মিয়ানমারে ১০০ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার

মিয়ানমারের পুলিশ ১০০ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ এবং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো একথা জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

স্থানীয় টুমরো নিউজ জার্নাল নামের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, খালি পায়ের কিছু পুরুষ এবং মাথায় রঙিন স্কার্ফ পরা কিছু লোক আদালত প্রাঙ্গনে মাটিতে বসে আছে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকদের বারবার গ্রেপ্তার করা হয়। এদের দেশটির নাগরিকত্ব দেয়া হয় না। এমনকী তাদের রোহিঙ্গা বলেও স্বীকার করে না দেশটির কর্তৃপক্ষ। নিজেদের রাজ্য রাখাইন থেকে পালিয়ে যেতে পারে, এ সন্দেহে সারাক্ষণ নজর রাখা হয় তাদের ওপর।

টিন মং লুইন নামর একজন পুলিশ বলেছেন, শহরের শোয়ে পিই থার এলাকা থেকে এদের আটক করা হয়। এর বেশি কিছু অবশ্য জানাননি ওই পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, এখনো তদন্ত চলছে। ৯৮/৯৯ জনকে আটক করে আনা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থাকতে পারে, এ সতর্কতায় তাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

ট্রাম্পকে সরানোর প্রাথমিক লক্ষণ?

কট্টর ট্রাম্প সমর্থকেরা যখন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালাল, তখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্লিপ্ত। যেকোনো ধরনের সহিংসতায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের কথা বলা ট্রাম্প এ ক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ তো নিলেনই না, বরং এমন কিছু যাতে না হয়, তা ঠেকানোরও চেষ্টা করেন। গত দুই শতকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতিতে পড়া মার্কিন রাষ্ট্রযন্ত্রকে বাঁচাতে তখন মুখ্য ভূমিকাটি রাখলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যাশনাল গার্ড ডাকার যাবতীয় কাজটিও তিনিই করলেন। আর এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সংকটকালে প্রকৃত নেতা হয়ে সামনে এলেন পেন্স।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সময় যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেশ কয়েকবার ন্যাশনাল গার্ড নামানোর কথা বলেছিলেন। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্কও হয়েছিল। কিন্তু ৬ জানুয়ারি যখন কট্টর ট্রাম্প-সমর্থকদের কারণে সত্যিকার অর্থেই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের প্রয়োজন পড়ল, তখন ট্রাম্প নিষ্ক্রিয় বসে থাকলেন। এমনকি হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ক্যাপিটল হিল রক্ষায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের প্রশ্ন এলে, তা আটকানোর চেষ্টাও করেছিলেন ট্রাম্প। এ সময় পেন্স সামনে এগিয়ে এলেন। পেন্টাগনের সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ তিনিই করলেন। পেন্টাগনকে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও জানালেন।

ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসের ক্যাপিটল ভবনে এর আগে ১৮১৪ সালে হামলা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে যুদ্ধের সময়। ক্যাপিটল ভবনে হামলার সেই ঘটনার ২০৬ বছর পর এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটল খোদ মার্কিনদের হাতেই। এই সংকটকালে প্রেসিডেন্টের নিষ্ক্রিয়তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স নিজের ভূমিকার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তিনিই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের অনুমোদনও তিনিই দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার মিলার।

ক্রান্তিকালে প্রেসিডেন্টের বদলে ভাইস প্রেসিডেন্টের এই ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচনায় উঠে আসার কারণ, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের যে বিলম্বিত আলোচনায় মন্ত্রিসভা বসেছে, তা বাস্তবায়নের পথে এটি অনেক বড় একটি ইঙ্গিত

ক্রিস্টোফার মিলার বিষয়টি এক বিবৃতির মাধ্যমে জানান। এই বিবৃতি ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি বিষয়টি নিয়ে এমনকি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি। বরং প্রথম যোগাযোগটিই তিনি করেছিলেন পেন্সের সঙ্গে। কারণ, তাঁর নাম নিয়ে ক্যাপিটল হিলে সমর্থকদের চালানো হামলার নিন্দা তখন পর্যন্ত জানাননি প্রেসিডেন্ট। এ অবস্থায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় ভরসা পাননি বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র।

