মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে হত্যার বেনিফিশিয়ারি কারা, প্রশ্ন কাদেরের

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়ুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, কারা মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে সপরিবারে হত্যার বেনিফিশিয়ারি? কারা এদেশে খুনিদের বিচার চাওয়ার অধিকার হরণ করেছিলো- তা নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে বলে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।

তিনি শনিবার সকালে রাজধানীর সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।

বিএনপিই এদেশে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির জনক বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ করার অধিকার কারো নেই ।

‘সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ইচ্ছেমত রচনা করছে’-বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী অপশক্তি যেভাবে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে, তার বিপরীতে নতুন প্রজন্ম এখন সত্যিকারের ইতিহাস জানতে পারছে।

বিএনপি মুখোশের আড়ালে স্বাধীনতা বিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের পৃষ্ঠপোষক বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে বিএনপিই কৃত্রিম বাধা তৈরি করছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন বিএনপির একদিকে নির্বাচন বিমুখ রাজনীতি, অপরদিকে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখায় দেশের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খাচ্ছে।

ট্রাম্প ফের নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না: নিকি হ্যালি

ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়তে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে তাকে রিপাবলিকানদের সমর্থন দেওয়া ছিল ভুল।

বার্তা সংস্থা এএফপি ও এনডিটিভির খবরে এমন তথ্য মিলেছে। পলিটিকো সাময়িকীতে শুক্রবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, জো বাইডেনের সঙ্গে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ট্রাম্পের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তাতে আমি বিষম বিরক্ত।

সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, কেন্দ্রীয় অফিসের জন্য তিনি (ট্রাম্প) ফের নির্বাচন করতে যাচ্ছেন না।

২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে ট্রাম্পের দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নিকি হ্যালি।

গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় ও দ্বিতীয় অভিশংসনের প্রতিশোধ নিতে ২০২৪ সালেও ট্রাম্প প্রার্থী হতে পারেন বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তা উড়িয়ে দেন তিনি।

সাউথ ক্যারোলাইনার প্রথম এই নারী গভর্নর বলেন, আমি মনে করি না, তেমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। আমি মনে করি না, তিনি পারবেন। এখন পর্যন্ত যা মনে হচ্ছে, তাতে তিনি পড়ে গেছেন। তিনি আমাদের হতাশ করেছেন।

নির্বাচনের ফল পাল্টাতে ট্রাম্পের চেষ্টায় সমর্থন দেওয়ায় রিপাবলিকান দলেরও সমালোচনা করেছেন নিকি হ্যালি। আর এ কারণেই গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

আ.লীগ ও বিএনপির চেয়ে জাতীয় পার্টির ইমেজ পরিচ্ছন্ন

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির চেয়ে দেশের মানুষের কাছে জাতীয় পার্টির ইমেজ অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন। তাই আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। দেশের মানুষ আগ্রহ ভরে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের তরুণ সমাজের সামনেও জাতীয় পার্টি আকর্ষণীয় দল। এছাড়া সমাজে ক্লিন ইমেজের বিশিষ্টজনরাও জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে শনিবার দলীয় সংসদ-সদস্যদের সঙ্গে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির সামনে যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা ধরে রাখতে হবে। প্রতিটি ইউনিটে জাতীয় পার্টিসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। জাতীয় পার্টিকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করতে দলীয় সংসদ-সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান পার্টি চেয়ারম্যান।

জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, ফকরুল ইমাম এমপি, মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, নাসরিন জাহান রতনা এমপি, নাজমা আখতার এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান এমপি, শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, পনির উদ্দিন আহমেদ এমপি ও ভাইস চেয়ারম্যান পীর ফজলুর রহমান মেজবাহ এমপি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সরকার ইচ্ছামতো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরি করছে: মোশাররফ

সরকার নিজেদের সুবিধামতো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শুক্রবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে তাদের ইচ্ছামতো লেখার চেষ্টা করছে। আজকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং মুক্তিযুদ্ধের যে মূল ইতিহাস তা বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা এবং স্বাধীনতার জন্য আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, সেই ক্ষেত্রগুলোতে কারা কী অবদান রেখেছে, কারা কী ক্ষতি করেছে সেটা সম্পর্কেও বর্তমান প্রজন্মকে ভুল তথ্য দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি উদাহরণ হিসেবে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধে মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক সরকার, গণতান্ত্রিক পরিবেশ। আজকে গণতন্ত্র দেশে নেই। বাংলাদেশে বারবার গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, লুটেরা অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক অবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, অন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ন্যায়-অন্যায়ের কাছে পরাজিত হয়েছে।

