নিজেদের তৈরি দ্বিতীয় করোনার টিকার মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করছে ইরান

নিজ দেশে তৈরি দ্বিতীয় করোনার টিকার পরীক্ষা শিগগিরই শুরু করতে যাচ্ছে ইরান। দেশটির সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। ইরানের টিকাটির নাম রাজি কোভ-পার্স। তেহরানে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ রোববার টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাজি কোভ-পার্স টিকাটি তৈরি করেছে রাজি ভ্যাকসিন অ্যান্ড সেরাম রিসার্চ ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় শত বছরের পুরোনো।

ইরানের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের মুখপাত্র কিয়ানুশ জোহানপুর বলেছেন, টিকাটি প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ধাপে ১৩০ জনে স্বেচ্ছাসেবীকে দেওয়া হবে। এটি মূলত মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএভিত্তিক টিকা। এতে নিরীহ ভাইরাস স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ইনজেকশন ও ইনহেলার আকারে ব্যবহারের জন্য মূল্যায়ন করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের ফলাফল জানা গেলে চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষার প্রটোকল তৈরি করা হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও মডার্নার টিকা তৈরিতেও এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইদ নামাকি বলেছেন, রাজি কোভ-পার্স টিকাটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম। টিকা গ্রহণকারীর কাছে থেকে অন্যদের সংক্রমণ ঠেকাতেও সক্ষম এ টিকা।

দেশটির কৃষিমন্ত্রী কাজেম খাভাজি বলেন, ‘প্রায় ৯ মাস আগে টিকাটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা শুরু হয়। এটি ৫০০ প্রাণীর দেহে পরীক্ষা করা হয়েছে।’

ইরানের দ্বিতীয় টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর ঘোষণার দিনেই দেশটির প্রথম টিকা ‘কোভইরান বারেকাতের’ প্রথম ধাপের পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। টিকাটি দেশটিতে সরকারি কর্মকর্তাসহ ৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে দেওয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাস থেকে দুই ডোজের টিকাটি দেওয়া শুরু হয়। এক মাসের কম সময়ের মধ্যে টিকাটির প্রথম ধাপের পরীক্ষার ফল জানা যাবে।

বারেকাত প্রকল্প পরিচালনাকারী সেতাদের মিডিয়া প্রধান হোজ্জাত নিকি মালেকি বলেন, তাঁদের টিকাটি আরব অঞ্চলের দুটি দেশ কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। অবশ্য দেশ দুটির নাম বলেননি তিনি।

ইরান নিজস্ব টিকা উৎপাদনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিদেশি টিকাও আমদানি করছে। গত সপ্তাহে দেশটিতে রাশিয়ার স্পুতনিক–ভি টিকাটির ১০ হাজার ডোজের চালান পৌঁছেছে। দেশটিতে রাশিয়ার টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেয়েছে। ইরানে মঙ্গলবার থেকে দেশটির সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছে ইরান। দেশটিকে ১৪ লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং করোনা সংক্রমিত হয়ে সেখানে মারা গেছেন ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ।

উইঘুর ইস্যুতে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর আবারও সামনে এল চীনের উইঘুর মুসলিম ইস্যু। উইঘুরসহ তিব্বত ও হংকংয়ের নাগরিকদের ওপর যে ধরনের পদক্ষেপ চীন সরকার নিচ্ছে, তা বন্ধে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর এএফপির।

এ নিয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সেন্ট্রাল ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিশনের পরিচালক ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমি এটি পরিষ্কার করে বলেছি যে আমাদের জাতীয় স্বার্থ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অপব্যবহারের অভিযোগে চীনকে জবাবদিহির আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

গতকাল শক্রবার ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে কথা বলেন ব্লিঙ্কেন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, শিনজিয়াং, তিব্বত, হংকং ইস্যুসহ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা এবং মানবাধিকার রক্ষায় পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। এই কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন পরিষ্কার করে বলেছেন। এ ছাড়া মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে নিন্দা জানিয়েছে, তাতে যুক্ত হওয়ার জন্যও চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্লিঙ্কেন বলেন, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নষ্টের ক্ষেত্রে চীন যে হুমকি সৃষ্টি করেছে, তার জন্য দেশটিকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়। কিন্তু ট্রাম্প যেসব নীতি গ্রহণ করেছেন, সেই নীতিই ধরে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। এরপরই তিনি চীনের উদ্দেশ্যে এমন কড়া বার্তা দিলেন।

