Blog

আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়বে না

আগামীকাল ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদেরর আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সময়ের পর আর রিটার্ন দাখিলের জন্য সময় বাড়ানো হবে না।

রবিবার সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এ কথা জানান।

করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ বিবেচনায় সময় বাড়ানো হবে কিনা – এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেউ ৩০ তারিখের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে আইনি উপায়ে পরবর্তীতে জমা দিতে ( জরিমানা দিয়ে) পারবেন।

অতীতে এই সময়ে আয়কর মেলা আয়োজন হলেও এবার করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় মেলা হচ্ছে না। এর বদলে আয়কর অফিসগুলোতে সবধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কাঠগড়ায় শামি, চাহাল, বুমরাহ!

অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ শেষ। দুটোর একটিতেও জয়ের দেখা পায়নি ভারত। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে অজিরা। উভয় ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়া গড়েছে রানের পাহাড়। এর দায় দলের বোলারদের দিয়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তার মতে, নিজেদের কাজটা ভালোভাবে করতে পারেনি বোলাররা।

ফর্মে থাকা স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ, গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েলদের সামনে একরকম মুখ থুবড়েই পড়েছে ভারতীয় বোলারদের পার্ফম্যান্স। অজি ব্যাটসম্যানরা যতটা উজ্জ্বল ঠিক ততোটাই মলিন বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, নবদ্বীপ শাইনি, ইয়ুজবেন্দ্র চাহালদের বোলিং। দীর্ঘ বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে একরকম ধোলাই খেতে হচ্ছে তাদের।

যার কারণে ভারতীয় বোলারদের ওপর বিরক্ত কোহলি। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমরা দাঁড়াতে পারিনি। ওরা আমাদের তুলনায় প্রত্যেকটি বিভাগে ভালো করেছে। বোলাররা ঠিক জায়াগায় বল করতে পারেনি। এটিই কাল হয়েছে। সেই সুযোগ লুফে নিয়েছে অজি ব্যাটসম্যানরা।

নিয়োগ ১০ বছর আগে, উন্নতি নেই কর্মক্ষেত্রে

‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’—এই নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ করতে ১০ বছর আগে অ্যাডহক ভিত্তিতে দুই দফায় ৪ হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসককে (সহকারী সার্জন) নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। এরপর গড়িয়েছে অনেক সময়, কিন্তু পরিবর্তন আসেনি এসব চিকিৎসকের ভাগ্যে। এই চিকিৎসকেরা ২০১০ সালে যে বেতনে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেই স্কেলে বেতন পাচ্ছেন এখনো।

এই দীর্ঘ সময়ে তাঁদের চাকরি ক্যাডারভুক্ত করা হয়নি, হয়নি পদোন্নতিও। হতাশ হয়ে কেউ কেউ চলে গেছেন অন্য পেশায়।

এসব অনেক দিনের সমস্যা। আমরা এটা দূর করার চেষ্টা করছি। সমাধান হবে। তবে একটু সময় প্রয়োজন

মো. আবদুল মান্নান , স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব

এই চিকিৎসকদের কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, বছরের পর বছর ধরে একই পদে থাকায় তাঁরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। চাকরির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ হওয়ার পরও বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকেরা পদোন্নতি পেয়ে তাঁদের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। কয়েকজন জানিয়েছেন, তাঁরা এফসিপিএস, এমডি, এমএস, এফআরসিএসের মতো উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেও কর্মক্ষেত্রে এগোতে পারেননি।

৪ হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে এখন কর্মরত আছেন ১ হাজার ৯৮৬ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অ্যাডহক কর্মকর্তাদের ক্যাডারভুক্ত করার বিষয়ে একটি প্রস্তাব গত সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আর কোনো বাধা থাকবে না।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব অনেক দিনের সমস্যা। আমরা এটা দূর করার চেষ্টা করছি। সমাধান হবে। তবে একটু সময় প্রয়োজন।’

নিয়োগ পেয়েছিলেন ৪ হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসক। এখন চাকরিতে আছেন ১ হাজার ৯৮৬ জন।