নতুন প্রজন্মের কাছে এসব বিষয় তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি সত্যিকার অর্থে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের দল। সেজন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সারাবছর উদযাপন করতে একটি ক্যালেন্ডার আমরা তৈরি করব। এর খসড়া আমরা করেছি।

বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালনে সব উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানান খন্দকার মোশাররফ। দেশের বাইরে প্রবাসেও দিবসটি পালনে অঞ্চল ভিত্তিক কমিটি গঠন করার কথাও জানান তিনি।

জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার, আব্দুল হাই শিকদার, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন,মজিবুর রহমান সারোয়ার, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাখাওয়াত হাসান জীবন, শ্যামা ওবায়েদ, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, আমিনুল হক, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শরীফুল আলম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আমিরুল ইসলাম আলিম, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আরিফুল হক, জহির উদ্দিন স্বপন ও এবিএম আবদুস সাত্তার প্রমুখ।

রমজান সামনে রেখে সিন্ডিকেটের ফাঁদ

রমজান ঘিরে এবারও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নতুন করে ফাঁদ পেতেছে। রমজান শুরুর দুই মাস আগ থেকে নিত্যপণ্যের দাম নীরবে পরিকল্পিতভাবে বাড়ানো হচ্ছে-রমজানে পণ্যের দাম বেড়েছে-এমন অভিযোগ যাতে না ওঠে।

এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে সব ধরনের ডাল, ভোজ্যতেল, আদা-রসুন-পেঁয়াজ, হলুদ-মরিচ, চিনি-লবণ এমনকি খেজুরের দাম বাড়ানো হয়েছে। গরুর মাংস ও মুরগির দামও বেড়েছে। বাড়তি দরে পণ্য কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস উঠেছে।

ভোক্তারা জানান, বরাবরের মতো এবারও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পরিকল্পিতভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।

মনে হচ্ছে, গত কয়েক বছরের মতো এবারও ৫-১০ রোজা পর্যন্ত নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হবে। এরপর হয়তো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকার সংশ্লিষ্টদের বৈঠকের পর দাম কমতে শুরু করবে।

কিন্তু দেখা যাবে, যে পরিমাণে দাম বেড়েছে, সে পরিমাণে কমানো হয়নি। তাই রোজার আগে বাজারের দিকে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়াতে হবে। কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সোমবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ১৬ ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।

এর মধ্যে প্রতি কেজি ছোট দানা মসুর বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। প্রতি কেজি মুগ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা।

খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১১৬ টাকা, এক মাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬২০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা।

প্রতি লিটার পাম অয়েল সুপার বিক্রি হচ্ছে ১০৭ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০২ টাকা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে।

এরপর নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে নিু আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। তিনি আরও বলেন, বাজার নজরদারির জন্য আমরা সব সময় বলে আসছি; কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

কী কারণে দাম বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখা উচিত। এক্ষেত্রে কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ানো হলে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

টিসিবির তথ্যমতে সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩৫ টাকা, এক মাস আগে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি রসুন ১২০ টাকায় বিক্রি হয়, এক মাস আগে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

প্রতি কেজি দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হয় ৩০০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা। দেশি হলুদ বিক্রি হয় ২৪০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা।

প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৯২০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয় ৬০০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮০ টাকা।

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ ও দেশি মুরগি বিক্রি হয় ৪৫০ টাকা, এক মাস আগে ১৩৫ ও ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পাশাপাশি প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৭০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা ও প্রতি কেজি খেজুর (সাধারণমানের) বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বরাবর দেখা গেছে ব্যবসায়ীরা রমজানে পণ্যের দাম খুব কম বাড়ায়।

রমজান আসার এক থেকে দুমাস আগে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়।

এ কারণে রমজান আসার আগে বিষয়টি নিয়ে কঠোর মনিটরিং করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া বাজার ব্যবস্থায় বর্তমানে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা নেই।

অযৌক্তিক মুনাফা করতে ব্যবসায়ীরা সময় ও সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম বাড়ায়। এ প্রবণতা ভোক্তা কিংবা সরকার কারও জন্যই শুভ নয়।

তিনি বলেন, আজ থেকে বাজার ঠিকমতো মনিটরিং করা না হলে যে সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে, তা রমজান পর্যন্ত থামানো যাবে না। তাই এখন থেকে বাজার গভীরভাবে পর্যালোচনা করে তদারকি করা উচিত।

ভোক্তাদের উদ্দেশে গোলাম রহমান বলেন, রমজান ঘিরে ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে। ১৫ দিনের পণ্য যাতে একদিনে না কেনেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। এ কারণেও ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন।

সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, রমজান সামনে রেখে সব পণ্য নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। রমজানে যাতে মানুষের কষ্ট না হয়, সে জন্য সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সরকারের একাধিক সংস্থা কঠোর মনিটরিং করছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে।

রমজান ঘিরেও তদারকি শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া অধিদপ্তরের টিমের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের তদারকি সদস্যরা কাজ করছেন।

পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। অনিয়ম পেলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। দরকার হলে প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

নিজেরা নৌকার কার্যালয় ভাঙচুর করে বিএনপির নামে মামলা: লালমনিরহাট বিএনপি

লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নৌকার প্রার্থীর অনুসারীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছে জেলা বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শহরের মিশন মোড় এলাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিএনপি সব সময় আচরণ বিধিমালা মেনে চলছে, তবু পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিএনপির পূর্বনির্ধারিত অনেক পথসভার স্থানে একই সময়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পথসভার আয়োজন করা হচ্ছে, এতে বিএনপির বেশ কিছু পথসভা স্থগিত করতে হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের বাসায় পুলিশ মধ্যরাতে হানা দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের কাজ করলে মামলার ভয় দেখায়। এর একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার রাতে নয়ারহাট এলাকার নৌকা প্রতীকের কার্যালয়ে তাদেরই লোকজন ভাঙচুর করে বিএনপি এবং এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৪২ নেতা–কর্মীর নামে গায়েবি মামলা করে।
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ এ মামলায় এজাহারভুক্ত জেলা বিএনপির কার্যকরী কমিটির সদস্য সাইদুল ইসলাম ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলী হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।

ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার সাংবিধানিক: সিনেট

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন বিচারকে সাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে মার্কিন সিনেট। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা অভিশংসন বিচার শুরু হয়েছে। ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পরও সংবিধান অনুযায়ী অভিশংসন কার্যক্রম চলতে পারে বলে সিনেটে প্রস্তাব পাস হয়েছে।

সিনেটে অভিশংসন বিচারকাজ সাংবিধানিক কি না, তার ওপর ভোটাভুটি হয়। ৫৪-৪৪ ভোটে বিচারকাজ সাংবিধানিক বলে পাস হয়। সিনেটের সব ডেমোক্র্যাট সদস্য ছাড়াও ছয়জন রিপাবলিকান সিনেটর এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাঁরা হলেন সিনেটর বিল কেসেডি, সুজান কলিন্স, লিসা মুরকৌস্কি, মিট রমনি, বেন সেসই ও প্যাট টমি। এর মধ্যে পাঁচজন রিপাবলিকান সিনেটর আগেই সিনেটে আদালত গঠনের পক্ষে দলের অবস্থান থেকে বেরিয়ে ভোট দিয়েছিলেন। নতুন যোগ হয়েছেন সিনেটর বিল কেসেডি। তিনি বলেছেন, যুক্তিতর্ক শুনে তিনি মনে করেন, সিনেট এমন অভিশংসন আদালত পরিচালনার এখতিয়ার রাখে। তবে বাকি ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থন পাওয়া যাবে কি না, তা নিশ্চিত নয়

প্রথম দিনে আদালতের কার্যক্রমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষের আইনজীবীরা জোরালো বক্তব্য দিতে পারেননি। সিএনএনের খবরে জানা যায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হতাশ এবং বিরক্ত হয়েছেন।

ক্যাপিটল হিলে হামলা।

ক্যাপিটল হিলে হামলা।  রয়টার্স ফাইল ছবি।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাপিটল হিলে সিনেটের প্রবীণ সদস্য প্যাট্রিক লেহির সভাপতিত্বে অভিশংসন আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই অভিশংসন ব্যবস্থাপকদের পক্ষ থেকে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলের সহিংস ঘটনার ওপর একটি ভিডিও দেখানো হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এরপরই ট্রাম্প–সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলে ঢুকে হামলা চালাতে দেখা যায়।

আদালতে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কংগ্রেসম্যান জ্যামি রাস্কিন। ৬ জানুয়ারি জ্যামি রাস্কিন ক্যাপিটল হিলে উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেয়ে ও জামাতা। জ্যামি রাস্কিন বলেন, মেয়ে তাঁকে বলেছেন, আর কখনো ওয়াশিংটন ডিসিতে তাঁরা ফিরতে চান না।

ট্রাম্পের আইনজীবী ডেভিড স্কোহেন আদালতে বলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন দণ্ড হলে দেশে আরেকটি গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এ আদালত চলতে পারেন না। ট্রাম্প আর ক্ষমতায় নেই। সিনেট এমন আদালতে তাঁকে দণ্ড দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। তবে তাঁদের যুক্তি সাংবিধানিক ব্যাখ্যায় ধোপে টেকেনি।