সেনাপণ্য কেনা বন্ধ কর, মিয়ানমারজুড়ে প্রতিবাদ

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অবৈধ ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে সেনা সংশ্লিষ্ট পণ্য ও পরিষেবা না কেনার ডাক দেয়া হয়েছে।  ‘স্টপ বায়িং জান্তা বিজনেস’ (সেনাপণ্য কেনা বন্ধ কর) কর্মসূচির মধ্যদিয়ে এই ডাক দিয়েছেন দেশটির খ্যাতনামা সাবেক ছাত্রনেতারা।

শুধু তাই নয়, চলমান অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে কৃষক, শ্রমিক-মজুর ও ছাত্রছাত্রীদের সংগঠিত করছেন তারা। খবর মিয়ানমার টাইমস ও দ্য ইরাবতীর।

মিয়ানমারে গত সপ্তাহে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে দেশটির নেত্রী ও সরকারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ শীর্ষ নেতাদের আটক করেছে।

এছাড়া এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছে। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।

সেনাশাসন প্রত্যাখ্যান ও গণতন্ত্রের দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন চিকিৎসক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সাধারণ জনগণকে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পণ্য ও পরিষেবা বয়কটের ডাক দিয়েছেন ছাত্রনেতারা। ৮৮ জেনারেশন পিস অ্যান্ড ওপেন সোসাইটি মিয়ানমারের সাবেক ছাত্রছাত্রীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন।

ক্রমবর্ধমান অসহযোগ আন্দোলনের প্রশংসা করে এর প্রধান দুই সংগঠক কো মিন কো নাইং ও কো জিমি এক বিবৃতিতে বলেন, সেনাশাসনের প্রতিবাদে কৃষক, শ্রমিক-মজুর ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

তারা আরও বলেন, মিয়ানমারের জনগণকে সেনাবাহিনীর অর্থের উৎসগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। সামরিক বাহিনী মিয়ানমারে তাতমাদো বলেও পরিচিত।

তাদের সঙ্গে খাদ্যদ্রব্য ও মদ-পানীয় জাতীয় সামগ্রী, বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি, ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া কোম্পানি, ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, তেল কোম্পানি, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা করা সংস্থার সম্পর্ক আছে। সেগুলোই বয়কটের ডাক উঠেছে।

ছাত্রনেতারা বলেন, ‘জনগণের উচিৎ এখনই সেনা সংশ্লিষ্ট সকল পণ্য ও পরিষেবা কেনা বন্ধ করে দেয়া।’

ডে কেয়ার সেন্টারে চালু হচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা

বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কার্যালয়ে স্থাপিত ডে কেয়ার সেন্টারে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডে কেয়ার সেন্টারের চার বছর বয়সী শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডে কেয়ার সেন্টারের চার বছরের বেশি বয়সী (ফোর প্লাস) শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হবে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ৪ প্লাস’ অর্ন্তবর্তীকালীন প্যাকেজের আওতায় ২০২১ সালে নির্বাচিত ২ হাজার ৬৩৩টি ক্লাস্টারে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি চার বছরের বেশি বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আর ২০২২ সালে সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে।

গত বছর ২২ অক্টোবর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের কাছে তার আফিস ‘প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ৪ প্লাস’ অর্ন্তবর্তীকালীন এই প্যাকেজ হস্তান্তর করেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এর আগে জানিয়েছিল প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের একটি গভীর সংযোগ রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ছোট ছোট শিশুদের শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধবৃত্তিক, ভাষাগত ও সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এছাড়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ -এ ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালুর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রণীত কর্মপরিকল্পনায় প্রাক-প্রাথমিক স্তর এক বছর থেকে দুই বছরে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

পরিকল্পনাটি গত বছরের ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ প্লাস বয়সি শিশুদের জন্য প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়টি অনুমোদন করেন।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে অর্ন্তবর্তীকালীন প্যাকেজের মাধ্যমে সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে ৫ প্লাস বছর বয়সি শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষক্রমের ভিত্তিতে ২০১৪ সালে ৫ প্লাস বয়সী শিশুদের জন্য সারাদেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা রয়েছে।

হ্যাপি বার্থডে ফেসবুক

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪। গভীর রাত। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে ফাঁকিবাজ ছাত্রটি তখন ঘাপটি মেরে বসে আছে। সঙ্গে আরও কিছু ‘দুষ্টু’ বন্ধুবান্ধব। বন্ধুদের নিয়ে সে পুরোদস্তুর একটি ওয়েবসাইট দাঁড় করিয়ে ফেলেছে! নতুন কিছু করার রোমাঞ্চ খেলা করে তাঁর চোখে-মুখে। কোঁকড়া চুলের ছেলেটি তখনো জানে না, কী কাণ্ড করে বসেছে সে! বিশ্বের প্রায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মানুষ তার বানানো ওয়েবসাইটে নাম লেখাবে, সে হবে বিশ্বের ৫ম ধনী এবং ১৩তম ক্ষমতাধর ব্যক্তি—এ সবকিছুই তার সুদূর কল্পনায়ও ছিল না! সে তখন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল তার সদ্য তৈরি করা ওয়েবসাইট—দ্য ফেসবুক!

