পথ দেখানোর কেন্দ্র হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস আমাদের বাধা দিয়েছে, কিন্তু এই বাধা অতিক্রম করেই এগিয়ে যেতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন গবেষণা করা। গবেষণা ছাড়া কোনো অর্জন সম্ভব না।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাবির শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

গবেষণার প্রতি জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন সেটা সমুন্নত রাখা, বিশ্বে বাঙালি জাতিকে একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ’৯৬ তে আমরা যখন সরকারে আসি তখন দেখেছিলাম গবেষণার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে পারত অর্থের ব্যবস্থা করে গবেষণা করত। তখন আমরা গবেষণার জন্য আলাদাভাবে অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করলাম। আর এখন এর সুফল আমরা পাচ্ছি। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, প্রতিটা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। সবকিছুই গবেষণার ফসল। তাই গবেষণাকে সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে, সেটা আমি অনুরোধ করব।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের। আমাদের প্রতিটি অর্জনের পথ দেখিয়েছে। কাজেই সে বিশ্ববিদ্যালয় আরও উন্নত থেকে উন্নততর, সুন্দর হোক সেটাই আমরা চাই।  সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের আগামী দিনের পথচলা বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার জন্য যে দক্ষ মানব শক্তির প্রয়োজন এই মানব শক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে পারে বা এর যাত্রা শুরু করতে পারে। যাকে অনুসরণ করে বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ও সেইভাবেই কাজ করবে। আমাদের সামনে যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে বা বিশ্ব যখন এগিয়ে যাবে তার সঙ্গে আমরা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারি। তার পথ দেখানোর কেন্দ্রবিন্দু হবে ঢাবি সেটাই আমরা চাই।

ঢাবির সব আন্দোলনের সূতিকাগার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যদি আমাদের প্রতিটা আন্দোলনের দিকে তাকাই সবগুলোরই সূতিকাগার ঢাবি। ঢাবি সবসময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছে এবং আমরা দেখেছি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তথা ৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর মিলিটারি ডিক্টেটররা ক্ষমতা একের পর এক দখল করতে শুরু করে। ৭৫-এর পর দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি।  আর এভাবেই একটি জাতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়ার যড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, আদর্শ সব একে একে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু এর প্রতিবাদ আবার শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কারণ ঢাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার গঠনের পর ঢাবিতে এখন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যায় না, গোলাগুলি, বোমাবাজির শব্দও শোনা যায় না। সবচেয়ে বড় বিষয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। আর আমরা সেটা পেরেছি। এখন শিক্ষকদের দায়িত্ব জ্ঞানদান করা আর ছাত্রদের দায়িত্ব জ্ঞান গ্রহণ করা। তবে আমার সরকারের পক্ষ থেকে বলতে পারি, ঢাবি আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাবে।

নগর কৃষির আদ্যোপান্ত

আমার ছোটবেলা কেটেছে গ্রামে। খুব কাছ থেকে পরিবেশ ও প্রকৃতি দেখার সুযোগ হয়েছে। আমি আমার মাকে দেখেছি এক চমৎকার কৌশলে সন্ধ্যাবেলায় একঝাঁক হাঁস-মুরগি এক এক করে খুপরিতে তুলতে। দেখেছি কীভাবে মায়ের হাতে লাগানো শিমগাছটি দুই পাতা, তিন পাতা করে বাড়তে বাড়তে একসময় বারান্দা ছাপিয়ে ঘরের আঙ্গিনা ছেয়ে ফেলত।

ক্যালেন্ডারের পাতার মতো সুন্দরভাবে শীতের সকালে কুমড়া ফুল ফুটে থাকতে দেখেছি। বাগান ভরে লালশাকের লাল রঙে রক্তিম হয়ে যাওয়া কিংবা গাছে ঝুলে থাকা কোন লাউ বা কুমড়াটি খাওয়ার উপযোগী হয়েছে, তা আমাদের মা বা নানী-দাদীরা এক আশ্চর্য কায়দায় বুঝে ফেলতেন। এসব শিক্ষাই প্রজন্ম শিক্ষা, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে শহুরে প্রজন্ম এ শিক্ষা পায় না বললেই চলে। ফলে শহরে বেড়ে ওঠা শিশুদের মধ্যে প্রজন্ম শিক্ষার অভাবটা দিন দিন বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