পেন্সের এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি আরেকটি সূত্র থেকেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যালঘু দল রিপাবলিকান দলের নেতা কেভিন ম্যাককার্থি ৬ জানুয়ারি রাতেই জানান, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্তটি এসেছে পেন্সের কাছ থেকে। তিনিই এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন দিয়েছেন।

ক্রান্তিকালে প্রেসিডেন্টের বদলে ভাইস প্রেসিডেন্টের এই ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচনায় উঠে আসার কারণ, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের যে বিলম্বিত আলোচনায় মন্ত্রিসভা বসেছে, তা বাস্তবায়নের পথে এটি অনেক বড় একটি ইঙ্গিত। এটা নিশ্চিত যে, ট্রাম্প নিজে থেকে ক্ষমতা পেন্সের হাতে ছাড়বেন না। কিন্তু ক্ষমতার শেষ কিছুদিন ৬ জানুয়ারির নিষ্ক্রিয়তার মতো করে তাঁকে সম্ভবত নিষ্ক্রিয় করে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চীনে গণহারে টিকা ব্যবহারের অনুমতি

প্রথমবারের মতো জনসাধারণের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে চীন।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত ওষুধ প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের তৈরি এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণহারে টিকা ব্যবহারের অনুমদোনের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

শীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার পেক্ষাপটে এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

টিকা উৎপাদনে যুক্ত বেইজিং বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস ইনস্টিটিউট (সিনোফার্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপের শাখা) বুধবার বলেছে, এই টিকা করোনা প্রতিরোধে ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার্যকর।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা এখন বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে ব্যাপকহারে করোনার কয়েকটি টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে গণহারে টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিতে বেশ সময় নিল চীন।

এর আগে সর্বপ্রথম সৌদি আরব সরকার তাদের দেশে সিনোফার্মের তৈরি এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। আর টিকাটির ১২ লাখ ডোজ কিনে রেখেছে পাকিস্তান।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত ৫ কোটি মানুষকে করোনার টিকা দেবে কর্তৃপক্ষ। প্রথমে ফ্রিতে এই টিকা প্রয়োগের চিন্তা ছিল। তবে পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী তার দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ভারতের প্রথম প্রতিরক্ষাপ্রধান বিপিন রাওয়াত

ভারতের বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে দেশটির প্রথম প্রতিরক্ষা প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সেনাপ্রধান পদ থেকে অবসরে যাচ্ছেন তিনি। এর আগের দিন সোমবার তাকে ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ হিসেবে নিযুক্ত করলো নয়া দিল্লি।

গত আগস্ট মাসে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য নতুন এ পদ সৃষ্টির ঘোষণা দিয়েছিলেন।

গত সপ্তাহে সিডিএসের দায়িত্ব ও কর্তব্য জানিয়ে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, চার তারকা জেনারেল পদমর্যাদার কাউকে প্রতিরক্ষা প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন তিনি। তিন বাহিনীর প্রধানরাও এখন থেকে এ প্রতিরক্ষা প্রধানের কাছে জবাবদিহি করবেন।

ভারতে বাহিনী প্রধানদের চাকরির বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৬২। তবে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফের ক্ষেত্রে তা ৬৫ বছর কিংবা নিয়োগের দিন থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর করা হয়েছে। বাহিনী প্রধানরা তার আওতাধীন থাকলেও প্রতিরক্ষা প্রধান  তাদের সমান বেতন পাবেন।

বিপিন রাওয়াত সিমলার সেন্ট অ্যাডওয়ার্ড স্কুলে পড়াশোনার পর খড়কভাসলার ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি ও দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন তিনি। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন বিপিন। সূত্র: এনডিটিভি

