কারাগার-পালানো সেই রুবেল রিমান্ডে

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর পুনরায় গ্রেফতার হাজতি ফরহাদ হোসেন রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজা এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে জানান, রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদে ১১ মার্চ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার এসআই আয়ুব আলী। রুবেল অসুস্থ থাকায় ওই সময় শুনানি হয়নি। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

রুবেল কারাগারের পঞ্চমতলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকত। ৬ মার্চ ভোরে সে চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। ওই দিন বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। রাতে তিনি মামলা করেন। ৯ মার্চ নরসিংদীর আদিয়াবাদ শেরপুর এলাকায় ফুফুর বাসা থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

রুবেল একটি হত্যা মামলার আসামি। ৫ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট থানাধীন এসআরবি রেলবিট এলাকায় আবুল কালাম কালু নামে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে রুবেল। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ রুবেলকে গ্রেফতার করে।

মওদুদের লাশ দেশে আসছে আজ দাফন কাল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতি এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের লাশ সিঙ্গাপুর থেকে আজ দেশে আসছে।

বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে। হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ ও নয়াপল্টনে শুক্রবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জানাজা হবে।

পরে মওদুদ আহমদের কফিন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বাদ আসর আরেক দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তার লাশ দাফন করা হবে।

এদিকে তার মৃত্যুতে আজ সারা দেশে শোক পালন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। মওদুদ আহমদের একান্ত সহকারী মোমিনুর রহমান সুজন বলেন, বৃহস্পতিবার (আজ) সন্ধ্যায় স্যারের (মওদুদ আহমদ) লাশ দেশে পৌঁছাবে। বিমানবন্দর থেকে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে। শুক্রবার সকালে ঢাকার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ও বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুদফা জানাজা হবে।

সুজন বলেন, স্পিকারের অনুমতি সাপেক্ষে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আরেক দফা জানাজা হতে পারে সাবেক এ সংসদ সদস্যের। নয়াপল্টনে জানাজা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে মওদুদ আহমদের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে বাদ আসর কোম্পানীগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে জানাজা হবে। এরপর নিজের বাড়ির আঙিনায় আরেক দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে মওদুদ আহমদের লাশ দাফন করা হবে।

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সকাল থেকে নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা কোম্পানীগঞ্জের ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বাড়িতে ছুটে আসেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, শুক্রবার বিকালে মওদুদ আহমেদের বাসভবন হোয়াইট হাউজের সামনে জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কফিন রাখা হবে। এদিকে মওদুদ আহমেদের লাশ নোয়াখালী নিয়ে এলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন অবনতি না ঘটে সে ব্যাপারে পুলিশ সার্বক্ষণিক সতর্ক প্রস্তুত থাকবেন বলে পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।

সারা দেশে বিএনপির শোক আজ : ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে একদিনের শোক ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকাসহ সারা দেশে আজ শোক দিবস পালন করবে দলটি। বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে এ শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এ উপলক্ষ্যে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

এদিকে মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে আরও শোক প্রকাশ করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, লেবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম এবং এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি বদরুদ্দোজা সুজা, মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, নির্বাহী সভাপতি আবদুল আজিজ হাওলাদার, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রমিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসরুল্লাহ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম।

বঙ্গবন্ধুর কাজ সমাপ্ত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। বাণীতে তিনি দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে বর্তমানকে উৎসর্গ করার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের শিশুরা আগামীর বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক, মেধা ও প্রজ্ঞায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করুক, আন্তর্জাতিকভাবে গৌরব বয়ে আনুক প্রিয় মাতৃভূমির জন্য- এটাই আমরা চাই।’