রিপাবলিকান সিনেটর জন কারনাইন আইনজীবীদের সমালোচনা করে বলেছেন, প্রথম আইনজীবী সাংবিধানিক গ্রহণযোগ্যতার যুক্তি জোরালোভাবে উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন।

অভিশংসন আদালতের বিচারকাজ স্থানীয় সময় আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আজ দুপুরে অভিশংসন আদালত আবার বসবেন। আদালতে সহিংসতা ও উসকানি প্রমাণ করার জন্য আরও কিছু ভিডিওচিত্র ও প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

অভিশংসন আদালত চলাকালে ট্রাম্প ফ্লোরিডার মার এ লাগোতে অবস্থান করছেন। ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার নিয়েও অনেকটা নীরব মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

জিয়ার রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত

সংবিধান লঙ্ঘন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের কারণে এমন সিদ্ধান্ত

মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেওয়া হয়। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর তাঁর রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।

জিয়াউর রহমানসহ এই পাঁচজন এবং তাঁদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। গতকাল মঙ্গলবার জামুকার ৭২তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বরাবরই অভিযোগ করা হয়। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার শরিফুল হক ডালিমের নামের সঙ্গে ‘বীর উত্তম’; নূর চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীর বিক্রম’, রাশেদ চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীর প্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিনের নামের সঙ্গে ‘বীর প্রতীক’ উপাধি ছিল।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়া আত্মস্বীকৃত চার খুনির খেতাব বাতিলের বিষয়টি জামুকার গতকালের সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় জামুকার সদস্য ও সাংসদ শাজাহান খান প্রশ্ন তোলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের খেতাব বাতিল করা হলে কেন জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা হবে না। তিনি তাঁর এই বক্তব্যের সপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন। পরে জামুকার সভার সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ অন্য সদস্যরা শাজাহান খানের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার শরিফুল হক ডালিমের নামের সঙ্গে ‘বীর উত্তম’; নূর চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীর বিক্রম’, রাশেদ চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীর প্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিনের নামের সঙ্গে ‘বীর প্রতীক’ উপাধি ছিল।

জামুকার বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকাল দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির কাকরাইলের কার্যালয়ে কথা হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য জিয়াউর রহমানকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সংবিধানের মূলনীতি বাতিল করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হয়েও স্বাধীনতাবিরোধী লোকজনকে নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছেন।

হঠাৎ এখন কেন জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হলো—এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘নিয়ম হচ্ছে, যারা মারা যায় তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা (ব্যবস্থা) যায় না। সে জন্য জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষীর বিরুদ্ধে এত দিন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ রকম আরও যারা রয়েছে, তাদের বিষয়েও জামুকার বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এদের সকলের পদক, সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা হবে। আপাতত জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক ও মাহবুবুল আলম চাষীর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্বে অনেকেরই নোবেল পুরস্কার, ডক্টরেট ডিগ্রি প্রত্যাহার করা হয়। তাদের হয়তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাদ দেওয়া যাবে না, কিন্তু খেতাব বাদ যাবে, অপরাধের জন্য শাস্তি পাবে।’

যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মদদ দিয়েছে, তারা স্বাভাবিকভাবেই অপরাধী। এই অপরাধীরা কোনো সম্মানজনক পদ, পুরস্কার বা খেতাব পেতে পারে না। সে জন্যই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি

গতকালের বৈঠকে অংশ নেওয়া জামুকার দুজন সদস্যের সঙ্গেও কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেন, জামুকার সদস্য ও সাংসদ শহীদুজ্জামান সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়ার প্রস্তাব তুলেছিলেন। তবে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল আলমসহ বৈঠকে উপস্থিত বেশির ভাগ সদস্য তখন বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে গেলে অনেক সময় লাগবে। পরে প্রয়োজন হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবে। আইনি কোনো জটিলতা থাকলে তা সুরাহা করবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ‘স্মরণীয় যাঁরা, বরণীয় যাঁরা’ (লাল মুক্তিবার্তা) এমন একটি তালিকা রয়েছে। এই তালিকায় স্বাধীনতাযুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করা এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলার আসামি বা ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত কয়েকজনের নাম এখনো কীভাবে রয়ে গেছে, তা নিয়েও জামুকার গতকালের সভায় আলোচনা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয়, বিতর্কিত ব্যক্তিদের নাম বাদ দিতে একটি কমিটি কাজ করবে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে শাজাহান খানকে। এই কমিটি বিতর্কিতদের নামের একটি তালিকা তৈরি করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করবে। এই কমিটি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহারের বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মদদ দিয়েছে, তারা স্বাভাবিকভাবেই অপরাধী। এই অপরাধীরা কোনো সম্মানজনক পদ, পুরস্কার বা খেতাব পেতে পারে না। সে জন্যই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

