কিভাবে করোনার মিউটেশন, কিভাবে ধরা পড়লো

করোনা মহামারির শুরু থেকেই বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির জেনেটিক গঠনে পরিবর্তন আসে কিনা- তার ওপর চোখ রাখছিলেন। সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা ধরন পরিবর্তন হয়। ভাইরাস পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। প্রতি মাসে সাধারণত এক বা দুটি পরিবর্তন হয়ে থাকে।

মানবদেহে রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবের বিবর্তন বিশেষজ্ঞ ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ড. লুসি ভ্যান ডর্প বলেন, ‘বেশির ভাগ সময়ই ভাইরাসের পরিবর্তনগুলো গুরুত্বহীন, খুব বিরল দু-একটি ক্ষেত্র ছাড়া এটা ক্ষতিকর কিছু নয়। সার্স-কোভের মতো জেনোমে আমরা যে মিউটেশনগুলো দেখেছি তার বেশির ভাগই ভাইরাসটির আচরণে কোন পরিবর্তন আনে না।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এটা অন্তত ১৭ বার পরিবর্তিত হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন। তার অনেক পরিবর্তনই ভাইরাসের আচরণে কোন প্রভাব ফেলে না। যুক্তরাজ্য থেকে ছড়ানো করোনার যে নতুন ধরন হৈচৈ তুলেছে তার নাম বি.১.১.৭ অথবা ভিইউআই-২০২০১২/০১। এটির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অন্য প্রজাতিগুলোর চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি।

ব্রিটেনে এটি এখন ছড়াচ্ছে অস্বাভাবিক দ্রুততায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের গায়ে থাকা কাঁটার মত স্পাইকগুলোয় মিউটেশনের ফলে প্রোটিনে এমন কিছু পরিবর্তন হচ্ছে যাতে এটা আরো সহজে মানুষের দেহকোষে ঢুকে পড়তে পারছে। এটিই বিশেষ দুশ্চিন্তার কারণ। এই নতুন ধরনে ১৪টি মিউটেশন চিহ্নিত করা গেছে।

ভাইরাসের প্রোটিনে আছে এ্যামিনো এসিড। যা মিউটেশনে দ্রুত পরিবর্তন নিয়ে আসছে বলে দাবি। এসব মিউটেশনের কথা বিজ্ঞানীদের আগেও জানা ছিল, কিন্তু এতো বিস্তারিত নয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পি সিক্সএইট ওয়ান এইচ নামে আরেকটি মিউটেশন জীববৈজ্ঞানিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। কিছু জেনেটিক সংকেত এ মিউটেশনের সময় বাদ পড়েছে- যা এর আগে নেদারল্যান্ডে মিংক নামে এক ধরণের লোমশ প্রাণীর মধ্যে দেখা গিয়েছিল।

যেভাবে চিহ্নিত হলো নতুন ধরনের ভাইরাস

করোনার নতুন এই প্রকারটি চিহ্নিত হয়েছে যুক্তরাজ্যে। এমনও হতে পারে যুক্তরাজ্যের বাইরে আগে থেকেই এটা ছড়াচ্ছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যুক্তরাজ্যে ভাইরাসটি চিহ্নিত হওয়ার কারণ তাদের বৈজ্ঞানিক অবকাঠামো অত্যন্ত শক্তিশালী। এর নাম কগ-ইউকে বা ‘কোভিড-১৯ জেনোমিক্স কনসোর্টিয়াম’- এতে দেড় লক্ষেরও বেশি সার্স-কোভ-টু ভাইরাসের নমুনার জেনেটিক ইতিহাস সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

এ বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে যখন যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হচ্ছিল- তখন বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যে এটি ব্রিটেনে আসছে মূলত ইউরোপ থেকে। এর আদি উৎপত্তিস্থল চীন নয়। করোনা বিস্তার কীভাবে ঘটছে তা বুঝতে এই নজরগিরি খুবই জরুরি। সে কারণে যে দেশগুলো করোনাভাইরাসের জেনোমিক সিকোয়েন্সিং করছে সেসব দেশেই নতুন কোন মিউটেশন হলে ধরা পড়ে যাচ্ছে। যেমন-দক্ষিণ আফ্রিকা, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস।

কেবল যুক্তরাজ্য নয় এরই মধ্যে করোনার নতুন রূপ পৌছে গেছে ইতালি, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসে। পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়াতেও। আরো কিছু দেশে পৌছে যাওয়ার জোর সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়েছে। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকাতে পাওয়া গেছে একটি নতুন রূপ। যার যুক্তরাজ্যের সঙ্গে হুবহু মিল নেই। তবে প্রায় কাছাকাছি।