কিভাবে করোনার মিউটেশন, কিভাবে ধরা পড়লো

করোনা মহামারির শুরু থেকেই বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির জেনেটিক গঠনে পরিবর্তন আসে কিনা- তার ওপর চোখ রাখছিলেন। সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা ধরন পরিবর্তন হয়। ভাইরাস পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। প্রতি মাসে সাধারণত এক বা দুটি পরিবর্তন হয়ে থাকে।

মানবদেহে রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবের বিবর্তন বিশেষজ্ঞ ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ড. লুসি ভ্যান ডর্প বলেন, ‘বেশির ভাগ সময়ই ভাইরাসের পরিবর্তনগুলো গুরুত্বহীন, খুব বিরল দু-একটি ক্ষেত্র ছাড়া এটা ক্ষতিকর কিছু নয়। সার্স-কোভের মতো জেনোমে আমরা যে মিউটেশনগুলো দেখেছি তার বেশির ভাগই ভাইরাসটির আচরণে কোন পরিবর্তন আনে না।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এটা অন্তত ১৭ বার পরিবর্তিত হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন। তার অনেক পরিবর্তনই ভাইরাসের আচরণে কোন প্রভাব ফেলে না। যুক্তরাজ্য থেকে ছড়ানো করোনার যে নতুন ধরন হৈচৈ তুলেছে তার নাম বি.১.১.৭ অথবা ভিইউআই-২০২০১২/০১। এটির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অন্য প্রজাতিগুলোর চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি।

ব্রিটেনে এটি এখন ছড়াচ্ছে অস্বাভাবিক দ্রুততায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের গায়ে থাকা কাঁটার মত স্পাইকগুলোয় মিউটেশনের ফলে প্রোটিনে এমন কিছু পরিবর্তন হচ্ছে যাতে এটা আরো সহজে মানুষের দেহকোষে ঢুকে পড়তে পারছে। এটিই বিশেষ দুশ্চিন্তার কারণ। এই নতুন ধরনে ১৪টি মিউটেশন চিহ্নিত করা গেছে।

ভাইরাসের প্রোটিনে আছে এ্যামিনো এসিড। যা মিউটেশনে দ্রুত পরিবর্তন নিয়ে আসছে বলে দাবি। এসব মিউটেশনের কথা বিজ্ঞানীদের আগেও জানা ছিল, কিন্তু এতো বিস্তারিত নয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পি সিক্সএইট ওয়ান এইচ নামে আরেকটি মিউটেশন জীববৈজ্ঞানিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। কিছু জেনেটিক সংকেত এ মিউটেশনের সময় বাদ পড়েছে- যা এর আগে নেদারল্যান্ডে মিংক নামে এক ধরণের লোমশ প্রাণীর মধ্যে দেখা গিয়েছিল।

যেভাবে চিহ্নিত হলো নতুন ধরনের ভাইরাস

করোনার নতুন এই প্রকারটি চিহ্নিত হয়েছে যুক্তরাজ্যে। এমনও হতে পারে যুক্তরাজ্যের বাইরে আগে থেকেই এটা ছড়াচ্ছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যুক্তরাজ্যে ভাইরাসটি চিহ্নিত হওয়ার কারণ তাদের বৈজ্ঞানিক অবকাঠামো অত্যন্ত শক্তিশালী। এর নাম কগ-ইউকে বা ‘কোভিড-১৯ জেনোমিক্স কনসোর্টিয়াম’- এতে দেড় লক্ষেরও বেশি সার্স-কোভ-টু ভাইরাসের নমুনার জেনেটিক ইতিহাস সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

এ বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে যখন যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হচ্ছিল- তখন বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যে এটি ব্রিটেনে আসছে মূলত ইউরোপ থেকে। এর আদি উৎপত্তিস্থল চীন নয়। করোনা বিস্তার কীভাবে ঘটছে তা বুঝতে এই নজরগিরি খুবই জরুরি। সে কারণে যে দেশগুলো করোনাভাইরাসের জেনোমিক সিকোয়েন্সিং করছে সেসব দেশেই নতুন কোন মিউটেশন হলে ধরা পড়ে যাচ্ছে। যেমন-দক্ষিণ আফ্রিকা, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস।