প্রেক্ষাপট

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইউনিয়ন পর্যায়ের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক–সংকট ছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র থেকে জানা গেছে, তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিলের এক সভায় জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসকের পদ শূন্য। এত বিপুলসংখ্যক পদ খালি থাকায় জনগণের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। সে সময় জনপ্রতিনিধিরাও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান। অনেকেই সংসদ অধিবেশনে নতুন চিকিৎসক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৮ জুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এবং একই বছরের ২৮ জুন তৎকালীন জনপ্রশাসন উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের কাছে আধা সরকারিপত্র পাঠান। সেখানে তিনি চিকিৎসক–সংকটের কথা উল্লেখ করে সংক্ষিপ্ত বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ৪ হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসক নিয়োগের সুপারিশ করেন। কিন্তু সরকারি কর্ম কমিশন বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন নিয়োগের বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করে। পরে অ্যাডহক ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ২০১০ ও ২০১১ সালে ওই সংখ্যক চিকিৎসককে নিয়োগ দেওয়া হয়।

হতাশা

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিয়োগ দেওয়ার পর এসব চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছিল নিজ জেলা কিংবা আশপাশের উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এসব চিকিৎসকের ভাষ্য, ২০১০-১১ সালে তাঁরা মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু তাঁদের ‘ত্যাগের’ মূল্যায়ন করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে তাঁদের অনেকেই ‘পড়াশোনাসহ নানা কারণে’ ঢাকায় চলে আসেন।

অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া অন্তত ৫০ জন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। চাকরিবিধি এবং পে স্কেল অনুযায়ী তাঁদের সিলেকশন গ্রেড দেওয়া হয়নি।

চিকিৎসকেরা জানান, তাঁদের মধ্যে অন্তত এক হাজার চিকিৎসক উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত। প্রায় ২০ জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিভিন্ন বিভাগে কাজ করছেন। ৭০ জন সাফল্যের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। গত ৩১ জুন তাঁদের নিয়োগের ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু চাকরি নিয়মিত হলেও ক্যাডারভুক্ত না হওয়ায় উল্লেখযোগ্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। তাঁদের পরে যোগ দেওয়া ৩৩তম বিসিএসের চিকিৎসকেরা ষষ্ঠ গ্রেড পেয়েছেন। আর তাঁরা আছেন নবম গ্রেডেই। অনেকের বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।

চিকিৎসকদের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী অ্যাডহক চিকিৎসকদের ক্যাডারভুক্ত করার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিকে বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের মার্চের মধ্যে একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাঁরা এখনো কোনো অগ্রগতি দেখছেন না।

আমাদের অনেকেই ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু আমাদের ভারমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার

মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা, সাভারের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা

অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের একজন জাতীয় পুষ্টিসেবার উপব্যবস্থাপক নন্দলাল সূত্রধর প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকার পরও তাঁদের স্থায়ী না করা ও পদোন্নতি না দেওয়া দুঃখজনক। সাভারের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা বলেন, ‘আমাদের অনেকেই ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু আমাদের ভারমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।’

অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের ক্যাডারভুক্ত ও পদোন্নতির জন্য অনেক দিন ধরে কাজ করছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শারমিন আক্তার জাহান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চাকরির মেয়াদ প্রায় ১০ বছর। ক্যাডারভুক্ত না হওয়ায় তাঁরা সবাই প্রারম্ভিক স্কেলে বেতন তুলছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁরা কোনো পদোন্নতি পাননি।

শারমিন আক্তার জাহান জানান, ক্যাডার–বহির্ভূত অস্থায়ী কর্মকর্তাদের ক্যাডারভুক্ত করার বিষয়ে একটি প্রস্তাব গত সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আর বাধা থাকবে না।

একজন চিকিৎসকের ১০ বছর পদোন্নতি না হলে তাঁর কি চাকরিতে আগ্রহ থাকে? স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে আমরা বারবার অনুরোধ করেছি সমস্যাটি সমাধান করতে

মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী , বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব

‘বারবার অনুরোধ করেছি’