তারা জানতে পারছে না, কোন গাছে কোন ফুল বা ফল ধরে। যে কলা কিংবা আনারস তারা খাচ্ছে; তার গাছটি দেখতে কেমন, তারা সেটা জানে না। কবির ভাষায় বলতে গেলে— “বহু দিন ধরে’ বহু ক্রোশ দূরে/ বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে/ দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা/ দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু/ দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া/ ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া/ একটি ধানের শিষের উপরে/ একটি শিশিরবিন্দু।”

 

এখন তাদের অধিকাংশের অবসর কাটে মোবাইলে গেম খেলে কিংবা টিভিতে কার্টুন দেখে। ফলে প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালোবাসা বোধ তৈরি হয় না। এজন্য বাসাবাড়ি বা বিদ্যালয়ের টবে সাজিয়ে রাখা গাছের পাতা ছিঁড়তে কিংবা ডাল ভাঙতেও তাদের কষ্ট হয় না।

ইট, কাঠের যান্ত্রিক শহরে তারা পায় না সত্যিকারের সোনার বাংলার আমেজ। তবে আশার কথা হলো, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহর ও নগরে বাড়ির ছাদে বাগান করা এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নানা নকশার বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই বিভিন্ন ধরনের বাগান দেখা যায়।

অবশ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের ছাদে যেসব বাগান দেখা যায়, তার অধিকাংশই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বাড়ির ছাদে যেকোনও গাছ, এমনকি শাকসবজিও ফলানো সম্ভব। আঙুর, বেদানা, ডালিম, আমড়া, পেয়ারাসহ নানা ধরনের মৌসুমি ফল ছাড়াও কলমিশাক, কলা, ডাঁটা, লাউ ইত্যাদি অনায়াসে উৎপাদন করা যায়।

প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে বর্তমানে ঢাকা শহরে সবুজায়িত এলাকা রয়েছে খুবই কম। এর মধ্যে আবার রয়েছে ৪৫টি পার্ক, ২১টি খেলার মাঠ, নয়টি কবরস্থান, চারটি সংরক্ষিত এলাকা, রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকা ও রোড ডিভাইডার। সব মিলিয়ে এখানে সবুজায়িত এলাকার পরিমাণ চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, কৃষি মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদফতর সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯৮৯ সালেও ঢাকায় সবুজায়িত এলাকার পরিমাণ ছিল মোট আয়তনের প্রায় ২০ শতাংশ। সময় গড়াতে গড়াতে ২০০২ সালে তা নেমে আসে সাড়ে ১৫ শতাংশে। ২০১০ সালে তা আরও কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশে। বর্তমানে ঢাকায় সবুজায়িত এলাকার পরিমাণ ২ শতাংশেরও কম।

রাজধানীতে এখন নতুন বাড়ি রয়েছে ২০ শতাংশ আর পুরনো বাড়ি ৮০ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট প্লটগুলোর আকার ২ থেকে ১০ কাঠা পর্যন্ত। প্রতিটি বাড়ির গড় আয়তন প্রায় পাঁচ কাঠা। এর মধ্যে গাছ লাগানোর জন্য উপযুক্ত স্থান পাওয়া যায় পুরনো বাড়ির ক্ষেত্রে ৩০ ও নতুন বাড়ির ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ। ঢাকা শহরের মোট বাড়ির সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ। এর মধ্যে পুরনো বাড়ি রয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার, যার মোট আয়তন দাঁড়ায় প্রায় ১৮ লাখ কাঠা।

এর মধ্যে সবুজায়নের জন্য উপযুক্ত ৫ লাখ ৪০ হাজার কাঠা প্রায়। নতুন বাড়ি প্রায় ৯০ হাজার, যার মোট আয়তন সাড়ে চার লাখ কাঠা প্রায়, যেখানে সবুজায়নের জন্য উপযুক্ত জমি রয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার কাঠা। সব মিলিয়ে ঢাকায় সবুজায়নের জন্য উপযুক্ত মোট জমির আয়তন ৮ লাখ ১০ হাজার কাঠা বা ৫৮ কোটি ৩২ লাখ বর্গফুট। রাজউক অনুমোদিত নকশায় ৫০ শতাংশ জায়গা ছেড়ে বাড়ি বানানোর নিয়ম রয়েছে। আর পুরনো বাড়ির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ জমি ছেড়ে বাড়ি বানানোর বিধান ছিল।