কেবল যুক্তরাজ্য নয় এরই মধ্যে করোনার নতুন রূপ পৌছে গেছে ইতালি, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসে। পাওয়া গেছে অস্ট্রেলিয়াতেও। আরো কিছু দেশে পৌছে যাওয়ার জোর সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়েছে। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকাতে পাওয়া গেছে একটি নতুন রূপ। যার যুক্তরাজ্যের সঙ্গে হুবহু মিল নেই। তবে প্রায় কাছাকাছি।

এখন প্রশ্ন হলো নতুন ধরনের এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত টিকা কি কার্যকারিতা পাবে। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞই বলছেন, নতুন মিউটেশনের ফলে টিকার কার্যকারিতা কমে যাবে এমন কোন সম্ভাবনা অন্তত স্বল্পমেয়াদে এখনো নেই। তবে ড. ভ্যান ডর্প বলছেন, আগামী দিনগুলোতে বিজ্ঞানীদের কাছে প্রশ্নটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

এশিয়ার সামরিক-অর্থনীতির জন্য চীন বড় হুমকি: যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব উইলবার রস বলেছেন, এশিয়ার সামরিক ও অর্থনীতির জন্য চীন একটি বড় হুমকি। মঙ্গলবার মিল্কেন ইনস্টিটিউট এশিয়া সামিটে তিনি একথা বলেন।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি না মেনে চলার জন্য চীনকে তিরস্কার করে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব বলেন, এশিয়া অঞ্চলের সামরিক ও অর্থনীতির জন্য চীন প্রধান হুমকি। এই অঞ্চলের সম্ভাব্য বাজারের জন্যও দেশটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর এএনআইয়ের

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাণিজ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক, করোনাভাইরাস এবং উইঘুরসহ অনেক ইস্যুতে চীন ও আমেরিকা দ্বিধাবিভক্ত। দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেড়েছে।

গত দুই বছর ধরে দেশ দুটি তাদের বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক আরোপ করছে, যা বাণিজ্য যুদ্ধের দিকেই ইঙ্গিত করছে। বাণিজ্য নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

বিবদমান দেশ দুটি চলতি বছরের শুরুতে ‘ফেজ ওয়ান’ বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে শুল্ক লড়াই স্থগিত হয়।

এ নিয়ে মঙ্গলবার রস বলেছেন, আমরা কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় ইস্যু নিয়ে কাজ করছি।

চুক্তি অনুযায়ী, চীন দুই বছরে কমপক্ষে ২শ’ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্য ও অন্যান্য পরিষেবা কেনার প্রতিশ্রুতি দেয়।

চীন এরপর থেকে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি কৃষি পণ্য কিনেছে। তবে এই চুক্তির আওতায় চীন অন্যান্য আইটেম কম কিনেছে-যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এখন যেহেতু চীন করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আমরা আশা করি, তারা এখন লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।