এখন প্রশ্ন হলো নতুন ধরনের এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত টিকা কি কার্যকারিতা পাবে। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞই বলছেন, নতুন মিউটেশনের ফলে টিকার কার্যকারিতা কমে যাবে এমন কোন সম্ভাবনা অন্তত স্বল্পমেয়াদে এখনো নেই। তবে ড. ভ্যান ডর্প বলছেন, আগামী দিনগুলোতে বিজ্ঞানীদের কাছে প্রশ্নটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

এশিয়ার সামরিক-অর্থনীতির জন্য চীন বড় হুমকি: যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব উইলবার রস বলেছেন, এশিয়ার সামরিক ও অর্থনীতির জন্য চীন একটি বড় হুমকি। মঙ্গলবার মিল্কেন ইনস্টিটিউট এশিয়া সামিটে তিনি একথা বলেন।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি না মেনে চলার জন্য চীনকে তিরস্কার করে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব বলেন, এশিয়া অঞ্চলের সামরিক ও অর্থনীতির জন্য চীন প্রধান হুমকি। এই অঞ্চলের সম্ভাব্য বাজারের জন্যও দেশটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর এএনআইয়ের

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাণিজ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক, করোনাভাইরাস এবং উইঘুরসহ অনেক ইস্যুতে চীন ও আমেরিকা দ্বিধাবিভক্ত। দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেড়েছে।

গত দুই বছর ধরে দেশ দুটি তাদের বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক আরোপ করছে, যা বাণিজ্য যুদ্ধের দিকেই ইঙ্গিত করছে। বাণিজ্য নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

বিবদমান দেশ দুটি চলতি বছরের শুরুতে ‘ফেজ ওয়ান’ বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে শুল্ক লড়াই স্থগিত হয়।

এ নিয়ে মঙ্গলবার রস বলেছেন, আমরা কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় ইস্যু নিয়ে কাজ করছি।

চুক্তি অনুযায়ী, চীন দুই বছরে কমপক্ষে ২শ’ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্য ও অন্যান্য পরিষেবা কেনার প্রতিশ্রুতি দেয়।

চীন এরপর থেকে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি কৃষি পণ্য কিনেছে। তবে এই চুক্তির আওতায় চীন অন্যান্য আইটেম কম কিনেছে-যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এখন যেহেতু চীন করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আমরা আশা করি, তারা এখন লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।

আজ বেগম রোকেয়া দিবস

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাংলার নারী জাগরণের স্বপ্নদ্রষ্টা। তার স্বপ্ন ছিল সমাজে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা আর অধিকার নিয়ে বাঁচবে। সারা জীবন তিনি তার সেই স্বপ্নের কথা বলে গেছেন, লিখে গেছেন তার গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধগুলোতে। যা আজও দিকনির্দেশনা হিসেবে সামনে রয়েছে। বেগম রোকেয়ার জীবন আচরণ ও নারী শিক্ষার প্রসারে তার কাজ স্মরণীয়। তিনি এই লড়াই চালিয়ে গেছেন আমৃত্যু।
আজ বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সেই মহীয়সী নারীর জন্মদিন। দিনটি রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে নানা আনুষ্ঠানিকতায় স্মরণ করা হবে তাকে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক-২০২০ প্রদান করা হবে। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি পৃথক বাণী দিয়েছেন।

১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে এক জমিদার পরিবারে রোকেয়ার জন্ম। জীবনের নানা বাঁকে তিনি রোকেয়া খাতুন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, মিসেস আর এস হোসেন নামেও লিখতেন এবং পরিচিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সমাজসেবায় বিভিন্ন অবদানের জন্য এ বছর পাঁচ জন নারীকে বেগম রোকেয়া পদক ২০২০ দেওয়া হবে। সকাল ১০টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন।

বেগম রোকেয়া পদক-২০২০-এর জন্য মনোনীত পাঁচ জন নারী ব্যক্তিত্ব হলেন, নারী শিক্ষায় প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, পেশাগত উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে কর্নেল (ডা.) নাজমা বেগম, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মঞ্জুলিকা চাকমা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বেগম মুশতারী শফি (বীর মুক্তিযোদ্ধা) এবং নারী অধিকারে অবদানের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার এ বছর বেগম রোকেয়া পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

পদকপ্রাপ্তরা আজ (বুধবার) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে সম্মাননা পদক, সনদ ও চেক গ্রহণ করবেন।