জাতির পিতার জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে তিনি সব শিশু, দেশের সব নাগরিক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘এবারের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙিন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন ও সুরক্ষার বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে জাতীয় শিশু নীতি-২০১১, শিশু আইন-২০১৩, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ প্রণয়ন করেছে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিশু দিবস উদযাপন, সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিশু স্কুলে যাচ্ছে। আমরা শিশুদের জন্য জাতির পিতার জীবন ও কর্মভিত্তিক বই প্রকাশ এবং পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংযোজন করেছি। সব শিশুর সমঅধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে পিতা-মাতা, পরিবার ও সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। শিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সবাইর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

‘নেপালে ট্রফি জিতলে ভালো, না জিতলেও ক্ষতি নেই’

নেপালের ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট জিতলে ভালো। না জিতলেও ক্ষতি নেই। ৬ দিনের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য থাকবে নতুন ফুটবলারদের পরখ করে নেওয়া। এই মন্ত্রেই ১৮ মার্চ কাঠমান্ডু যাবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। আজ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ( বাফুফে) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে বারবারই বললেন, টুর্নামেন্ট জয়ের চেয়ে তাঁর মূল মনোযোগ নবীনদের সুযোগ দেওয়া।

তবে জেমি ডে এ কথা বলতে ভোলেননি, ‌‌‌‘নেপালে ট্রফি জিতলে সেটি হবে দারুণ ব্যাপার। আমাদের জন্য বোনাস। ঢাকা ফিরে ট্রফিটা সামনে নিয়ে আমরা সংবাদ সম্মেলন করব। কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা। আমরা যদি এই টুর্নামেন্টে নতুন ফুটবলারদের পরখ করতে পারি, তাহলে সেটি হবে জুনে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ৩ ম্যাচের জন্য দারুণ ব্যাপার।’

আফগানিস্তান, ভারত ও ওমানের সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের বাকি ৩টি ম্যাচ জুনে কাতারে। এই ম্যাচগুলো দেশের মাটিতে ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে ম্যাচগুলো চলে গেছে নির্দিষ্ট এক ভেন্যুতে। যেটিকে বাংলাদেশের জন্য হতাশার বলছেন জেমি, ‘আমরা ভারত, আফগানিস্তান, ওমানের সঙ্গে ঘরের মাঠে খেলার বড় সুযোগ হারিয়েছি। কিন্তু কিছু করার নেই। এখন আমাদের ভালো প্রস্তুতি নেওয়া চাই। সেই প্রস্তুতিরই একটা অংশ বলতে পারেন নেপালের টুর্নামেন্ট।’

তবে নেপালের মাটিতে খেলা সহজ নয় লাল-সবুজের জন্য। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এসএ গেমসে ভরাডুবি হয়েছে অনূর্ধ্ব–২৩ দলের। ভূপৃষ্ঠ থেকে নেপালের উচ্চতা বাংলাদেশের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে মনে করা হচ্ছে। ফুটবলাররাও বলছেন সফরটা সহজ হবে না। চোটের কারণে এই সফরে ডাক না পাওয়া অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সফরটা কঠিনই হবে। কারণ, নেপালের উচ্চতা বরাবরই ফুটবলাদের জন্য একটা সমস্যা।’

দলের তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছেন কোচ জেমি ডে

দলের তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছেন কোচ জেমি ডে

বাংলাদেশ দলে ২৪ জন ফুটবলারকে ডাকা হয়েছিল। ২৫তম ফুটবলার হিসেবে যোগ করা হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ জুয়েলকে। এই ২৫ জনকে নিয়েই বাংলাদদেশ দল কাঠমান্ডু যাবে। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২৩ মার্চ কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব–২৩ দলের সঙ্গে। ২৭ মার্চ দ্বিতীয় ও শেষ গ্রুপ ম্যাচ নেপালের বিপক্ষে। ফাইনাল ২৯ মার্চ।

কিরগিজস্তান অলিম্পিক দলের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ হারলে ফাইনালে ওঠা কঠিন হয়ে যাবে। তবে কোচ জেমি ডে মনে করেন সুযোগ তখনো থাকবে। সেই সুযোগ নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবে বাংলাদেশ। তবে কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব–২৩ দলকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন কোচ। বলছেন, ‘ওরা অলিম্পিক টিম হলেও আমাদের চেয়ে এগিয়ে। তবে আমি বলব, আমাদের জিততে হবে।’