মুম্বাই হামলার ১২ বছর পরও পাকিস্তানের ধরাছোঁয়ার বাহিরে ১৯ জঙ্গি

মুম্বাইয়ে হওয়া জঙ্গি হামলার ১২ বছর পরও ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছে এই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লস্কর-ই-তৈয়বরে (এলইটি) ১৯ জঙ্গি। পাকিস্তানে বসবাস করা এবং হামলার পর পাকিস্তানে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া এই জঙ্গিদের দাগী আসামি বা ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে ঘোষণা করলেও দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আটক করতে খুব একটা তৎপর নয়। উল্টো আটক জঙ্গিদের বিভিন্ন মেয়াদে ‘লঘু’ শাস্তি দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের এই ‘হাস্যকর’ সাজা দেয়ার মূল কারণ জঙ্গি অর্থায়নে সম্পৃক্তদের খুঁজে বের করার কাজে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)। সম্প্রতি সংস্থাটি পাকিস্তানের উপর ‘গ্রে’ টাইপের অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বলবত থাকবে। জঙ্গি অর্থায়নে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কারণে এই অবরোধ আরোপ করা হয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এই শাস্তির পরিমাণ যেন আরো না বাড়ে সে কারণে ১৯ জঙ্গিকে দাগি আসামি হিসেবে ঘোষণা ও আটক জঙ্গিদের শাস্তির কার্যক্রম শুরু করেছে পাকিস্তান।

অবশ্য পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) দেশটির সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছে, ১২০০ জনের বেশি জঙ্গির তালিকা করা হয়েছে এবং তাদের আটকের জন্য চেষ্টা করা চলছে। এই এফআইএ ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর থেকে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের খুঁজতে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো তারা ১৯ ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিকে খুঁজে পায়নি।

পাকিস্তানের করাচী থেকে সমুদ্র পথে নৌকা নিয়ে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয় মুম্বাইয়ে। আমেরিকা, কানাডা, জর্ডান, মালয়েশিয়া, মরিশাস ও ইসরাইলের নাগরিকদের হত্যা করা হয় সেই সন্ত্রাসী হামলায়। জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বের সেই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নারীসহ ১৬৬ জন। বিকলাঙ্গ হয়েছেন ৪৬ নারী ও ১৩ শিশুসহ ১৭৯ জন। মোট আহত হন ৩০০ জনেরও বেশি। এই হামলায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ের সময় মারা যায় ৯ জঙ্গি। হামলার স্থান থেকে আটক হওয়া আরেক জঙ্গি আজমল কাসাবকে পরবর্তীতে ভারতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় এবং তা কার্যকরও করা হয়।

কিন্তু বিগত ১২ বছরে পাকিস্তান তার দেশে আটক জঙ্গিদেরও শাস্তি দিতে পারেনি। সম্প্রতি সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিরা এখনো পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টে জামিন আবেদন করেনি। একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এই জঙ্গিরা পাকিস্তানের এফএটিএফ ক্লিয়ারেন্স পাবার অপেক্ষায় আছে। এরপরই তারা জামিন আবেদন করে সুপ্রিমকোর্ট থেকে মুক্তি পাবে।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ইরানের চিঠি

ইসরাইলের অপরাধী তৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান।

ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রেসিডেন্ট রুহানি তার বার্তায় বলেন, সাত দশকেরও বেশি ষময় ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর সীমাহীন অত্যাচার, নির্যাতন ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মানবতার শত্রু ইসরাইল।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জবরদখল করে ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত করা, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা, গাজা উপত্যকার ওপর করোনা পরিস্থিতির কঠিন দিনগুলোতে অবরোধ আরোপ করে রাখা, এবং গাজাবাসীর কাছে ন্যুনতম চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দিতে বাধা দেওয়া- মানবতাবিরোধী অপরাধ ছাড়া আর কিছু নয়।

ইরানের প্রেসিডেন্ট তার বার্তায় বলেন, এসব ঘটনা শুধু ইসরাইল-ফিলিস্তিন পরিস্থিতিকেই শোচনীয় করছে না সেইসঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিরাপত্তা সংকট তৈরি করছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কিছু স্থায়ী সদস্য দেশের পরিপূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে ইসরাইলের ধৃষ্টতা দিন দিন বেড়ে চলেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি তেহরানে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদে হত্যা করা হয়।এই ঘটনায় ইসরাইলকে দায়ী করছে ইরান। তবে এই হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করেছে ইসরাইল।

গিলগিটের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ

গিলগিটের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুললেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্য তিলক দেবাশীর। গত ৩০ নভেম্বর ভারতের সংবাদ মাধ্যম “দ্যা ট্রিবিউন”-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি এ অভিযোগ তোলেন।