সুতরাং হিসাবমতে, ঢাকা শহরে বিদ্যমান সাড়ে চার লাখ বাড়ির আঙ্গিনা থেকে পাওয়া সবুজায়নযোগ্য জমির পরিমাণ ৫ লাখ ৮৫ হাজার কাঠা। এর সঙ্গে বাড়ির ছাদকে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় যে পরিমাণ জায়গায় বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে, তার চেয়েও অনেক বেশি জায়গায় সবুজায়ন করা সম্ভব।

ঢাকায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার অন্তত অর্ধেক প্রতিষ্ঠানে সবুজায়নের সুযোগ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ছাদ, বারান্দা, ক্যান্টিন, ক্লাসরুমের কর্নার বা চলাচলের প্যাসেজে গাছ লাগানো সম্ভব। এছাড়া বাড়িঘর, হাসপাতাল, ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও রোড সাইড প্লান্টেশনকেও এ তালিকায় আনা যায়, সে বিষয়ে ভাবনার কোনও অবকাশ নেই। আর এভাবেই ঢাকা হয়ে উঠতে পারে পরিবেশবান্ধব এক সবুজ নগরী।

আজকাল দেখা যায়, শখ করে অনেকেই ছাদে বাগান করেন। বিষয়টিকে এখন অর্থনৈতিক এক সম্ভাবনার খাত হিসেবেই দেখছেন অনেকে। এমন অনেকেই আছেন, যারা বাড়ির ছাদে বাগান করে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে থাকেন। তবে ছাদবাগান মানে অনেকেই মনে করেন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রকৃতপক্ষে এতে অনেক কম শ্রম প্রয়োজন। ছাদবাগান করতে হলে প্রতিদিন সকাল-বিকাল গাছে পানি দিতে হবে।

এছাড়া গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আরো খেয়াল রাখতে হবে, ছাদবাগানের গাছগুলো মাটিতে রোপণ করা সাধারণ গাছের মতো নয়। তাই সার কিংবা ভিটামিন দিতে হবে খুব বুঝেশুনে। এক্ষেত্রে কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া কোনো কিছু প্রয়োগ একদম উচিত হবে না।

মাত্র চার-পাঁচ কাঠা জমির ওপর বাড়ির ছাদে পরিকল্পিতভাবে বাগান করলে অনায়াসে চার-পাঁচ সদস্যের পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বছরে কমপক্ষে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক উপায়ে গাছ জন্মানোর এ পদ্ধতি এনে দিতে পারে আর্থিক সচ্ছলতাও। একই সঙ্গে আমাদের পরিবেশ হবে আরো একটু সমৃদ্ধ ও সবুজ। যান্ত্রিক নগরী ফিরে পাবে তার হারানো রূপ।

বাইডেন-কমলাকে বিশ্ব নেতাদের শুভেচ্ছা

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন জো বাইডেন। তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করেন কমলা হ্যারিস। বুধবার (২০ জানুয়ারি) প্রখ্যাত মার্কিন সংগীত শিল্পী লেডি গাগার কণ্ঠে আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত দিয়েই শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। তারপরই শপথ বাক্য পাঠ করতে বেগুনি রঙের ব্লেজার পরে মঞ্চে আসেন কামালা হ্যারিস। তাকে শপথ পড়ান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সোনিয়া সোটোমায়র। এর পর তাদের জন্য শুভেচ্ছার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। বাইডেন-হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও জোটের প্রধানরা। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন বাইডেন ও কমলা।

শপথ নেওয়া পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটবার্তায় দু’জনকেই উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান। ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মোদি।

পিছিয়ে নেই পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। তিনি টুইটারে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিষেকের জন্য অভিনন্দন জানাই। বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক চুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক এবং এর বাইরে উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী পাক-মার্কিন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করার অপেক্ষায় থাকলাম।’

ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল দু’জনের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন। শিগগিরই হোয়াইট হাউজে নতুন বন্ধু পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্রিটিশ সংস্করণ বলে পরিচিত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইটারে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণের জন্য জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসকে তার ঐতিহাসিক অভিষেকের জন্য অভিনন্দন। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে কোভিড পর্যন্ত যেসব বিষয় আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেসব ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।

ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ভিডিওবার্তা পোস্ট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।

পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইটারে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিষেকের জন্য অভিনন্দন জানাই। বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক চুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক এবং এর বাইরে উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী পাক-মার্কিন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করার অপেক্ষায় থাকলাম।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, আজকের দিনটা চমৎকার। জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের প্রশাসন যাত্রা শুরু করল। আমরা গণতন্ত্র এবং আরও ন্যায্য, টেকসই ও সর্বাত্মক বিশ্বব্যাপী শাসন ব্যবস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করব।

এছাড়াও বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রমুখ।

পুঁজিবাজারে লেনদেনে সূচক বাড়ছে

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ লেনদেন চলছে সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস আজ বুধবার (২০ জানুয়ারি) লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল ১১টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১২৯৮ ও ২২১৬ পয়েন্টে রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ৩৬৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।

এই সময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ৮৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৯টি কম্পানির শেয়ারের দর।

সকাল ১১টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো   বেক্সিমকো লিমিটেড, রবি, সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, সিটি ব্যাংক, লংকাবাংলা, ইসলামি ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী  ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ও গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স।

লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ মিনিটে ডিএসইর সূচক বাড়ে ১৮ পয়েন্ট। এরপর ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি নিম্নমুখী দেখা যায়। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮২৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।

এদিকে, লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ৯৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়।

সকাল ১১টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ সময়ে ৬৩টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ৩৬টি কম্পানির দর। আর ২৩টি কম্পানির শেয়ারের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ এম আর খানের মেয়ের

‘ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি যে বাবার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই একটি চক্র আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরবে। আমি চিন্তাও করতে পারিনি, ডাক্তার এম আর খানের সহায় সম্পত্তিকে গ্রাস করবে। আমি বাবার একমাত্র সন্তান এবং কন্যাসন্তান। আমার কোনো ভাই নেই। সেই আমাকেই কেউ আমার ন্যায্য উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে।’

আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলছিলেন প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এম আর খানের মেয়ে ম্যান্ডি করিম।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজি’ এবং ‘সেন্ট্রাল হাসপাতাল’ জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের অভিযোগে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ম্যান্ডি করিমের স্বামী রেজা করিম ও তাঁদের আইনজীবী তামিম রহমান উপস্থিত ছিলেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন নাট্যকার মামুনুর রশীদ।

বিজ্ঞাপন

ম্যান্ডি করিম বলেন, ‘বাবার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমার পাওনা শেয়ার, উত্তরাধিকার এবং ট্রাস্টি পদ থেকে আমাকে কৌশলে সরিয়ে রাখা ও বঞ্চিত করা হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার কোনো অধিকার নেই, আমি এম আর খানের কেউ নই। আমার বাবা প্রয়াত অধ্যাপক এম আর খানকে ভালোবেসে এবং তাঁর ওপর ভরসা করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার নাম “সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি”।

ম্যান্ডি করিম বলেন, ‘আমার বাবা যখন হাসপাতালে মৃত্যুপথযাত্রী, তখন গাজী সালাম নামের এক ব্যক্তি চক্রান্ত ও জালিয়াতি করে ইউনিভার্সিটির সকল প্রকার রেজুলেশন, ডকুমেন্টস এবং ট্রাস্টি বোর্ডের তালিকা থেকে আমার বাবার নাম বাদ দিয়ে দেন। আমার বাবা এবং ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনি এ কাজ করেন। আমার বাবার নাম বাদ দিয়ে নিজেকে ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান করে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েদের সমন্বয়ে একটি ভুয়া ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে জমা দেন।’

ম্যান্ডি করিম অভিযোগ করেন, ‘আমার বাবার অসুস্থতার সুযোগে তাঁর জমানো এফডিআরের টাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির নামে আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকে জমা দেন গাজী সালাম। এসবের বিষয়ে আমি বা আমার পরিবারের কোনো সদস্য কিছুই জানতাম না। আমি অবগত হওয়ার পর একটি চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসিকে জানাই। এবং আমার বাবার অনুপস্থিতিতে আমাকে চেয়ারম্যান করে নতুন একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের অনুরোধ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন (বাঁ থেকে) নাট্যকার মামুনুর রশীদ, ডা. এম আর খানের জামাতা রেজা করিম, মেয়ে ম্যান্ডি করিম ও তাঁদের আইনজীবী তামিম রহমান। সাগর-রুনি মিলনায়তন, ডিআরইউ, ২০ জানুয়ারি