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকারই তাঁদের নিয়োগ দিয়েছিল। তাঁরা তো জোর করে চাকরি নেননি। সে সময় তাঁরা মাঠপর্যায়ে যে সেবা দিয়েছেন, তা সবারই জানা। তখন বলা হয়েছিল, তাঁদের ক্যাডারভুক্ত করা হবে। আর পদোন্নতি তো নিয়মতান্ত্রিকভাবে হওয়ার কথা। এখন তাহলে কেন তাঁদের পদোন্নতি আটকে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘একজন চিকিৎসকের ১০ বছর পদোন্নতি না হলে তাঁর কি চাকরিতে আগ্রহ থাকে? স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে আমরা বারবার অনুরোধ করেছি সমস্যাটি সমাধান করতে।’

ভুলে ভরা জাতীয় পরিচয়পত্র

জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্ষেপে এনআইডি কার্ড হলো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক নথি, যা বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া যেকোনো মানুষ পাওয়ার অধিকারী। ২০১৬ সালের আগের জাতীয় পরিচয়পত্রে শুধু ব্যক্তির নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্মতারিখ, আইডি নম্বর, ছবি ও স্বাক্ষর উল্লেখ ছিল। ২০১৬ সালে দেওয়া স্মার্ট কার্ডে একটি ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট কার্ড (আইসিসি) সংযুক্ত আছে, যা চিপ কার্ড নামেও পরিচিত। স্মার্ট কার্ডে এ চিপ কার্ড মেশিনের সাহায্যে রিড করা যায়। এই স্মার্ট কার্ডে নাগরিকের সব তথ্য সংরক্ষিত আছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের এনআইডি বিভাগ নাগরিকদের পরিচয়পত্র সরবরাহ করে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য যদিও ছিল নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি। পরবর্তীকালে চাকরি, জমি রেজিস্ট্রেশন, পাসপোর্ট তৈরি, ব্যাংক হিসাব খোলা, মোবাইল সিম কার্ড কেনা, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ, রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাজেই এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক। স্বাভাবিকভাবে আশা করা গিয়েছিল, পরিচয়পত্রটি নির্ভুল ও ত্রুটিমুক্ত হবে। আমাদের রাষ্ট্রীয় সেবার অন্যান্য ক্ষেত্রে যেমন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দায়সারা কাজ করেন, এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

প্রথম আলোর আক্কেলপুর প্রতিনিধির পাঠানো খবরে একটি পরিবারের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তা অনেক পরিবারের বা নাগরিকের ক্ষেত্রে ঘটেছে। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বালাইট পূর্ব পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোছলিম উদ্দীনের প্রকৃত বয়স ৭৫ বছরের বেশি। জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর জন্মতারিখ লেখা আছে ২৮ অক্টোবর ১৯৫৯। তাঁর স্ত্রী মোছা. ছুরতন বেগমের জন্ম ২৪ এপ্রিল ১৯৬২, যা তাঁর প্রকৃত বয়সের চেয়ে অনেক কম। সবচেয়ে হাস্যকর যে তাঁদের বড় সন্তান সোবহানের বয়স দেখানো হয়েছে ১ জুন ১৯৬৩। বাবার চেয়ে চার বছর ও মায়ের চেয়ে ১০ মাস কম। এই বৃদ্ধ বয়সে মোছলিম উদ্দীন ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করলেও সরকারের কাছে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে পারছেন না জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কম লেখার কারণে। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় একজন মহিলার স্বামীর নামের স্থলে বাবার নাম দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কেবল কালাই বা ধুনট উপজেলা নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় খোঁজ নিলে লাখ লাখ ভুলে ভরা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যাবে। পরিচয়পত্রের ভুলের কারণে নাগরিকেরা পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেকে রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে, বয়স সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হলে বিয়ের কাবিননামাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু মোছলিম উদ্দীন ও ছুরতন বেগমের মতো বয়সী মানুষের অনেকের কাবিননামাই নেই। তাঁরা কেন প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন?