গিলগিট-বালতিস্তান (জিবি)-র বিধানসভায় ১৫ ই নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল এই অঞ্চল এবং পাকিস্তানের ভবিষ্যতের জন্য সুদূরপ্রসারী ফলাফল বয়ে আনতে পারে। তবে কারচুপির অভিযোগে এ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পিপিপি এবং পিএমএল-এন।

বিলাওয়াল ভুট্টো অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে সপ্তাহখানেক আগে গিলগিটে পৌঁছে এ ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলেন। তাঁর প্রচারণাটি অন্যদের থেকে কিছুটা ভিন্ন রকমের ছিল, যা অন্যান্য প্রার্থীদের অনুকরণীয় ছিল।তার এই ভিন্ন মাত্রার প্রচারণার জন্য ভবিষ্যত রাজনৈতিক জীবনে তার ভাল স্থানে দাঁড়ানো উচিত।

ইমরান খানের জনপ্রিয়তার অভাবের কারণে গিলগিট-বালতিস্তানে পিটিআই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। মরিয়ম নওয়াজ বিলাওয়ালকে অনুসরণ করেছিলেন যার মধ্যে ছিল গিলগিট-বালতিস্তানের বেশ কয়েকটি সমাবেশ ও প্রচারণার জন্য সেখানে তার সাত দিনের অবস্থান।

তার বক্তৃতায় তিনি ইমরান খান এবং তাঁর ‘নির্বাচিত ও প্রত্যাক্ষিত’ সরকারকে নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।

১লা নভেম্বর গিলগিটে এক সংক্ষিপ্ত সফরে এসেছিলেন ইমরান খান। সেখানে তিনি ঘোষণা করেন যে গিলগিট-বালতিস্তানকে ‘অস্থায়ী’ প্রাদেশিক মর্যাদা দেওয়া হবে,এটি ছিল তার জয়ের জন্য এক প্রকার চালাকি এবং মিথ্যা আশ্বাস।

তবে, পিটিআইয়ের প্রচারণা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল কাশ্মীর বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী আলী আমিন গন্ডাপুরের অশ্লীল ও যৌনতাবাদী মন্তব্যের মাধ্যমে। তিনি একটি সমাবেশে মরিয়মকে উল্লেখ করে বলেন যে, মরিয়ম কে সুন্দর দেখানোর কারণ তিনি লক্ষ লক্ষ করদাতার অর্থ তার ফেস সার্জারিতে ব্যয় করেছেন এবং জনগণের টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করেছেন। অনুরূপ ভাবে তিনি ব্যঙ্গাত্মক করে বিলওয়াল ভুট্টোকে ‘মানুষ হওয়ার’ জন্য অনুরোধ করেন।

এদিকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন)এর ১০ জন নেতাকে পিছিয়ে ফেলে তাদের নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই,(পিটিআই) একক বৃহত্তম দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে, ২৪ জনের মধ্যে নয়টি আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তারা।

স্বতন্ত্ররা ছয়টি আসন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) তিনটি আসন, পিএমএল-এন এবং অন্যান্যরা একটি করে আসন জিতেছে। পরে পিটিআই এর এক বিজয়ী প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। পাঁচজন স্বতন্ত্র দলে যোগদানের পর পিটিআই সরকার গঠন করবে। তবে, পিটিআই নিজে থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি যা থেকে প্রমাণ হয় যে গিলগিট-বালতিস্তানে ইমরান খান অখ্যাত। আসলে, পিএমএল-এন টার্নকোটের অনুপস্থিতিতে পিটিআই তৃতীয় অবস্থানে চলে আসতে পারত।