জেমি তাকিয়ে তরুণদের দিকেই, ‘আমি আসলে ফলাফলের ওপর চোখ রাখছি না। আমি ভাবছি বরং অন্য। আমরা কীভাবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য তৈরি হতে পারি, সেটাই ভাবছি।’ দলে ডাক পাওয়া ৫ নতুন ফুটবলারকে অনুশীলনে দেখে তাঁর ভালো লেগেছে জানিয়ে কোচের সংযাজন, ‘দারুণ লেগেছে নতুনদের দেখে। ওরা সবাই খুব আগ্রহী এবং ভালো কিছু করতে মুখিয়ে আছে।’

সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিসও সুর মেলান কোচের সঙ্গে। বাংলাদেশের জন্য এই সফর নতুনদের সুযোগ দেওয়া জানিয়ে ওয়াটকিসের কথা, ‘নেপালে আমরা যাব, ভালো কথা। কিন্তু সবাই ফলাফলকেই মূল বিষয় ভাববেন না দয়া করে। আমরা জিততে মরিয়া থাকব, সেটা ঠিক আছে। তবে সবার উচিত বৃহত্তর ছবিটা দেখা। জুনে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব আমাদের জন্য অনেক অনেক কঠিন। সেটা নিয়েই আমাদের অনেক বেশি ভাবতে হবে এবং সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া চাই।’

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে ৭ মার্চ। ফুটবলারদের ফিটনেস সমস্যা নেই। সবাই ফিট আছে উল্লেখ করে কোচ বলছেন, ‘আমাদের জন্য এটা ভালো খবর যে ফুটবলাররা খেলার মধ্যে থাকায় সবাই ফিট আছে। নিশ্চয়ই সেটা আমাদের ভালো খেলতে সাহায্য করবে। এটা ভালো দিক।’

২০১০ সালে ঢাকায় এসএ গেমসে সোনা জয়ের পর ফুটবলে বড় কোনো সাফল্য নেই। তাই নেপালের এই টুর্নামেন্ট জেতা উচিত মনে করছেন অনেকেই। জেমি ডে নিজে কী মনে করছেন? প্রশ্ন শুনে হেসে দেন কোচ। বলেন, ‘আমার মূল মনোযোগ টুর্নামেন্ট জেতার দিকে নয়। আমার মনোযোগ দল তৈরি করা। সেটাই আমরা করব। টুর্নামেন্টটা না জিতলে হতাশার কিছু নেই। ফুটবলাররা অভিজ্ঞতা পাবে, সেটাই বরং জুনে আমাদের বেশি কাজে আসবে।’

ভাল্লুকের আক্রমণে আহত উপজাতি, সেনা ও বিমানবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে হেলিকপ্টারে হাসপাতালে

ঝিরি থেকে পানি আনতে গিয়ে বন্য ভাল্লুকের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছেন বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ী এলাকার এক উপজাতি। সমথং কারবারিপাড়া গ্রামের ওই উপজাতির নাম ট্রয়েল মুরং (৬৬)। তার পিতার নাম রেন হেং মুরং।

রোববার তাকে সেনা ও বিমানবাহিনীর সহায়তায় উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এসব তথ্য জানায়।

আইএসপিআরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ী এলাকার সমথং কারবারি পাড়া গ্রামের উপজাতি ট্রয়েল মুরং সকালে ঝিরি থেকে পানি আনতে গেলে বন্য ভাল্লুক তাকে আক্রমণ করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে বলিয়ারপাড়া আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরে তাকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বেল-২১২ হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বান্দরবান হতে চট্টগ্রামে আনা হয়।

