আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, সেই ক্ষেত্রগুলোতে কারা কী অবদান রেখেছে, কারা কী ক্ষতি করেছে সেটা সম্পর্কেও বর্তমান প্রজন্মকে ভুল তথ্য দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধে মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক সরকার, গণতান্ত্রিক পরিবেশ। আজকে গণতন্ত্র দেশে নেই। বাংলাদেশে বারবার গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, লুটেরা অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক অবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, অন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ন্যায়-অন্যায়ের কাছে পরাজিত হয়েছে।

নতুন প্রজন্মের কাছে এসব বিষয় তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি সত্যিকার অর্থে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের দল। সেজন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সারাবছর উদযাপন করতে একটি ক্যালেন্ডার আমরা তৈরি করব। এর খসড়া আমরা করেছি।

বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালনে সব উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানান খন্দকার মোশাররফ। দেশের বাইরে প্রবাসেও দিবসটি পালনে অঞ্চল ভিত্তিক কমিটি গঠন করার কথাও জানান তিনি।

জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার, আব্দুল হাই শিকদার, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন,মজিবুর রহমান সারোয়ার, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাখাওয়াত হাসান জীবন, শ্যামা ওবায়েদ, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, আমিনুল হক, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শরীফুল আলম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আমিরুল ইসলাম আলিম, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আরিফুল হক, জহির উদ্দিন স্বপন ও এবিএম আবদুস সাত্তার প্রমুখ।