কারচুপির অভিযোগের গিলগিট-বালতিস্তান নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছিল। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন নেটওয়ার্ক (এফএফএন) এর তথ্যমতে ভোটকেন্দ্র গড়ে গড়ে তিনটি অবৈধতা বা অনিয়মের কথা জানানো হয়েছিল। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, অনিয়মের মধ্যে রয়েছে ভোটের গোপনীয়তা লঙ্ঘন, ভোটারদের পক্ষ থেকে অন্যদের দ্বারা ব্যালট লাগানো এবং নিবন্ধিত ভোটারদের ভোটদানে বাঁধা প্রদান।

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন এবং গিলগিট সাংবাদিক ইউনিয়ন নিশ্চিত করেছে এমন অনেকগুলি অনিয়মের কথা উঠে এসেছে। ভোট কেন্দ্রে অতিরিক্ত এবং জাল ব্যালট পেপার দেয়া হয়েছিল এবং বেশ কয়েকটি ভোটার কেন্দ্রে মহিলাদের ভোটদান থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে ভোট পর্যবেক্ষকদের গণনা শুরুর আগেই ভোটকেন্দ্র ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।

পিপিপি এবং পিএমএল-এন উভয়ই এ ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিল, এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করা নিয়ে বিলাওয়ালের একটি নতুন স্লোগান গিলগিট-বালতিস্তানে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তা হচ্ছে, ‘ভোট দা ডাকা নামঞ্জুর’। মরিয়ম এক টুইট বার্তায় বলেন যে,পিটিআই’র পূর্ণ রাষ্ট্র ক্ষমতা, সরকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারী কলা কুশলীদের মাধ্যমে কারচুপি করেও সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি যা তাদের জন্য ‘লজ্জাজনক পরাজয়’।

নির্বাচনী জালিয়াতির কারণে গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে একের পর এক প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিশেষত গিলগিট ও চিলাসে সুরক্ষা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইতে বাধ্য করেছে।

গিলগিট-বালতিস্তানে এবং তথাকথিত আজাদ জম্মু কাশ্মীর নির্বাচনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হ’ল সাধারণ ভাবে ইসলামাবাদে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরাই এই অঞলে জয় পায়। আগের দুটি নির্বাচনে, ২০০৯ সালে পিপিপি এবং ২০১৫ সালে পিএমএল-এন তাদের কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় তারা জয়ী হয়েছিল।

পিটিআই এবং বিরোধী জোট পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলন (পিডিএম) এর মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের পটভূমির বিরুদ্ধে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এদিকে পিটিআই দাবি করেছে যে জরিপের ফলাফল বিরোধীদল গুলোর মানসিকতা ভেঙে দিয়েছে; পিপিপি এবং পিএমএল-এন এ ফলাফল কারচুপির ব্যাপারে অভিযোগ তুলেছে।

এদিকে সেনাবাহিনী এটি নিশ্চিত করেছে যে পিটিআই সরকার গঠনের জন্য ও সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে দীর্ঘমেয়াদে রাখার জন্য জন্য কৌশলগতভাবে পিডিএমকে গোলাবারুদ সরবারহ করেছিল।

চীনে বিদেশীদের ‘ধর্মীয় উগ্রবাদ নিষিদ্ধ’ করার জন্য নতুন বিধিনিষেধ

চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে বিদেশি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং উপাসকদের বিরুদ্ধে আগামীতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত খসড়া বিধিমালাতে ‘ধর্মীয় উগ্রবাদ’-এর বিস্তার রোধে বিদেশি উপাসকদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নতুন বিধিনিষেধের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ।

শি’র অধীনে ধর্মীয় অনুশীলন নিয়ন্ত্রণের সর্বশেষ পদক্ষেপ হলো, নতুন নিয়মগুলি বর্তমানে জনসাধারণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত আছে তবে তাদের বর্তমান নিয়ম গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