উল্লেখ্য, জাতীয় যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনী সর্বদা বেসামরিক প্রশাসনকে জরুরি বিমান পরিবহন এবং মেডিকেল ইকোয়েশন (MEDEVAC) সহায়তা প্রদান করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বেল-২১২ হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উপজাতি ট্রয়েল মুরংকে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য জরুরি ভিত্তিতে বান্দরবান হতে চট্টগ্রাম আনা হয়।

যে পোস্ট সরিয়ে নিয়ে আবার ফেসবুকে দিলেন কাদের মির্জা

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার একটি পোস্ট ভাইরাল (ছড়িয়ে পড়া) হয়েছে। প্রথমে শনিবার বিকেল চারটার দিকে কাদের মির্জা তাঁর নিজের ফেসবুকে ওই পোস্ট দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিচে নানা মন্তব্য আসতে থাকলে পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়। অবশ্য রাত আটটার দিকে পোস্টটি আবারও কাদের মির্জার ফেসবুকে দেখা যায়।

ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়, ‘ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন/ যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ। আবদুল কাদের মির্জা, মেয়র, বসুরহাট পৌরসভা।’ কাদের মির্জা তাঁর পোস্টটির সঙ্গে দুটি ছবিও দেন। একটিতে ওবায়দুল কাদের ও কাদের মির্জাকে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। অন্যটিতে কাদের মির্জার পাশে রয়েছেন তাঁর বড় দুই ভাই ওবায়দুল কাদের ও ফজলুল কাদের ওরফে মিন্টু এবং ছোট ভাই শাহদাত হোসেন। এই ছবির পেছনে দাঁড়িয়ে ফজলুল কাদেরের ছেলে ফজলুল করিম ওরফে তমাল।

বিকেল চারটার দিকে পোস্টটি দিতেই ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পোস্টটির নিচে নানা মন্তব্য আসতে থাকলে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সেটি সরিয়ে ফেলা হয়। ততক্ষণে পোস্টটিতে দু শর বেশি মন্তব্য পড়ে। পোস্টটি শেয়ার করা হয় প্রায় ২০০ বার। পরে রাত আটটার দিকে কাদের মির্জার ফেসবুকে পুনরায় পোস্টটি দেখা যায়।

রাত পৌনে ১১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মন্তব্য পড়েছে ৯০৯টি। পোস্টটি শেয়ার হয়েছে ৩৮৩ বার। এতে ‘লাইক’সহ বিভিন্ন ‘রি-অ্যাকশন’ আছে ৭ হাজার ২০০ জনের।
পোস্টের নিচে সাব্বির পাটোয়ারী নামের একজন লিখেছেন, ‘খুব শীঘ্রই এই একই ফ্রেমে আবারও দেখা যাবে নোয়াখালীর গর্বিত পরিবারের এই চার ভাইকে।’ এমডি খান আজম নামের একজন লিখেছেন, ‘জাতি দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছে কোদাইল মশাই বুকেই টানে।’ নাভিব চৌধুরী লিখেছেন, ‘অভিনয়ের জন্য অস্কার পাবেন আপনি! গ্রেপ্তারের ভয়ে এখন ওবায়দুল কাদের আপনার ভাই।’ তানভির আহমেদ শাকিন লিখেছেন, ‘দুইটা লাশের পরনি এই কথা।’

কাদের মির্জা পোস্টে নারীর প্রসঙ্গ টানলেও এর মাধ্যমে তিনি কাকে বুঝিয়েছেন, তা জানা যায়নি। গতকাল বিকেলে এবং সন্ধ্যায় একাধিকবার তাঁর মুঠোফোন নম্বরে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। অবশ্য স্থানীয় লোকজন বলছেন, কাদের মির্জা সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বক্তব্যে তাঁর ভাবিকে (সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীকে) সমালোচনা করেছেন।

‘দেশের উন্নয়নের জন্য ভিক্ষুকরা আর চাল নেয় না’

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য ভিক্ষুকরা আর চাল নেয় না। তাদের ২-৫ টাকা দিলে তাকিয়ে থাকে; ২০ টাকা দিলে সন্তুষ্ট হয়।