হ্যাঁ, শুরুতে ফেসবুকের নাম ‘দ্য ফেসবুক’ই ছিল। যে ছেলেটাকে শুরুতেই ‘ফাঁকিবাজ’ বলছিলাম, তাঁকে নিশ্চয়ই তোমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না। ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি, অথচ তাঁকে সবাই এক নামে চেনে—মার্ক জাকারবার্গ!

বিজ্ঞাপন
হ্যাপি বার্থডে ফেসবুক

৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকের জন্মদিন। এ বছর সতেরোতে পা রাখল এই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট। জন্মদিন উপলক্ষে চলো ফেসবুক সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

  • বলো তো, ফেসবুকের রং নীল কেন? কারণ, মার্ক জাকারবার্গ আংশিক বর্ণান্ধ। নীল রংটাই তিনি সবচেয়ে ভালো দেখতে পান। সবুজ, লাল—এসব রঙের পার্থক্য ধরতে পারেন না।
  • ২০০৬ সালে ক্রিস পুটনাম নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক হ্যাক করেছিলেন। ফলাফল? পরদিন সকালেই তিনি ফেসবুকের প্রধান কার্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন!
  • ফেসবুকের নাম যখন শুরুতে ‘দ্য ফেসবুক’ ছিল, নামের পাশেই একজন মানুষের অস্পষ্ট ছবি চোখে পড়ত। ছবিটি বিখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক আল পাচিনোর।
  • ফেসবুক ইউআরএলের শেষে ‘ /4’ লিখলেই তুমি পৌঁছে যাবে মার্ক জাকারবার্গের প্রোফাইলে (http://www.facebook.com/4)
  • ফেসবুকে ভাষা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তুমি চাইলে জলদস্যুদের ভাষাও সিলেক্ট করতে পারো! ভাষা নির্বাচনের সময় সে ক্ষেত্রে তোমাকে English (Pirate) সিলেক্ট করতে হবে।
  • ধরো, এক সকালে তোমার ফেসবুকের মালিক হওয়ার শখ হলো। যদি ফেসবুক কিনে নিতে চাও, খুব বেশি নয়—কমপক্ষে ৫২৭ বিলিয়ন ডলার থাকতে হবে তোমার পকেটে!
  • ফেসবুকের চেহারা কদিন পর পর বদল করলেও, মার্ক জাকারবার্গ তাঁর টি-শার্ট বদল করার সময় পান না। এক ধূসর রঙের টি-শার্টটি গায়ে দিয়ে তিনি দিনের পর দিন পার করে দেন!
  • বিস্ট নামে জাকারবার্গের একটি পোষা কুকুর আছে। ফেসবুকে তার ফলোয়ারের সংখ্যা আড়াই কোটিরও বেশি!
  • মার্ক জাকারবার্গকে ফেসবুকে ‘ব্লক’ করা যায় না!
  • ফেসবুকে তারকাদের মধ্যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ভক্তসংখ্যা সবচেয়ে বেশি (প্রায় ১৪ কোটি ৭৬ লাখ)। পরের স্থানে আছেন যথাক্রমে শাকিরা (প্রায় ১০ কোটি ৯২ লাখ) এবং উইল স্মিথ (প্রায় ১০ কোটি ৪০ লাখ)।

পি কে হালদারের সহযোগী সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর!