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন (বাঁ থেকে) নাট্যকার মামুনুর রশীদ, ডা. এম আর খানের জামাতা রেজা করিম, মেয়ে ম্যান্ডি করিম ও তাঁদের আইনজীবী তামিম রহমান। সাগর-রুনি মিলনায়তন, ডিআরইউ, ২০ জানুয়ারি
 ছবি: প্রথম আলো

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অধ্যাপক এম আর খান ছিলেন অ্যাডভান্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। তাঁর এই ফাউন্ডেশনের নামে তিন বিঘা জমি বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। সেই জমিটিও বেদখল হয়ে গেছে। এম আর খানের হাতে গড়া অ্যাডভান্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন থেকেও অত্যন্ত কৌশলে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবারের কাউকেই রাখা হয়নি। নানা মানুষের কাছ থেকে ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য করার কথা বলে কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে।

ম্যান্ডি করিম বলেন, তাঁর এক চাচাতো ভাই এই হাসপাতালে আমার বাবার শেয়ারের অংশ দাবি করে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে প্রভাবিত হয়ে সেন্ট্রাল হাসপাতালের বর্তমান পরিচালনা পরিষদ আজ অবধি কোনো বোর্ড মিটিংয়ে শেয়ার ট্রান্সফারের ব্যাপারটি উপস্থাপন করেননি। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে আরও একটি প্রতিষ্ঠান নিবেদিতা নার্সিং হোম, যা এম আর খান প্রতিষ্ঠা করেন। এখানেও সেই সেন্ট্রাল হাসপাতালের মতো কয়েকজন পরিচালক তাঁকে সব কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। এই প্রতিষ্ঠানের তিনজন পরিচালক আবার সেন্ট্রাল হাসপাতালেরও পরিচালক।

বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের অনেক চ্যালেঞ্জ

একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের যে প্রক্রিয়া বা রীতি, এবার সেভাবে হয়নি। ওয়াশিংটন ডিসি প্রায় ২৫ হাজার গার্ডে পরিবেষ্টিত। নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান ঘিরে পুরো যুক্তরাষ্ট্র থেকে লাখ লাখ মানুষ এ সময় ওয়াশিংটন ডিসিতে আসে। সেখানে এবার মাত্র হাজারখানেক মানুষ! শপথগ্রহণ ঘিরে অস্বাভাবিক একটি অবস্থা।

পাশাপাশি বড় বিষয় হলো, বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিষেক অনুষ্ঠানে নেই। তিনি বাইডেনের নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমন একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ট্রাম্প সৃষ্টি করেছেন যে তাঁর সমর্থকরা গত ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসে গিয়ে তাণ্ডব চালাল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অভাবনীয়, অবিশ্বাস্য। সেই পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিভাজিত যুক্তরাষ্ট্রে, জনগণকে বিভাজিত অবস্থায় রেখে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। এই বিভাজিত যুক্তরাষ্ট্রকে কিভাবে আবার ঐক্যবদ্ধ করা যায়, সেটিই তাঁর সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। একই সঙ্গে এটিই তাঁর প্রধান ও প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বাইডেন এ ক্ষেত্রে কিছু কিছু ইঙ্গিত করেছেন। তিনি চান যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও ঐক্যবদ্ধ করতে। বিভাজনের রাজনীতিকে উতরে তিনি সহযোগিতা ও সমন্বয়ের জায়গায় যেতে চান। কংগ্রেসে যাঁরা রিপাবলিকান আছেন, তাঁদের সঙ্গে কাজ করার জন্য তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও রিপাবলিকানদের তিনি প্রত্যাশা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সহযোগিতা ও সমন্বয়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বাইডেনের নীতিগুলো এই লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে কিভাবে বিভাজন থেকে বেরিয়ে আসা যায়, সে নিয়ে তিনি কাজ করবেন।

বাইডেনের দ্বিতীয় অগ্রাধিকার হলো কভিড মোকাবেলা। যুক্তরাষ্ট্রে চার লাখ মানুষ এরই মধ্যে কভিডে মারা গেছে। লিংকন মেমোরিয়ালে তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাইডেন। কভিডের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে বেকারত্ব বেড়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজেই অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করা তাঁর অন্যতম প্রধান কাজ হবে। এটি তাঁর তৃতীয় অগ্রাধিকার হতে পারে।