প্রকল্পের ব্যয় বারবার বাড়ানোর কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের মেয়াদ ও প্রকল্পের ব্যয় বারবার বাড়ানোর কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর এই ধারা বন্ধ করতে হবে।’

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে কয়েকটি প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে এসব কথা বলেন।এ সময় তিনি বলেন, ‘যথা সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) ডাকুন। প্রকল্প বাস্তবায়নে কেন দেরি হচ্ছে তার কারণ অনুসন্ধান করুন।’একনেক বৈঠক শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম।

ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্পটি উপস্থাপিত হলে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের কারণ কী? ছোটখাটো কাজ করতে কেন এত সময় লাগছে? এ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) কে তাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় এ প্রকল্পের পিডি উপস্থিত ছিলেন না। তবে কৃষি সচিবও কোনও উত্তর দিতে পারেননি। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক বছরের জন্য নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কেন দুই বছর সময় চাওয়া হচ্ছে? আবার ৬৮ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে কেনও ১০৯ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে?’ এর কারণ অনুসন্ধান করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী পিডিদের ডাকারও নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ড. শামসুল আলম।

একনেক মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  ‘চরখোলা-তুষাখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটি একটি পুরনো সড়ক। এই প্রকল্পে কেন এত সময় লাগবে?’

এর ওপর আবার প্রকল্পের টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবে বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যথা সময়ে প্রকল্প শেষ করতে হবে। সময় ও টাকা বাড়ানোর এসব ধারা বন্ধ করুন।’

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শর্ত পূরণ করা হয়নি বলে ‘পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে  ‘দোতলা সড়ক নির্মাণ প্রকল্প’ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, রাস্তা তৈরি করতে গাছ নষ্ট করা যাবে না। মাঠের মধ্যে ভবন নির্মাণ করা যাবে না। সড়ক মানসম্মতভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলের সড়কের জন্য মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী রাস্তা তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

আলেমদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চায় জামায়াত

ইসলাম ও ইসলামী রাজনীতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে ভাস্কর্য ও মূর্তিবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়েরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাণ ইসলামী শরিয়তে নিষিদ্ধ। দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল শরিয়তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ভাস্কর্য নির্মাণ থেকে সরকার বিরত থাকবে। কিন্তু উল্টো বরেণ্য আলেমদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে অন্যায় করা হয়েছে।

চিনিকল বন্ধের প্রতিবাদ: পৃথক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব ছয়টি চিনিকল বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল এবং শ্রমিকদের ন্যায্য পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চিনিকল বন্ধ হলে শ্রমিকদের পথ বসা ছাড়া উপায় নেই। করোনা পরিস্থিতিতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। আখ মাড়াইয়ের মৌসুমে চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্তে কৃষকও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লোকসানের অজুহাতে চিনিকল বন্ধ করা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। প্রতিবেশী দেশ থেকে চিনি আমদানি করতেই সরকার এই ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

‘এক সময় আমিও ছাত্রলীগ করতাম’-মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক আজ তাঁর নিজস্ব ভেরিফায়েড ফেসবুকে এসে দাবি করেছেন এক সময় তিনিও ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এক সময় আমিও ছাত্রলীগ করতাম কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তাঁর বাবার রাজনীতির অনুসারী হই’। বর্তমানে ছাত্রলীগ মামুনুলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিছিল, মিটিং ও নানাবিধ আল্টিমেটাম এর প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর নিজের ফেসবুক পেজে ‘ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধ, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাসহ উদ্ভূত সার্বিক পরিস্থিতির’ ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন মামুনুল হক। এ সময় তিনি বলেন, ‘সুতরাং এই বক্তব্যের পর বঙ্গবন্ধুর সম্মানের ওপর আক্রমণকারী হিসেবে আমাদের সাব্যস্ত করাটা কতটা যৌক্তিক, তা দেশবাসীর কাছে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করবো।’

মামুনুল হক বলেন, ‘ভাস্কর্যের বিরোধিতা নিছক ধর্মীয় কারণে করছি। রাজনৈতিক কোনও অভিলাষ নেই। বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে অতিরিক্ত এলার্জি নেই। বঙ্গবন্ধুকে একজন প্রয়াত মুসলিম নেতা হিসেবে স্মরণ করি। তার ভাস্কর্য তৈরি করা হলে আল্লাহর কাছে তিনি লজ্জিত হবেন। আমাদের মহান নেতা পরজগতে আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়ে পড়ুন, এটা আমরা চাই না। কল্যাণকামিতার জায়গা থেকেই রাষ্ট্র, সরকারকে বঙ্গবন্ধুকে আল্লাহর কাছে লজ্জিত না করার জন্য অনুরোধ করছি। এই অনুরোধ আমরা করেই যাবো।’