নির্বাচন কমিশনের পক্ষে বর্তমান লোকবল দিয়ে নির্ভুল পরিচয়পত্র দেওয়া সম্ভব কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে দায়িত্বটি অন্য কোনো সংস্থার কাছে ন্যস্ত করার কথাও উঠেছিল। ভুলে ভরা জাতীয় পরিচয়পত্রগুলো অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন। জাতীয়ভাবে নাগরিকদের একটি নির্ভুল ডেটাবেইস বা উপাত্ত ভিত্তি তৈরি হলে কাজটি সহজ হতো।

পতিতালয়ে বিক্রির প্রস্তাবে অস্বীকৃতি, গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা

যশোরের অভয়নগর থানার শোভনারা এলাকার অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ হিরা বেগমকে  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ঢোকানোর সময় মৃত্যু হয়। ২ ডিসেম্বর, বুধবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে তাকে ঢামেক’এ নেয়া হয়। তার শরীরের এক-তৃতীয়াংশ আগুনে দগ্ধ হয়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে টানা পাঁচদিন অসহনীয় যন্ত্রণায় ছটফট করেছেন। হৃদয়বানদের দেয়া আর্থিক সহায়তায় উন্নত চিকিৎসার জন্যে গত রাতে ঢাকায় নেয়া হয়েছিল তাকে।

জানা গেছে, যশোরের অভয়নগর থানার মঠপাড়া এলাকার মো. খোকন সরদারের মেয়ের কথিত স্বামী বিল্লাল শেখের দেয়া আগুনে নিভে গেছে হিরা বেগমের (৩৩) প্রাণ। পাশ্ববর্তী দেশের পতিতালয়ে বিক্রির প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন দেয় বিল্লাল শেখ। আর সে আগুনেই জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন অগ্নিদগ্ধ হিরা।

খুমেক চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হিরা বেগমের শরীরের এক-তৃতীয়াংশ দগ্ধ হয়েছে। শ্বাসনালীসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ অকেজোর পথে। উন্নত চিকিৎসার জন্যে প্রথমেই তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।

অগিদগ্ধ হিরা বেগমের মা মাজিদা বেগম জানিয়েছেন, যশোরের অভয়নগরের শোভনারা এলাকার আ. রশিদের ছেলে কবির শেখের সাথে পারিবারে সাধ্যমতো আয়োজনে বিয়ে হয়েছিল তাদের একমাত্র মেয়ে হিরা বেগমের। মুদি দোকানি কবির শেখের নতুন সংসার বেশ ভালোই চলছিল সুখে-শান্তিতে। এরমধ্যে বাদসাধে বাদামওয়ালা জাকির হোসেন। প্রথম স্বামী কবির শেখের সংসার ছেড়ে জাকির হোসেনের হাত ধরে নতুন করে সংসার সাজায় হিরা বেগম। এতে প্রচণ্ড কষ্ট পেয়ে পিতা-মাতা ও ভাই হিরা বেগমের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

তিনি আরো জানান, এর মাস ছয়েক পর অভয়নগরে শিহড়ী এলাকার আক্কাস শেখের ছেলে বিল্লাল শেখের সাথে পরিচয় হয় হিরার। বিল্লাল মোটা অঙ্কের অর্থের লোভ দিয়ে তাকে ভারতে নিতে চায়। কিন্তু কি কাজ করতে হবে সেটা জানতে চায় হিরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রায় মারপিট করতো বিল্লাল। একপর্যায়ে ভারতের পতিতালয়ে হিরাকে বিক্রি করার পরিকল্পনা করে বিল্লাল। এ পরিকল্পনা গোপনে জেনে যায় হিরা। ফলে ভারতে যেতে রাজি হয়নি তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হিরা বেগমের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বিল্লাল শেখ।

গত ২৬ নভেম্বরের এ ঘটনার পর হিরা বেগমের মা মাজিদা বেগমকে মোবাইলে আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি জানায় প্রতিবেশীরা। প্রথমে যাবে না বলে মুখ ঘুরিয়ে রাখলেও পরে একমাত্র মেয়েকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোরের হাসপাতালে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

মৃত হিরা বেগমের ভাই ইয়াছিন সরদার বলেন, আজ বুধবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ঢোকানোর সময় হিরার মৃত্যু হয়েছে। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত বলে নিশ্চিত করে। আমার মা সাথেই আছেন, কিন্তু তিনি এখনো জানেন না যে হিরা আর নেই।

তিনি আরো বলেন, আগুনে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় গতকাল ০১ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার অভয়নগর থানায় বিল্লাল শেখ, তার পিতা আক্কাস শেখ ও বিল্লালের মাকে আসামি করে মামলা করেছি।

অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।

শীতের শুরুতেই হাসপাতালে ভিড়

ঢাকায় কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা জোগাড় করতে রোগীর স্বজনদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হাসপাতালগুলোর প্রায় সব আইসিইউ শয্যাই ভর্তি। সাধারণ শয্যাগুলোতেও রোগী বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় করোনার জন্য নির্ধারিত সরকারি ব্যবস্থাপনার ৯টি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১১৩টি। গতকাল মঙ্গলবার ৯৭টি শয্যায় রোগী ভর্তি ছিল। ফাঁকা ছিল ১৭টি শয্যা, অর্থাৎ ৮৬ শতাংশের বেশি আইসিইউতে রোগী ভর্তি ছিল।

করোনার জন্য নির্ধারিত চারটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে জটিল করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় অনেক রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

করোনার জন্য নির্ধারিত যে হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আবার চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। জটিল রোগীদের জন্য আইসিইউ শয্যা বাড়াতে সরকার চেষ্টা করছে। যেখানে সুযোগ পাচ্ছে সেখানেই আইসিইউর ব্যবস্থা করা হচ্ছে

হাবিবুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (এমআইএস)

শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে সরকার। এরই মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্ত রোগীর হার ঊর্ধ্বমুখী। গত ১৬ নভেম্বর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দৈনিক ২ হাজারের ওপরে থাকছে। একই সঙ্গে মৃত্যুও বাড়ছে।

শ্বাসতন্ত্রের রোগ কোভিড-১৯-এর জটিল রোগীদের জন্য আইসিইউ ও কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়ার সুবিধা বা ভেন্টিলেশন জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, আক্রান্তদের ৪০ শতাংশের উপসর্গ থাকে মৃদু। মাঝারি মাত্রার উপসর্গ থাকে ৪০ শতাংশের। তীব্র উপসর্গ থাকে ১৫ শতাংশের। আর জটিল পরিস্থিতি দেখা যায় বাকি ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে। তীব্র উপসর্গ ও জটিল রোগীদের প্রায় সবার এবং মাঝারি উপসর্গ রয়েছে এমন অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। জটিল প্রায় সব রোগীর আইসিইউ শয্যার পাশাপাশি ভেন্টিলেটর দরকার হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (এমআইএস) হাবিবুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, করোনার জন্য নির্ধারিত যে হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আবার চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। জটিল রোগীদের জন্য আইসিইউ শয্যা বাড়াতে সরকার চেষ্টা করছে। যেখানে সুযোগ পাচ্ছে সেখানেই আইসিইউর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ঢাকায় করোনার জন্য নির্ধারিত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের কোনো আইসিইউ শয্যাই গতকাল ফাঁকা ছিল না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি আইসিইউ শয্যা ফাঁকা ছিল। এ ছাড়া রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫টি শয্যার ১১টিতে, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের ১৬টি শয্যার ১০টিতে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আইসিইউ শয্যার ১৪টিতেই রোগী ভর্তি ছিল।

সরকারি কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছিলাম। কোনো হাসপাতালে আইসিইউ ফাঁকা নেই। বাধ্য হয়ে মাকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে

মেহেদী হাসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউর বিভাগীয় প্রধান শাহজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কুর্মিটোলা হাসপাতালের ১০টি আইসিইউতে সব সময় রোগী ভর্তি থাকছে। একটা শয্যার জন্য একাধিক রোগী অপেক্ষায় থাকছে। ঢাকার বাইরে থেকে করোনার জটিল রোগীদের ঢাকায় পাঠানোর কারণে আইসিইউগুলোতে রোগীর চাপ বেশি। আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় অনেক জটিল রোগীকে অন্য হাসপাতালেও পাঠাতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের মা রহমত আরা এখন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। মেহেদী বলেন, ‘সরকারি কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছিলাম। কোনো হাসপাতালে আইসিইউ ফাঁকা নেই। বাধ্য হয়ে মাকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।’