পি কে হালদারের দুর্নীতির সহযোগী ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক।

দুদক সূত্রে জানা যায়, রাশেদুল হক মালয়েশিয়া থেকে বিবিএ পাস করে দেশে ফিরে ২০০০ সালে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং কম্পানিতে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে যোগ দেন। এর কয়েক বছর পর পি কে হালদারের অধীনে এভিপি হিসেবে যোগ দেন আইআইডিএফসিতে। পরে পি কে হালদার এমডি থাকা অবস্থায় রিলায়েন্স ফিন্যান্সে এসভিপি হিসেবে যোগ দেন তিনি।

দুদক সূত্রে আরো জানা গেছে, জবানবন্দিতে রাশেদুল হক আদালতকে জানান, পি কে হালদার খেয়াল-খুশিমতো গ্রাহকদের ট্রেড লাইসেন্স যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করতেন। গ্রাহককে না জানিয়েই ঋণ নেওয়া হতো। এভাবে শতকোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এ কাজে তাঁর সহযোগী ছিলেন রিলায়েন্স ফিন্যান্সের কর্মকর্তা রুনাই আহমেদ, আল মামুন সোহাগ ও রাফসান আহমেদ চৌধুরী। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর এসব অপকর্মে পি কে হালদারকে সহায়তা করতেন।

পি কে হালদার এনআরবি গ্লোবালের এমডি হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে রাশেদুল হককে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি করে গেলেও মূল কর্তৃত্ব ছিল তাঁর হাতেই। এই কর্তৃত্ব ধরে রাখতে রিলায়েন্স লিজিংয়ে তাঁর অনুসারী রুনাই আহমেদ, আল মামুন সোহাগ, রাফসান, অভীক সাহাকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে নিয়ে আসেন। এঁদের সঙ্গে পি কে হালদারের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।

রাশেদুল হক জানান, ঋণগ্রহীতাদের বেশির ভাগ ছিলেন পি কে হালদারের আত্মীয়-স্বজন। তাঁরা পি কে হালদারের কাছে ঋণের প্রস্তাব নিয়ে গেলে তিনি সেই প্রস্তাব পাঠিয়ে দিতেন রাশেদুল হকের কাছে। রাশেদ সেটি রুনাই আহমেদের কাছে পাঠালে যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ প্রস্তাবে স্বাক্ষর দিতেন রুনাই, সোহাগ ও রাফসান। সব বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে পি কে হালদার ঋণ প্রস্তাব পাস করতে বাধ্য করতেন।

রাশেদুল জবানবন্দিতে আরো জানান, মো. নওশের উল ইসলাম, মমতাজ বেগম, পাপিয়া ব্যানার্জি, বাসুদেব ব্যানার্জি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালক হওয়ার পরও বেআইনিভাবে তাঁদের ভুয়া প্রতিষ্ঠান এমএসটি মেরিন, এমএসটি ফার্মা, নিউট্রিক্যাল, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজের নামে ঋণ নিয়ে সেই ঋণ পি কে হালদার তাঁর বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করে উত্তোলনের পর বিদেশে পাচার করেছেন।

জেনিথ ও লিপরো ইন্টারন্যাশনাল নামের দুটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে ১২৫ কোটি টাকার ঋণ। রিলায়েন্স লিজিংকে তিনটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই ভাউচারের মাধ্যমে ৮০ কোটি টাকা দিয়েছেন রুনাই, সোহাগ, অভীক, রাফসান ও রাশেদ।

ট্রেজারি বিভাগ থেকে কোনো ঋণ অনুমোদন ছাড়াই শর্ট টার্ম ঋণের নামে এমডি রাশেদুল হক পিপলস লিজিংকে ২০০ কোটি টাকা দিয়েছেন। ওই সময় পিপলস লিজিংয়ের এমডি ছিলেন উজ্জ্বল কুমার নন্দী। পরে তা ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে উত্তোলন দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে এমডি রাশেদুল হক প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ দিয়েছেন। আনাম কেমিক্যাল, রহমান কেমিক্যাল, নর্দান জুটসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে ঋণ দিয়ে পরে উত্তোলন করে পাচার করেন পি কে হালদার।

এসএসসিতে ‘অটোপাসের’ দাবি সড়কে শিক্ষার্থীরা

এসএসসি ও সমমানের ২০২১ সালের পরীক্ষায় ‘অটোপাসের’ দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে পরীক্ষার্থীরা। নরসিংদীতে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া রাজধানীতেও একই দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

নরসিংদীতে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরে মিছিলটি ডিসি রোড ঘুরে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অটোপাসের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান ও প্লে কার্ড প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপজেলার মোড়ে প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করেন।