জিয়াউর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা সনদও কি বাতিল হবে জানতে চাইলে শাজাহান খান প্রথম আলোকে বলেন, শুধু খেতাবটাই আপাতত বাতিল হচ্ছে। বাকি স্বাধীনতা পদক, মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বিষয়ে আইনগত দিকগুলো দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে প্রতিমন্ত্রী, সাংসদ ও প্রকৌশলীর আবেদন

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। তাঁর প্রস্তাব পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি এখন একটি উপকমিটিতে পাঠিয়েছে জামুকা।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। তাঁর আবেদনে ইতিবাচক সাড়া দেখিয়েছে জামুকা। একটি সূত্র জানায়, এ বিষয়ে সুপারিশ করেছে জামুকা। বিষয়টি এখন মন্ত্রণালয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি ছাদিকুর রহমান ওরফে হিরু মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। শাজাহান খান গতকালের বৈঠকে ছাদিকুরের পক্ষে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন। উল্লেখ্য, শাজাহান খান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।

গত মাসেই এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমানের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জামুকা। ৭০তম সভায় নেওয়া এ সিদ্ধান্ত গতকালের সভায় (৭২তম) পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর কারণ হিসেবে এখন বলা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে ঢাকা স্টেডিয়ামে তিনি অস্ত্র জমা দিয়েছেন, এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাঁর আবেদনে সুপারিশ করেছেন জামুকার সদস্য ও সাংসদ মোশাররফ হোসেন।

এ ছাড়া বৈঠকে জামুকার সুপারিশ ছাড়া যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদ নিয়েছেন, তাঁদের বিষয়ে এখন পর্যন্ত ১০২টি উপজেলা থেকে প্রতিবেদন এসেছে বলে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

জামুকার গতকালের সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব বলেন, জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাকসহ অন্য বিতর্কিতদের খেতাব বাতিলের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নীতিগতভাবে তিনি তা সর্মথন করেন। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এটা ঠিক, কিন্তু তাঁদের হাতেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁরা মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের পুনর্বাসন করেছেন। তাই তাঁরা রাষ্ট্রীয় সম্মানজনক খেতাবের যোগ্য নন বলে মনে করেন তিনি।

চীনের কাছে টিকা উপহার পেল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা উপহার দিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা থেকে আজ সোমবার এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, পিএলএ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে করোনার টিকা উপহার দিয়েছে। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীই প্রথম বিদেশি সামরিক বাহিনী, যারা বেইজিংয়ের কাছ থেকে টিকা উপহার পেয়েছে।

ডনের খবরে বলা হয়, উপহার হিসেবে পাওয়া এসব টিকা জাতীয় টিকা কার্যক্রমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘সব সময়, প্রতি মুহূর্তে রাষ্ট্র আগে’, এই নীতি অনুসরণ করেই সশস্ত্র বাহিনী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ে এমন উপহারের জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী চীন ও পিএলএর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

গত সপ্তাহে চীনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ডোজ করোনার টিকা উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছে পাকিস্তান। এর এক দিন পরই দেশজুড়ে টিকা কার্যক্রম শুরু করে পাকিস্তান।
দেশটিতে আজ সোমবার পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫১১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ২৬ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ১১ হজার ৫০২ জন।

বিমানবন্দরে খাবারের গাড়িতে ৬০ পিস স্বর্ণ, আটক ৭

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের খাবার সরবরাহকারী ক্যাটারিং সার্ভিসের গাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা মূল্যের ৬০ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন সাত জন আটক করেছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাতটায় ইউএস বাংলার দুবাই থেকে আসা ফ্লাইট বিএস ৩৪২ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরে যাত্রীদের উচ্ছিষ্ট খাবারের বক্স গাড়িতে তোলার পর তল্লাশি চালিয়ে একটি বক্স থেকে ৬০ পিস স্বর্ণের বার জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সদস্যরা।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালায় সংস্থাটি। এ ঘটনায় ইউএস বাংলার ক্যাটারিং সার্ভিসের কর্মীরা জড়িত বলে ধারণা করছে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নিয়াজুর রহমান খান।

উড়োজাহাজটি জব্দ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন অভিযানে সম্পৃক্ত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।

আটক স্বর্ণের মূল্য আনুমানিক সাড়ে চার কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা হতে পারে।

এ ঘটনায় আটক সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।