বাইডেন বলেছেন, বিদেশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ভিত্তিই হবে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ যুক্তরাষ্ট্র। সেটি বিবেচনায় রেখেই তিনি বিশ্বে তাঁর অবস্থান নির্ধারণ করবেন। গত চার-পাঁচ বছরে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাইডেন এটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবেন। এ ক্ষেত্রে তিনি আলোচনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক মিত্রদের সঙ্গেও। যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বহুপক্ষীয় কাঠামোতে তার নেতৃত্বের স্থান তৈরি করেছে। সেই স্থানটি পুনরুদ্ধারের জন্য বাইডেন সবাইকে নিয়েই চেষ্টা করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়, যেমন—চীন, রাশিয়ার মতো বড় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক কিভাবে সাবলীল করা যায় সে চেষ্টাও তিনি করবেন।

সবশেষ বিষয় হলো, বাইডেনের ভবিষ্যত্মুখী নীতি। তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন পুরো প্রজন্মের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেই প্রেক্ষাপটে তিনি ২০১৫ সালের জলবায়ুচুক্তিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ফেরত আনবেন।

তাঁর সামনের চ্যালেঞ্জগুলো অনেক বড়। আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বহুপক্ষ পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রের যে নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা বিষয়ে, বিশেষ করে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতার যে জায়গা, সেগুলো আগামী দিনে আরো সমৃদ্ধ হোক। যুক্তরাষ্ট্র আবারও আগের মতো নেতৃত্বে ফিরে আসুক। যুক্তরাষ্ট্র সবার বসবাসযোগ্য একটি পৃথিবী তৈরিতে সাহায্য করুক, যেখানে সবাই অংশ নিতে পারে, বৈষম্য দূর করে যেখানে সবার জন্য একটি গ্রহণযোগ্য অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করা যায় এবং আগামী দিনে একটি জলবায়ুসহিষ্ণু পরিবেশে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী সৃষ্টি হবে।

সে জায়গায় বাংলাদেশ, আমরা মনে করি—আমরাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে পারি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই কাজ করতে আমরা উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি।

নারীর পিঠে হাতির ম্যাসাজ, ভিডিও ভাইরাল!

ক্লান্ত শরীর চনমনে হয়ে ওঠে একটু ম্যাসাজ পেলেই। আরাম পেতে সবার কাছেই ভালো লাগে। তবে সেই ম্যাসাজ যদি হয় হাতির শুঁড় ও পায়ের তাহলে কেমন হবে? শুনতে অবার লাগলেও কিন্তু এটাই সত্যি। এক নারীর পিঠে হাতির ম্যাসাজের ভিডিও এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল।

সেই ভিডিওটিতে দেখা গেছে, ওই নারী একটি নীচু খাটে উপুর হয়ে শুয়ে রয়েছেন। আর তার পিঠের উপর শুঁড় আর পা দিয়ে সুন্দর করে ম্যাসাজ করে দিচ্ছে একটা হাতি। হাতির ম্যাসাজ বেশ উপভোগও করছেন ওই নারী। তবে ভিডিওটি নতুন নয়, দুই বছরের পুরনো। সম্প্রতি নতুন করে তা ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি আমির নামে এক ট্যুইটার ইউজার নতুন করে ভিডিওটি শেয়ার করেন। এরপর থেকেই নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে ভিডিওটি।

হাতির শুঁড় দিয়ে ম্যাসাজ করার এই চল থাইল্যান্ডে বেশ পুরানো প্রথা। থাইল্যান্ডে পর্যটকদের ম্যাসাজ করার জন্য প্রশিক্ষিত হাতি ব্যবহার করা হয়। সেখানে এটি একটি মজাদার বিষয়। তবে হাতি পা পিঠে উঠলে অনেকেরই হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। কিন্তু খুব ছোট থেকেই এই হাতিগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। বহু পর্যটক হাতির ম্যাসাজ নিতে পছন্দ করেন। এটি একদমই ক্ষতিকারক নয়।

রাশিয়া অনেক ভ্যাকসিন দিতে চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারত থেকে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) করোনাভাইরাসের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসছে। তবে বুধবার (২০ জানুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং- বিষয়ক এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ভারত থেকে আগামীকাল ৩৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসছে।