লাইভে হেফাজত নেতা মামুনুল বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় রাতের অন্ধকারে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে একটি অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত, দুঃখজনক ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাস্কর্য ভাঙার সঙ্গে কেউ কেউ আমার নাম জড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু অত্যন্ত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি, আমার কোনও বক্তব্যের মাধ্যমে অথবা আমার কোনও কথায় এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়ার কোনও কথা আমি কস্মিনকালেও বলিনি। দেশের আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনও ব্যক্তি এমনটা কখনও করতে পারেন না।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমার বক্তব্য স্পষ্ট, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে ভাস্কর্য রাখা নাজায়েজ ও হারাম—সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আমি জানিয়ে দিয়েছি। এবং আমরা আমাদের বক্তব্যে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছি, যদি আল্লাহ কখনও আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সক্ষমতা দান করেন তাহলে শরিয়াহর আলোকে সকল কার্যক্রম ঢেলে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।’

মামুনুল অভিযোগ করেন, ‘সারা দেশে যত্রতত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের প্রবণতা শুরু হয়েছে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়ে দ্বিমত করি। কোরআন সুন্নাহর আলোকে তা নাজায়েজ। মরহুম ব্যক্তিদের সম্মান ও মর্যাদার দৃষ্টিকোণ থেকে মনে করি যত্রতত্র ভাস্কর্য নির্মাণে এই ব্যক্তিদের সম্মানহানি হবে। যত্রতত্র এ ধরনের ভাস্কর্য করলে মানুষের মল-মূত্র ত্যাগ হবে, সেখানে মাথার ওপর বিভিন্ন পাখি মলত্যাগ করবে, নানা ধরনের অসামাজিক কাজের আখড়া জমে যেতে পারে। যত্রতত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য করলে সম্মান বৃদ্ধি হবে না, সম্মানহানির পরিবেশ তৈরি হবে।’

প্রসঙ্গত, আজ সোমবার দুপুরে ঢাকার একটি আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ করে মামুনুল হক, জুনায়েদ বাবুনগরী ও ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
ফেসবুক লাইভের বক্তব্যে মামুনুল হক উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমে ইসলামবিরোধী পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ভুঁইফোড় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চও এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

‘শেখ হাসিনার কাছ থেকেই গালি দেয়া শিখেছি’- মাওলানা মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গালি দেয়া এবং রাজনৈতিক অসৌজন্য আচরণ শিখেছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক মিডিয়া হাউস রানার মিডিয়ার একটি টকশোতে। তিনি আরো বলেন, তিনি একাই নন তাঁর দলের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরাও শেখ হাসিনার কাছ থেকেই এই ভাষা শিখেছেন। রানার টিভি’র এই টকশোতে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার, ব্লগার ও লেখক নিঝুম মজুমদার।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক শাহরিয়ার কবিরকে বিভিন্ন ইসলামি ওয়াজে কেন তিনি ‘মুরগী চোর’; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক এবং বিজ্ঞানী মুহম্মদ জাফর ইকবালকে কেন ‘বলদ ষাঁড়’ এবং সূপ্রীম কোর্টের আপীলেট ডিভিশানের বিচারপতি জনাব শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে কেন তিনি বাংলাদেশের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই জুতা খুলে পেটাতে হবে বলেন, ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদারের এমন প্রশ্নের জবাবেই মাওলানা মামুনুল হক বলেন, এই ভাষা ও স্বভাব তিনি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখেছেন।