বুধবার দুপুরে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে কালাই সরকারি মহিলা কলেজ চত্বরে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্ব সংবাদ হই তখন, যখন কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন- পৃথিবীর তিনজন কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে তিনজন নারীনেত্রী; যারা এ করোনার মধ্যে পৃথিবীকে পথ দেখিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বদলে গেছে। জাতিসংঘের  সুপারিশে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যমআয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। উন্নয়নে এ দেশ এখন ভারত ও পাকিস্তানকে ছেড়ে গেছে। আমাদের দেশের উন্নয়ন ভারত ও পাকিস্তানের চোখে পড়ে, বহির্বিশ্বের নজরে পড়ে; কিন্তু বিএনপির চোখে পড়ে না। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম, ড. মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র, রিজভী আহমেদসহ অনেকের চোখে পড়ে না।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের মণ্ডলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।

৬ বিভাগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস

ওয়েব ডেস্ক

 

আপডেট
১১-০৩-২০২১, ০৮:২৫

৬ বিভাগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস

৬ বিভাগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস
ছয় বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। 

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, বুধবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এ বৃষ্টি হতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, আগামী দুই দিনে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তার পরের পাঁচ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

‘ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন, যেটা মিথ্যাচার’

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘স্বাধীনতাসংগ্রামে অবশ্যই আপনাদের বিরাট অবদান আছে। আমরা আপনাদের অবদান অস্বীকার করি না। কিন্তু একই সঙ্গে আপনারা যদি স্বাধীনতার মূল নায়কের অবদান অস্বীকার করেন, সেটাকে আমরা মেনে নিতে পারি না।’ তিনি বলেন, ৯ মাস কী কষ্টটা করে দেশের মানুষ লড়াই করেছে, এক কোটি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে প্রতিবেশী দেশে শরণার্থী হয়েছেন, মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তাঁদের কথাগুলো আজ উচ্চারিত হয় না।

১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড চালান বলে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারপ্রধান ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন, যেটা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, তিনি যা বলেন, তার ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবেন না।’ তিনি বলেন, ‘আজকে কেউ একজন বললেন ২৫ মার্চ, ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান মানুষ হত্যা করেন, এটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয়।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনে বিএনপির উদ্যোগে বছরব্যাপী কর্মসূচি পালনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কাউকে ছোট করার জন্য নয়, আমরা স্বাধীনতাসংগ্রামে যার যে অবদান, তা ভ​বিষ্যৎ​ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। এটাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। আর সে জন্য আপনাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। আপনারা বিভিন্ন রকম অসংলগ্ন, অপ্রকৃতিস্থ কথাবার্তা বলছেন, সেগুলোর সঙ্গে সত্যের কোনো চিহ্নমাত্র নেই।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ৭ মার্চ পালন করছি ঘোষণা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রথমে আমাদের স্বাগত জানালেন, তার পরে তিনি বললেন এটা আমাদের ভণ্ডামি।’

আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের লেখা ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’ বইয়ের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সেনানিবাসে একাত্তরের ২৫ মার্চ ২০ বালুচ রেজিমেন্টের সৈনিকেরা এক হাজার বাঙালিকে হত্যা করার বর্ণনা আছে। ওই সময়ে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান ও ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) মেজর রফিকুল ইসলাম উভয়ে বিদ্রোহের প্রস্তুতির কাজটি করছিলেন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুল সালাম প্রমুখ। সভায় আলোচকেরা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে স্বাধীনতার ‘প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

ভাতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন ১৩ হাজার

মাসিক সম্মানী ও বিভিন্ন ভাতা পাওয়া ১ লাখ ৯৩ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম গত বছরের অক্টোবরে একটি সফটওয়্যারে যুক্ত করার পরই হঠাৎ সংখ্যাটি ২১ হাজার কমে যায়। যাঁদের নাম বাদ পড়েছিল, তাঁদের গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণসহ নাম অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু চার মাস পরও ১৩ হাজার জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেকে হয়তো একাধিক নামে, নয়তো জাল সনদে এত দিন ভাতা তুলেছেন।