অবশ্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত আইসিইউ শয্যা ফাঁকা থাকছে কম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় করোনা রোগীদের জন্য নয়টি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউ রয়েছে ২০৩টি। এর মধ্যে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল ১২৯টি শয্যায়। অবশ্য তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা ফাঁকা ছিল ৪৩টি। এই হাসপাতাল বাদে অন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই বললেই চলে।

রাজধানীর শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১২টি আইসিইউ সুবিধাসহ ৪২ শয্যার করোনা ইউনিট রয়েছে। গতকাল এই হাসপাতালের আইসিইউ এবং সাধারণ কোনো শয্যা ফাঁকা ছিল না। হাসপাতালের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অধিকাংশ সময় সব শয্যাতে রোগী থাকছে। বিশেষ করে আইসিইউ ফাঁকা থাকছেই না।

ঢাকার হাসপাতালগুলোতে জটিল করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আইসিইউ শয্যা জোগাড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সাধারণ শয্যাতেও রোগী বাড়ছে

করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ঢাকার নয়টি সরকারি হাসপাতালে সাধারণ শয্যাতেও ভর্তি রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। একসময় সাধারণ শয্যার ৭০ শতাংশের বেশি শয্যা ফাঁকা থাকত। অথচ গতকাল ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোর ৭৫ শতাংশ শয্যায় রোগী ভর্তি ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢাকায় সরকারি হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা রয়েছে ২ হাজার ৩৯৭টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৯১টি শয্যায় গতকাল রোগী ভর্তি ছিল। করোনার জন্য নির্ধারিত নয়টি ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি বেড়েছে।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনার জন্য সাধারণ শয্যা রয়েছে ২৭৫টি। গতকাল এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ৩৫২ জন। অর্থাৎ ধারণক্ষমতার চেয়েও ৭৭ জন রোগী বেশি ভর্তি ছিল এই হাসপাতালে। এর আগে গত সোমবার ধারণক্ষমতার চেয়ে ৬৬ জন বেশি রোগী ভর্তি ছিল।

আইসিইউ শয্যা ফাঁকা থাকছে না, সাধারণ শয্যাতেও রোগী ভর্তি থাকছে। দেশে আবার করোনা রোগী বাড়তে শুরু করেছে, এটি তারই ইঙ্গিত। এত দিনেও আইসিইউ শয্যা বাড়ানো সম্ভব হয়নি, এটি দুঃখজনক। সরকার করোনার জন্য নির্ধারিত যেসব হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছিল, সেগুলো আবার দ্রুত চালু করতে হবে

আবু জামিল ফয়সাল, জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য

ঢাকার বাইরে রোগীর চাপ কম

করোনার চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহর বাদে সারা দেশে এখন সাধারণ শয্যা আছে ৭ হাজার ১৬৪টি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এসব হাসপাতালে গতকাল ভর্তি ছিলেন ৫৫৬ জন। খালি ছিল ৬ হাজার ৬০৮টি শয্যা। অর্থাৎ ৯২ শতাংশ শয্যা খালি পড়ে ছিল। আবার নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রয়েছে ২১৯টি। গতকাল আইসিইউতে ছিলেন ৮৩ জন। অর্থাৎ আইসিইউর ৬২ শতাংশ শয্যা ফাঁকা ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৮৩ হাজার ২২৪ জন আর মারা গেছেন ৬ হাজার ৬৭৫ জন। চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৭৭ হাজার ৩২৬ জন।

জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, আইসিইউ শয্যা ফাঁকা থাকছে না, সাধারণ শয্যাতেও রোগী ভর্তি থাকছে। দেশে আবার করোনা রোগী বাড়তে শুরু করেছে, এটি তারই ইঙ্গিত। এত দিনেও আইসিইউ শয্যা বাড়ানো সম্ভব হয়নি, এটি দুঃখজনক। সরকার করোনার জন্য নির্ধারিত যেসব হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছিল, সেগুলো আবার দ্রুত চালু করতে হবে।

এবার অক্সফোর্ডের টিকার সুখবর

একদিন পার হতেই আরেক সুখবর করোনাভাইরাস টিকায়। এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই স্বস্তির খবর। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তাদের তৈরি টিকা বয়স্কদের শরীরেও সিদ্ধহস্ত। রোগটি প্রতিরোধে খুব ভালো কাজ করে।