তিনি বলেন, ডক্টর জাফর ইকবাল ডারউইনের বিবর্তনবাদ থিয়োরীতে বিশ্বাস করেন বলেই তাঁকে তিনি ‘বলদ ষাঁড়’ বলে ডাকেন। একই সাথে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে একজন ‘সেক্টর কমান্ডার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনাব সিদ্দিকী শাহরিয়ার কবিরকে ‘মুরগী চোর’ বলে ডাকেন বলেই তিনিও সেই নামে ডাকবেন। এ সময়ে ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার শরীয়া কিংবা কোরান হাদীসের আয়াতে তাঁর এই ভাষা অন্যায় বলে অভিহিত করলে তিনি তার সদুত্তর না দিয়েই একটি পর্যায়ে তিনি তাঁর ‘অন্য কাজ’ আছে বলে হঠাৎ করেই টকশো ছেড়ে চলে যান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক আসম মাসুম। তিনি আরো জানান, ‘বঙ্গবন্ধু বিষয়ে তাঁকে ব্ল্যাক মেইল করা হচ্ছে’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে গালি শিখেছেন এই বক্তব্যের পরপরই হেফাজতে ইসলামীর বিভিন্ন মহল থেকে টকশো বন্ধ করবার ব্যাপক চাপ আসতে থাকে রানার মিডিয়ার কাছ থেকে। আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মামুনুলের এমন বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামী অত্যন্ত বিব্রত। সরকারের সাথে বসে যখন তাঁরা সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলাপের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন এমন সময় এই ধরনের কথা হেফাজতকে অত্যন্ত বিব্রত করেছে বলেই অনেক নেতার অভিমত।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে হেফাজত ইসলামের একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান যে, ‘মামুনুল নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য এখন আমাদের ভবিষ্যত নিয়েও খেলা শুরু করেছে। এই কথার চরম খেসারত দিতে হতে পারে পুরো সংগঠনকে’

এই ব্যাপারে  গতকাল থেকেই তীব্র সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফেসবুকের বিভিন্ন পেইজ ও ব্যাক্তিরা ক্ষোভ ঝারছেন মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। একজন ইসলামি ব্যাক্তিত্ব ও স্কলার কিভাবে এমন অসৌজন্য ভাষায় কথা বলে সেটি প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপিয়ে দিতে পারেন, এটি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।

জাহাঙ্গীর/১২৭/জক-৪

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছেই

বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছেই। খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম যেমন কিছুটা বেড়েছে, তেমনি বাড়তি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম।

তেলের সঙ্গে চিনির দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে কমেছে আলুর দাম। বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। সবজির দাম বেশ কিছুদিন ধরেই কম। চাল ও পেঁয়াজের বাজারে কোনো হেরফের নেই।

ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাটাসুর বাজার, রায়েরবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা যায়, রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল ৫৭৫-৫৯০, বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের তেল ৫৭০-৫৮০ টাকা এবং পুষ্টি ও তীর ব্র্যান্ডের তেল ৫৫০-৫৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দাম ৫ লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। ব্র্যান্ডভেদে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ১ লিটারের বোতলের দাম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে তা ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ছিল বলে দাবি বিক্রেতাদের।

বিজ্ঞাপন

চালের শুল্ক কমানোর প্রজ্ঞাপন জারি। পেঁয়াজ আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক বসাল সরকার।

দেশে গত আগস্ট মাসে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ছিল ৫০৫ থেকে ৫১৫ টাকা। বর্তমানে তা ৬১৫ থেকে ৬২৫ টাকা। এর মানে হলো, পাঁচ মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ২২ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গতকালের হিসাব বলছে, ১ লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০৭ থেকে ১০৯ টাকা। পাম সুপার তেল ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার ১০০-১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের সোনালী ট্রেডার্সের মালিক আবুল কাশেম বলেন, কোম্পানিগুলো যে দাম নির্ধারণ করেছে, ক্রেতারা সেই দামে তেল কিনতে চান না।

রাজধানীর তিনটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল খুচরা বাজারে সরু মিনিকেট চাল ৬৫-৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৬৬ টাকা, ভালো মানের বিআর-২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা এবং মোটা গুটি ও স্বর্ণা চাল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সরকার গতকাল চাল আমদানি শুল্ক-কর ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে। শুল্কসুবিধার আওতায় অনুমতি সাপেক্ষে চাল আমদানি করা যাবে।

মোহাম্মদপুর সরকারি কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বলছেন, চালের দাম নতুন করে বাড়েনি। আবার কমেওনি।

গতকাল পেঁয়াজ আমদানিতেও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক নতুন করে আরোপ করা হয়েছে। আর স্থগিত থাকা ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বহাল করা হয়েছে। এই শুল্ক আরোপ করা হলো ভারত ১ জানুয়ারি পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর।

ভারত রপ্তানির দরজা খুলে দেওয়ার পর থেকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছিল। রাজধানীর তিনটি বাজারে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজের বাজারমূল্য ছিল প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে।

এখন শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। বেশির ভাগ সবজি পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তবে টমেটোর দাম এখনো কিছুটা বাড়তি। প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