ওই ১৩ হাজার ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা আর নেই বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, এত বছর ওই ব্যক্তিরা যে সুবিধা নিয়েছেন, তাতে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।

২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ১২ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। এর আগে ছিল ১০ হাজার টাকা। এর মধ্যে দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা বিজয় দিবসের ভাতা এবং ২ হাজার টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা পান। বছরে একজন সব মিলিয়ে ভাতা পান ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। উল্লেখ্য, ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া শুরু হয়। তখন ভাতা ছিল ৩০০ টাকা। ধাপে ধাপে তা বেড়ে ২০০৮ সালে হয় ৯০০ টাকা। ২০১৪ সালে হয় ৫ হাজার টাকা। ২০১৬ সালে হয় ১০ হাজার টাকা।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এত দিন মন্ত্রণালয় ইউএনওদের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার টাকা পাঠাত। ইউএনও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে সেই টাকা জমা দিতেন। ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) সফটওয়্যারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে সরাসরি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক হিসাবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভাতার টাকা যাচ্ছে। কারও সনদ জাল প্রমাণিত হলে বা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে ত্রুটি থাকলে তাঁদের নাম এমআইএসে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ ছাড়া ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর যাঁদের বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাসের কম ছিল, তাঁদের নাম এমআইএসে যুক্ত হয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা নেওয়া ১৩ হাজার ব্যক্তিকে চার মাসেও খুঁজে না পাওয়ার বিষয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির গতকাল রোববার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, এ জন্য বিচার বিভাগীয় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। শুধু মন্ত্রণালয়কে এ জন্য দোষ না দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে যাঁরা এসব সনদ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন, জামুকার যাঁরা সুপারিশ করেছেন, মন্ত্রী বা সচিবদের মধ্যে যাঁরা ওই ব্যক্তিদের সনদ পাইয়ে দিতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। একজন মুক্তিযোদ্ধা বছরে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা পান, তাহলে ওই ১৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধা কত টাকা নিয়েছেন, তার হিসাব জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে মন্ত্রণালয়কে।’

এদিকে গত ৩ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকার খসড়া প্রকাশসংক্রান্ত একটি চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, মন্ত্রণালয় স্বীকৃত ৩৩ ধরনের প্রমাণকের মধ্যে যেকোনো একটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম থাকলে এমআইএসে নাম যুক্ত করা হয়েছে। মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সুবিধাভোগীদের তথ্যও যুক্ত করা হয়েছে এমআইএসে। যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম বা পরিচিতি বা মুক্তিযোদ্ধাসংক্রান্ত কোনো প্রমাণ বা ব্যাংক হিসাবে তথ্যগত কোনো ভুল থাকে, তবে তা ১৫ মার্চের মধ্যে সংশোধন করে নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশিত তালিকার মধ্যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম ও পিতার নামের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণকে নাম ও পিতার নামে মিল না থাকলে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে।

দেশে বর্তমানে মোট বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৩৩ হাজার। তবে আইনি জটিলতার কারণে ভাতা পেতেন ১ লাখ ৯৩ হাজার। এর মধ্যে যে ১ লাখ ৮০ হাজারের নাম এমআইএসে যুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বিবেচনা নেওয়া হয়েছে লাল মুক্তিবার্তা, ‘ভারতীয় তালিকা’ ও ‘গেজেট’। নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণের জন্য ৩৩ ধরনের কাগজপত্র রয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামই একেক নথিতে একেক রকম। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রের নামই বিবেচনা নেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এত দিন মিথ্যা তথ্য দিয়ে টাকা নিয়েছেন, তাঁদের কাছে তা ফেরত চাওয়া হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ অনিয়ম করে থাকলে তাঁকে কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, নামের তালিকা এমআইএস সফটওয়্যারে যুক্ত করার পর নানা অনিয়ম বেরিয়ে আসছে।