অক্সফোর্ড বলছে, তাদের হাতে এসেছে সাম্প্রতিকালের সমীক্ষার তথ্য। যাতে দেখা গেছে, প্রবীণদের ক্ষেত্রেও প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সিদ্ধহস্ত এই টিকা। খবর বিবিসি ও স্কাই নিউজের

বৃহস্পতিবার ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকি বয়স্কদের। সেই শ্রেণির মানুষকে টিকা দিয়ে দেখা গেছে, তাদের শরীরেও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিচ্ছে এই টিকা। দ্বিতীয় ধাপে মোট ৫৬০ জন প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। তাতেই এই ফলাফল দেখা গেছে।

তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগামী কয়েক সপ্তাহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের শেষ পর্যায়ের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন গবেষকরা। ওই ফলের ওপরই নির্ভর করবে উৎপাদনের অনুমোদন। অক্সফোর্ডের এই টিকার লাইসেন্স আছে বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার নামে।

এদিকে, ফাইজার-বায়োএনটেক জোট ও মডার্নার তৈরি টিকা দুটিও ট্রায়ালের শেষ লগ্নে। এরমধ্যে বুধবার ফাইজার দাবি করে, তাদের তৈরি টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর। এরমধ্যে বয়স্কদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যাদের বয়স ৬৫ এর ঊর্ধ্বে, তাদের কাজ করবে ৯৪ শতাংশ।

এর আগে মডার্নাও দাবি করে নিজেদের তৈরি টিকা ৯৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ কার্যকর।

করোনাভাইরাস মহামারিতে আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছেই। মৃত্যুও বাড়ছে। এরমধ্যেই এগিয়ে চলছে টিকা উদ্ভাবন ও ট্রায়াল গবেষণা। বিশ্বজুড়ে ১৪০টিরও বেশি গবেষণার কাজ চললেও মাত্র কয়েকটি চূড়ান্ত পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মীসভায় ছাত্রলীগের হামলা

ঝালকাঠীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী সভায় হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এতে ছাত্র অধিকার পরিষদের তিন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের বরিশাল জেলা সভাপতি রণি খন্দকার জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে তারা ঝালকাঠী শহরের ইকোপার্কে কর্মীসভা ও মাস্কবিতরণ কর্মসূচি শুরু করছিলেন। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমের নেতৃত্বে একদল তরুণ লাঠিসোটা নিয়ে এসে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মীদের পেটাতে শুরু করে। এতে সভা পণ্ড হয়ে যায়।

তিনি জানান, হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী ফয়সাল আহমেদ, আবু সৈয়দ মুসা ও রায়হান আহত হয়েছেন। তিনজনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রণি খন্দকার এও অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলে কয়েকজন পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন।

ঝালকাঠী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ইকোপার্কে একটি হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু সেখানে হামলাকারী এবং সভা আয়োজনকারী কাউকেই পায়নি।

বাস পোড়ানো সরকারি এজেন্টদের নাশকতা: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজধানীতে বাস পোড়ানোর ঘটনা সরকারি এজেন্টদের নাশকতা। সরকারের একটা অংশ আছে যারা বিভিন্নভাবে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে। যারা সরকারের এজেন্টস স্যাবোটাস নামে পরিচিত। বিএনপির চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই তারা এ কাজ করেছে। এর আগেও এভাবে বিএনপিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু বিএনপি এ রাজনীতি করে না। এই ধরনের ঘটনার তীব্রভাষায় নিন্দা করছি। এই দুষ্কৃতিকারীরা যারাই হোক শাস্তি হওয়া দরকার।

শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এসব বলেন।

বিএনপিকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়েরের ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা, এটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এর নিন্দা করছি। আমরা যারা রাজনীতি করি তারা সবসময় শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করি। এগুলো কখন হয়- যখন দেশে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস থাকে না। আপনি একটা মিছিল করতে পারবেন না, কোথাও গিয়ে সভা করতে পারবেন না- এসব অনেকদিন ধরে হয়ে আসছে। যার ফলে অনেক সময় এই ধরনের যারা দুষ্কৃতিকারী তারা এই সুযোগগুলো নিয়ে এসব ঘটায়।’