চীন আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নাস্তিক রাষ্ট্র, যেখানে গণপ্রজাতন্ত্রী ধর্ম সর্বদা তাদের অবস্থান দখল করে থাকে। কমিউনিস্ট সরকার পাঁচটি সরকারী বিশ্বাসের অনুমোদন দেয় এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই ধর্মগুলি হলো চাইনিজ বৌদ্ধধর্ম, তাওবাদ, ইসলাম, ক্যাথলিক ধর্ম, প্রোটেস্ট্যান্টিজম। এই গোষ্ঠীগুলির ধর্ম পালনে বাইরেও তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ গুলিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।এছাড়াও সরকারীভাবে স্বীকৃত নয় এমন অনেক বিশ্বাস যেমন মরমোনবাদ, ইহুদী ধর্ম, কোয়েকারস-চীনে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে। যা বিদেশীদের ক্ষেত্রে সাধারণত আরও বেশি স্বাধীনতা রয়েছে। বিদেশী ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির প্রতি সংবেদনশীলতা এখনও প্রবল রয়েছে চীনে।

২০১৮ সালে চীন একটি গোপনীয় এবং ব্যাপক বিতর্কিত চুক্তি করেছিল, যা এই অক্টোবরে আরও দু’বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল, তবে আরও স্থায়ী ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা স্থগিত বলে মনে হয়। এই সপ্তাহে প্রকাশিত একটি বইতে পোপ ফ্রান্সিস প্রথমবারের মতো উইগার্সকে ‘নির্যাতিত মানুষ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, উইঘুরদের সম্পর্কে পোপ ফ্রান্সিস যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। “চীনে ৫৬ টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে এবং উইঘুর জাতিগোষ্ঠী চীনা জাতির বৃহত্তর পরিবারের সমান সদস্য।

এ বিষয়ে ঝাও আরও বলেন, চীন সরকার সর্বদা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সাথে সমান আচরণ করেছে এবং তাদের বৈধ অধিকার এবং স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে। এই খসড়ার অন্যান্য অংশগুলি ইসলামী গোষ্ঠীগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করে বলে মনে হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জিনজিয়াং এবং চীন জুড়েই তারা প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে, সাম্প্রতিক আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী ২৩ মিলিয়ন মুসলমান রয়েছে চীনে।

চীনের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম বিশেষজ্ঞ রিয়ান থুম বলেছেন, বিধিনিষেধগুলি ‘বিদেশি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং উপাসকদের ভীতির কারণ হতে পারে। যা বর্তমান সময়ের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, ‘চীনের ধর্মীয় স্বাধীনতা’ কথাটি বারবার ব্যবহার করে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম, যা ‘বিদেশী’ প্রভাবের ধর্মগুলিকে শুদ্ধ করার ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী আকাঙ্ক্ষাকে ইঙ্গিত করে।

অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউট (এএসপিআই) এর সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে জিনজিয়াংয়ের প্রায় তিনটি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে।

চায়না রিসার্চর আকাদ বলেন, দিন দিন চীনে ওহাবী আদর্শের জনপ্রিয়তা এবং সৌদি আরবের সাথে ঘনিষ্ঠ সংযোগ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন, যা গত দশক বা তারও বেশি সময় ধরে আপাতদৃষ্টিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।

জিনজিয়াংয়ের বাইরে সরকার তার বৃহত্তম মুসলিম গোষ্ঠীর দিকে মনোনিবেশ করার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে হুই সংখ্যালঘুদের মধ্যে বেশিরভাগ চীনাভাষী মুসলমানদের উপর চাপ পড়েছে।

থুম বলেন, কিছু খ্রিস্টান মিশনারিরা চীনে অবৈধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী বিদেশী ধর্মীয় অনুশীলনে আশেপাশের অঞ্চলগুলিকে আরও কঠোর নিরাপত্তার আওতায় আনা হতে পারে।

নতুন প্রস্তাবটিতে সুনির্দিষ্ট শাস্তি তালিকাভুক্ত না করা হলেও, একটি পরামর্শ রয়েছে যে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে তারা কঠোর হতে পারে ও ‘পাল্টা গুপ্তচরবৃত্তি আইন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা বিধি আহ্বান করার কথাও বলা হয়েছে।