এ সময় কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। শিক্ষার্থীরা পুলিশের না মানলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) বেলাল হোসেন, সদর মডেল থানার ওসি বিপ্লব কুমার চৌধুরী, ওসি তদন্ত আতাউর রহমান, শিক্ষাবিদ ড. মশিউর রহমান মৃধাসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার জানান, তাদের দাবির বিষয়ে সরকারকে অবহিত করার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে জেএসসি বা নবম শ্রেণির ফলাফল মূল্যায়নের ভিত্তিতে অটোপাস দেয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, পুরো দুই বছর ক্লাস, টেস্ট পরীক্ষাসহ সব দিক থেকেই প্রস্তুতি সত্ত্বেও ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়া হয়েছে। আমরা পুরো এক বছর ক্লাসের বাইরে ছিলাম। তারপরও পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটা আমাদের প্রতি অবিচার করা হবে। আমাদের পিইসি এবং জেএসসির ফলাফল মূল্যায়ন করে অটোপাস দেয়া হোক।

অটোপাসের দাবিতে জানুয়ারি মাস থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব ও কুড়িলসহ দেশের বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

তরুণদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিচ্ছে বিএনপি

ভেঙে দেওয়া হচ্ছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির কমিটি। সাংগঠনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই শাখার আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হচ্ছে। এতে শীর্ষ পদে থাকছের না বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতাদের কেউই। নতুন কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তরুণ নেতাদের। আন্দোলনের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে দলকে আরও শক্তিশালী করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসেই (ফেব্রুয়ারি) কমিটি ঘোষণা হতে পারে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুকে সদস্য সচিব রেখে মহানগর দক্ষিণের কমিটি ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো অনুমোদন হয়নি। যদিও আমানকে রাখার বিষয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির তিন প্রভাবশালী সদস্য ও মহানগরের বেশির ভাগ নেতা বিরোধিতা করছেন। তারা আহ্বায়ক হিসেবে বর্তমান সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে চাইছেন।

আবার প্রয়াত সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে সদস্য সচিব হিসেবে চাইছেন দলের একটি পক্ষ। শুক্রবার রাতে আমান-মজনু কমিটি স্বাক্ষর হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। শনিবার মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ায় আপাতত তা হচ্ছে না। তিনি দেশে ফিরলে ফেব্রুয়ারি মাসের যেকোনো দিন মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি একই সঙ্গে ঘোষণা করা হতে পারে।

এদিকে ঢাকা মহানগর উত্তরে আহ্বায়ক পদে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সদস্য সচিব হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করা তাবিথ আউয়ালকে দেখা যেতে পারে। এর বাইরে উত্তরে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব হিসাবে আলোচনায় আছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, মহানগর নেতা বজলুল বাসিত আঞ্জু, মোয়াজ্জেম হোসেন ও ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টি।

বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপি। দলে গতি আনতে মহানগরকে দুই ভাগ করা হয়। কিন্তু এর পরও আশানুরূপ দক্ষতা দেখাতে পারেননি নেতারা। সর্বশেষ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাই ঢাকা মহানগরকে ঢেলে সাজাতে চায় হাইকমান্ড।

এজন্য সাংগঠনিক দিকসহ সব কিছু বিবেচনা করে তরুণ ও সাবেক ছাত্রনেতাদের হাতে দেওয়া হচ্ছে মহানগরের দুই শাখা। নেতৃত্ব খুঁজতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যকে দায়িত্বও দেওয়া হয়। তিনি উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃত্বে যারা যোগ্য তাদের একটি তালিকা পাঠান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে। এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজ থেকেও খোঁজ নিয়েছেন। সব কিছু যাচাই-বাছাই করে কমিটি দেওয়া হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশে দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে। এর অংশ হিসাবে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটিও পুনর্গঠন করা হবে। সাংগঠনিকভাবে ঢাকা মহানগর দলের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছু বিবেচনা করে সবার সমন্বয়ে কমিটি করা হবে।

মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগ করে সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল। দলের যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে দক্ষিণের সভাপতি, কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭০ সদস্যের আংশিক এবং উত্তরে এমএ কাইয়ুমকে সভাপতি, আহসান উল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৬ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর পার হওয়ায় অনেক আগেই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণার সময়েই তা পূর্ণাঙ্গ করার জন্য কেন্দ্র থেকে এক মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তা মেয়াদ শেষেও সম্ভব হয়নি।

জানা যায়, ঢাকা মহানগর উত্তরে কমিটি ঘোষণার পরপরই দলীয় নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দেয়। মালয়েশিয়া থেকে সভাপতি এমএ কাইয়ুম কিভাবে দলের নেতৃত্ব দেবেন তা নিয়ে সে সময় বিতর্কও ওঠে। ২০১৮ সালে ঘোষিত থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে ‘অযোগ্য ও বিতর্কিতদের’ পদায়ন করায় তা নিয়ে কোন্দল আরও তীব্র আকার ধারণ করে। যদিও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির কমিটিতে প্রকাশ্যে কোনো কোন্দল নেই।

সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারকে দলের কর্মসূচিতে দেখা গেলেও ৭০ সদস্যের কমিটির অনেককেই পাওয়া যায় না। দক্ষিণের একাধিক নেতা জানান, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে বিপদে-আপদে নেতাকর্মীরা পাশে পেয়েছেন। তিনি দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু দলের কর্মকাণ্ডে স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা তাকে সহযোগিতা করছেন না। যে কারণে ব্যর্থতার সব দায়ভার এখন তার ওপর পড়ছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সব ফ্লাইট বন্ধ

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দায়িত্বে থাকা দেশটির সরকারি সংস্থা দেশের সব ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে মিয়ানমারে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এদিকে মার্কিন দূতাবাস ‘নিরাপত্তা সতর্কতা’ জারি করে বলেছে, তারা মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির আটকের পাশাপাশি ইয়াঙ্গুনসহ বেশ কয়েকটি শহরে ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ রাখার বিষয়ে অবগত রয়েছে।

সোমবার ভোরে দেশটির সেনাবাহিনী মিয়ানমারের নেত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও তার ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে আকস্মিকভাবে আটক করে।

সেনা অভ্যুত্থানের এ ঘটনায় দেশটিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ব্যাংক। খাদ্যের দোকানগুলোয় মানুষের ভিড় বাড়ছে। রাস্তায় নামানো হয়েছে পুলিশ। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। তারা বলছে, সামরিক শাসন শেষে সুষ্ঠু নির্বাচনের পর বিজয়ীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে।

গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির দল দ্য ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি জয়ী হয়। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সংকটের শুরুটা মূলত এখান থেকেই। ২০১৭ সালে দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর গণহত্যা নিয়ে সু চি কার্যত দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষেই ছিলেন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। ২০১৫ সালের তুলনায়ও সে বছর সু চির দল বেশি ভোটে জয়ী হয়। এরপর সু চি ক্ষমতায় আসেন। এ নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর অভিযোগ, ভোটে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। সেনাবাহিনীর দাবি, ভোটে কারচুপির এক কোটির বেশি ঘটনার প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে। যাচাই–বাছাইয়ের জন্য সেনাবাহিনী সরকার পরিচালিত নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোটার তালিকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

কিছুদিন আগে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং এক বক্তব্যে মিয়ানমারের সংবিধান বাতিল করার হুঁশিয়ারি দেন। এরপরই উত্তেজনা চরমে ওঠে। গত সপ্তাহে ইয়াঙ্গুনের বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তায়, রাজধানী নেপিডো ও অন্যান্য এলাকায় সেনাবাহিনীর ট্যাংক মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনের ফল নিয়ে সেনা–সমর্থকরা বিক্ষোভ করেন। এসবেরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটল।

মেসি-গ্রিজম্যানে বার্সার জয়

স্প্যানিশ লা লিগায় জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে বার্সেলোনা। অ্যাথলেটিক ক্লাবের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ে টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে কাতালানরা।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যু’তে জয় পেলেও কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয়েছে মেসিদের। ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশ দাপুটে ফুটবলই খেলেছে বার্সা। ২০ মিনিটে লিওনেল মেসির গোলে লিডও নেয়। এছাড়া অনেকগুলো ভালো আক্রমণ নস্যাৎ করে দেন অ্যাথলেটিকো গোলরক্ষক উনায় সিমন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অস্বস্তিতে পড়ে বার্সা। ৪৯ মিনিটে জর্ডি আলবার আত্মঘাতী গোলে সমতায় ফেরে অ্যাথলেটিকে। সমতায় ফেরার পর আরও চাঙ্গা হয়ে উঠে অতিথিরা। বার্সার রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত রাখে একের পর এক আক্রমণে। তবে ৭৪ মিনিটে ওসমান ডেম্বেলের পাস থেকে গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। শেষ পর্যন্ত লিড ধরে রেখে পুরো পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে রোন্যাল্ড ক্যোমেনের শীষ্যরা।

এ জয়ে বার্সার পয়েন্ট দাঁড়াল ২০ ম্যাচে ৪০। টেবিলে অবস্থান দুই নম্বরে। এক ম্যাচ কম খেলা অ্যাথলেটিকে মাদ্রিদ ৫০ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার দৌড়ে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে। ২০ ম্যাচে বার্সার সমান পয়েন্ট হলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় তিন নম্বরে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।