ঢাকার রায়েরবাজার সিটি করপোরেশন বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া রেহেনা সরকার প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে সবজির দাম কমেছে। তবে চাল ও তেলের দাম অনেক বেশি। চাল-তেল কিনতেই অনেক টাকা বাড়তি চলে যাচ্ছে।

ঢাবি প্রক্টরিয়াল টিমের ওপর হামলা, নারীসহ আটক ৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বহিরাগত কয়েকজন ব্যক্তি। এ ঘটনায় দুই নারীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে আজ মঙ্গলবার রাত পৌনে দশটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে৷ হামলায় টিমের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী।

প্রক্টর প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বিবেচনায় ক্যাম্পাস এলাকায় চলাচল সীমিত করতে আজ দিনের বেলা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে থাকা ভাসমান দোকানগুলো তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু দোকানগুলো আবারও বসে। রাতে প্রক্টরিয়াল টিম ফের সেখানে যায় দোকানগুলো তুলে দেওয়ার জন্য। বহিরাগত কয়েকজন ব্যক্তিকে চলে যেতে বললেও তাঁরা যাচ্ছিলেন না। তাঁদের কোনোভাবেই বোঝানো যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে তাঁরা টিমের সদস্যদের ওপর হামলা চালান৷ হামলায় টিম সদস্যদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। চারজনকে আটক করে থানায় দেওয়া হয়েছে আর একজনের খোঁজ চলছে। এঁরা সংঘবদ্ধ চক্র, প্রতিদিনই তাঁরা এখানে আসেন বলে জানতে পেরেছি। স্থানীয় ব্যক্তিরা আমাদের এই তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।’ সংযত আচরণ করতে বহিরাগতসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রক্টর।

প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্য বলেন, ‘ওই বহিরাগতরা যৌন ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে আমরা বহুবার অভিযোগ পেয়েছি। মোটরসাইকেলে করে প্রতিদিন এখানে এসে তাঁরা বসে থাকেন। ভদ্র ভাষায় চলে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তাঁরা আমাদের কথা শোনেননি৷ বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে বহিরাগত ওই ব্যক্তিরা আমাদের ওপর হামলা করেন৷ পরে আমরা তাঁদের মধ্যে চারজনকে ধরে ফেলতে সক্ষম হই আর একজন পালিয়ে যান৷ আটক ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী আছেন। তাঁদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের ওপর হামলাকারী চারজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১০ হাজার টাকায় ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার’ ভুয়া সনদ, গ্রেপ্তার ৪

১৯৭১ সালে তাঁরা ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ ছিলেন বলে সনদ দিচ্ছিল রাজধানীর কাঁটাবনের একটি কম্পিউটারের দোকান। ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের’ ভুয়া সনদ তৈরির অভিযোগে সোমবার রাতে গাউসুল আজম সুপার মার্কেটের নিউ ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডস কম্পিউটার নামে একটি দোকান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ।

তাঁদের মধ্যে দুজন ভুয়া সনদ তৈরির কথা স্বীকার করে গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন আবদুল হাকিম (৫৩) ও দোকানমালিক জামাল মিয়াজী (৪৮)। একই অভিযোগে গ্রেপ্তার আরও দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন মুজাহিদ মিয়া (২৯) ও সফিউর বারী (১৯)। এই দুজন ওই কম্পিউটার দোকানের কর্মচারী। আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ১০ হাজার টাকায় ’৭১–এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট তৈরি করে আসছিল এই চক্রের সদস্যরা।

মামলার কাগজপত্র এবং নিউমার্কেট থানা-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সোয়া নয়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রথমে সেখান থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুল হাকিম। তাঁর বাড়ি রংপুর নগরের জুম্মাপাড়া সুইপার কলোনিতে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, রংপুরের জনৈক আমীর আলি ফকির এই নকল ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’র সনদ তৈরির জন্য হাকিমকে ঢাকায় পাঠান। আর কম্পিউটার দোকানমালিক জামাল মিয়াজী ১৮টি ভুয়া সনদ তৈরি করে দেন। ওই সনদে লেখা ছিল, ‘৭১–এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র।’

এ ঘটনায় জালিয়াতির অভিযোগে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা হয়েছে। নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ম কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, অনেক দিন ধরেই ওই দোকানে এ রকম ভুয়া সনদ তৈরি হচ্ছিল। একেকটি ভুয়া সনদের জন্য ১০ হাজার টাকা করে আদায় করতেন দোকানের মালিক।