পরবর্তীতে বিকেলে মন্ত্রীর বক্তব্যের সংশোধনী দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মন্ত্রী ৩৫ লাখ ডোজের কথা বলেছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাচ্ছে বাংলাদেশ। বেক্সিমকো প্রথম দফায় আনবে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন।

মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ভারত উপহার হিসেবে করোনার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে দেবে। এছাড়া চুক্তির আওতায় প্রথম চালান হিসেবে ১৫ লাখ ভ্যাকসিন দেশে আসবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আগামীকাল সব মিলিয়ে ৩৫ লাখ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। দেশে ভ্যাকসিন আসার পরই তা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু হবে।

ভ্যাকসিনের কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে জানিয়ে তিনি আরও জানান, ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে আমরা এখন যথেষ্ট নিশ্চিত।

রাশিয়া, চীনসহ আরও কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান আব্দুল মোমেন। তিনি জানান, রাশিয়া অনেক ভ্যাকসিন দিতে চায়। এই দলে চীনও আছে।

চীন কোনো উপহার দিচ্ছে কি না, সে সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।

জগন্নাথপুর পৌরসভায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আ.লীগের পরাজয়

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে উপনির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়ে এভাবে হারতে হবে তা ভাবতে পারেননি দলীয় প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনেক নেতা রয়েছেন, যাঁরা বুকে নৌকা প্রতীক লাগিয়ে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আক্তার হোসেনকে ভোট দিয়েছেন। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। আমার পরাজয় বড় কিছু নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে নৌকার বিপর্যয় বিষয়টি ভাবতে হবে। আর ইভিএম জটিলতায় অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি।’

পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক পৌর মেয়র এবং সদ্য বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আক্তার হোসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তিনি চামচ প্রতীকে ৮ হাজার ৩৭৮ ভোট পান। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান পৌর মেয়র মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া ৮ হাজার ১৮ ভোট পান।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রয়াত কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের নির্বাচনী এলাকা জগন্নাথপুর পৌরসভা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৯ সালে জগন্নাথপুর সদর ইউনিয়নকে পৌরসভায় রূপান্তর করা হয়। ২০০০ সালে প্রথম পৌর নির্বাচনে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুনুর রশীদ হিরন মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাঁর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আবদুল মনাফ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিএনপি নেতা আক্তার হোসেন মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালে আবার আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মনাফ মেয়র নির্বাচিত হন। গত বছরের ১১ জানুয়ারি তিনি মারা গেলে ১০ অক্টোবর উপনির্বাচনে মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া মেয়র নির্বাচিত হন। পরে ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনে মিজানুর রশীদ ভূঁইয়াকে ৩৬০ ভোটে পরাজিত করে আক্তার হোসেন মেয়র নির্বাচিত হন।

জগন্নাথপুর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের কারণে পৌর নির্বাচনে নৌকা পরাজিত হয়েছে। যাঁরা গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট দেননি, তাঁরাই পৌর নির্বাচনে নৌকাকে ডুবিয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক মাসুম আহমদ বলেন, পৌর নির্বাচনে একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে অতিথি করে না আনায় তাঁর অনুসারীরা বুকে নৌকা প্রতীকের লোগো লাগিয়ে চামচ প্রতীকে ভোট দিয়ে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক মিন্টু রঞ্জন ধর বলেন, জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণার জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আজিজুস সামাদ আসতে চেয়েছিলেন ৬ জানুয়ারি। এরপর তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ফোন দিয়েছিলেন। তবে তাঁরা কর্মসূচি দেননি। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আর আসতেও পারেননি।

তবে সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, সবাইকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। কাউকে বাধা দেননি।

এ বিষয়ে আজিজুস সামাদ বলেন, জগন্নাথপুর পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আমজদ আলীর কারণে। তিনি ৮০০ ভোট পাওয়ায় নৌকা ৩৬০ ভোটে পরাজিত হয়েছে।

পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আহাদ বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে নৌকা পরাজিত হয়েছে। দলে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল না।

সাকিবের হয়ে কথা বলেছে মিরপুরের উইকেট

সূর্যের দেখা নেই সারা দিন। ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলা শুরু হবে বেলা সাড়ে ১১টায়। পূর্বাভাসে আবার বৃষ্টিও ছিল। দিনটা বোলারদের হবে, এসব তারই ইঙ্গিত।