তিনি বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুই বছর জেলে ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে। এরকম একটা কঠিন সময়ে দলের ঐক্য অটুট আছে। এখনো দলের মধ্যে কোনো ভাগ হয়নি। আমাদের দল চলে যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে। প্রতি শনিবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এই বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিই। এই কঠিন সময়ে বিএনপি যে ভূমিকা পালন করছে তা যথেষ্ট সঠিক।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপির এখন একমাত্র লক্ষ্য দলনিরপেক্ষ সরকার। এটাই তাদের একমাত্র রাজনৈতিক এজেন্ডা। দেশে প্রকৃত জনগণের সরকার গঠন করার জন্যে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন তৈরি করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এটা না হলে কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, মানবাধিকার কোনটার সমাধান হবে না।’

খালেদা জিয়া রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া মানসিকভাবে সক্রিয় আছেন। তিনি সবসময়ে আমাদের হৃদয়ে আছেন। তিনি রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় প্রভাব নিয়ে আছেন। খালেদা জিয়া কখনো চলে যাননি এবং যাবেন না। দেশের মানুষের অত্যন্ত গভীরে তার অস্তিত্ব রয়েছে। তার সুস্থতার জন্য এখনো গ্রামের অনেকে রোজা রাখেন। তাই তিনি রাজনীতিতে আছেন এবং থাকবেন, অবশ্যই সক্রিয় হবেন। গুলশানে নিজের বাসায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল আছে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য অন্তরায়। আসলে প্রধান অন্তরায় তো তারা। ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছিলেন তারা। ১৯৭২ সালে তারা যে সংবিধান তৈরি করেছিলেন সেই সংবিধান তারা পরিবর্তন করে মানুষের সমস্ত অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছেন। এটাই বাস্তবতা। এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টসহ একেকটা আইন তৈরি করেছে- সেগুলোর একটাও গণতন্ত্রের পক্ষের আইন না।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন এখন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বললেন- এই কমিশন এতো ভালো যে, তাদের কাছ থেকে আমেরিকার শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। এরকম হাস্যকর কথা একজন সিইসির কাছ থেকে আসতে পারে এটা কল্পনাও করতে পারি না। এর থেকে বোঝা যায়, আমাদের গণতন্ত্রের অবস্থা কোথায়, নির্বাচনের ব্যবস্থা কোথায়, রাষ্ট্র কিভাবে চলছে।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপি মহাসচিবকে রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্রেস্ট উপহার দেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

গির্জায় হামলাকারী ‘কয়েকদিন আগে তিউনিসিয়া থেকে ফ্রান্সে আসেন’

নিস শহরের একটি গির্জায় দুই নারীসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা ব্যক্তি কয়েকদিন আগে তিউনিসিয়া থেকে ফ্রান্সে এসেছিলেন।

ফ্রান্সের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ২১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ইতালির রেডক্রসের কাগজ উদ্ধার করা হয়েছে। গত মাসে এক অভিবাসীবাহী নৌকায় ইতালির ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে আসার পরে ওই কাগজটি তাকে দেওয়া হয়েছিল।

পুলিশ তাকে গুলি করায় তিনি গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ফ্রান্সের নিস শহরের নটরডেম গির্জায় বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়ে তিনজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই ঘটনাকে ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তিনি জানান, গির্জা এবং স্কুলের মতো জনসমাগম স্থানগুলোতে সুরক্ষার জন্য সৈন্য সংখ্যা তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে সাত হাজার করা হবে। দেশটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারে ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর পুলিশ হামলাকারীকে গুলি করে। সে সময় হামলাকারী ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ফ্রান্সের সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটররা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।

পুলিশ সূত্র বলছে, হামলাকারীর নাম ব্রাহিম আউইসাউই। তার কাছ থেকে একটি কোরআন, দুটি টেলিফোন এবং একটি ১২ ইঞ্চি ছুরি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধান সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটর জ্যঁ-ফ্রাসোয়া রিকার্ড।

তিনি বলেন, ‘আমরা হামলাকারীর একটি ব্যাগও পেয়েছি। এই ব্যাগের পাশে দুটি ছুরি ছিল, যা আক্রমণে ব্যবহৃত হয়নি।’