তামিম ইকবালেরও ভাগ্য ভালো। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এমন দিনেই টসে জিতে ব্যাটিং পাঠান তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান শুরুতে সিম মুভমেন্ট পান। প্রথম স্পেলে শিকার করেন ২ উইকেট।

কথায় আছে না, যেখানে সিম ‘মুভ’ হয়, সেখানে স্পিনও হয়। সাকিব বোলিংয়ে এসে ঠিক তাই করেন। গতি কমিয়ে বল বাতাসে ভাসিয়েছেন। বাকিটা কাজটা করেছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট।

৭.২ ওভারে মাত্র ৮ রানে সাকিব নেন ৪ উইকেট—ওয়ানডেতে যা বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসে সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড। ম্যাচ শেষে নিজের বোলিং নিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘আমার নজর ছিল ঠিক জায়গায় বল করা। এরপর পিচ ও বলকে কাজ করতে দেওয়া, আর সেটাই হয়েছে।’

মোস্তাফিজ ও সাকিবের সঙ্গে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের বোলিংয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ফেরার ম্যাচে ক্যারিবীয়রা অলআউট ১২২ রানে।

সেই রান বাংলাদেশ তাড়া করেছে ৪ উইকেট হারিয়ে। বোলিংয়ের মতো ব্যাটিং অবশ্য ভালো হয়নি সাকিবের। অল্প রানের ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারতেন তিনি।

যে বাঁহাতি বোলিং দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের ঘুম হারাম করেন, সাকিব ব্যাটিংয়ে আবার সেই বাঁহাতি স্পিনেই আউট। ক্যারিবীয় দলের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার আকিল হোসেনের বলে কাট করতে গিয়ে বল টেনে আনেন স্টাম্পে।

ব্যাটিংটা ভালোই করেছেন বলে মনে করেন সাকিব

ব্যাটিংটা ভালোই করেছেন বলে মনে করেন সাকিব
ছবি: শামসুল হক

পরের ম্যাচে একই ভুল করতে চান না সাকিব, ‘আমার মনে হয় এটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, আমি ভালো ব্যাট করেছি। হ্যাঁ, আমি আউট হয়েছি, খেলা শেষ করে আসা যেত। আমি সেটা পরের ম্যাচে চেষ্টা করব।’

ম্যাচ শেষ করতে না পারার আক্ষেপটা খুব একটা গায়ে মাখছেন না সাকিব। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছে। সাকিব নিজেই ফিরেছেন আইসিসির নিষেধাজ্ঞা থেকে। এমন দিনে সাকিবই হলেন ম্যাচসেরা।

পেশাদারি সাকিবের চোখ এখন সামনের ম্যাচে। প্রথম ওয়ানডের জয় ভুলে এখন তিনি তাকাতে চান সামনে, ‘সবাই ১০ মাস পর খেলছে। সবাই কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিল ম্যাচ শুরুর আগে। কিন্তু আমার মনে হয় এটা শেষ এখানেই। পরের ম্যাচে আরও ভালো খেলা হবে।’

অধিনায়ক তামিম ইকবালের জন্যও ম্যাচটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর এটিই ছিল অধিনায়ক তামিমের প্রথম ম্যাচ।

উইকেটের সহায়তায় দুর্দান্ত বল করেছেন সাকিব

উইকেটের সহায়তায় দুর্দান্ত বল করেছেন সাকিব
ছবি: শামসুল হক

প্রতিপক্ষ দুর্বল হলেও ম্যাচটির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থেকে বাংলাদেশের অর্জনের ছিল ৩০ পয়েন্ট। প্রথম ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট পকেটে পুরেছে তামিমের বাংলাদেশ।

ম্যাচ শেষে দলের সে জন্য বোলারদের মূল কৃতিত্বটা দিলেন তামিম, ‘কোনো অভিযোগ নেই। আমরা খুবই ভালো বোলিং করেছি। শুধু স্পিনাররা না, পেসাররাও। তরুণ হাসানের অভিষেক ছিল দুর্দান্ত। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন ছিল। সারা দিন সূর্য ওঠেনি। এখানে শট খেলা কঠিন। সেদিক থেকে আমরা মাথা খাটিয়েই ব্যাটিং করেছি।’